হুমকির মুখে ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প
অব্যাহত নদী ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার মৃৎশিল্প গ্রাম সোনাকুর। ভাঙন অব্যাহত থাকায় বছরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৪-৫ কোটি টাকার মৃৎশিল্প উৎপাদন। কারিগররা বলছেন, টানা ২৫ বছরের অব্যাহত ভাঙনে ব্যাহত হয়েছে ১২০ কোটি টাকারও বেশি মৃৎশিল্প উৎপাদন। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, শিগগিরই নদীরক্ষা বাঁধ দিয়ে মৃৎশিল্প রক্ষা করা হবে।
হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি হয় বাহারি সব পণ্য। দৈনন্দিন গৃহস্থালি কাজে একসময় কদর ছিল এসব সামগ্রীর। তখন পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সোনাকুর গ্রামের মৃৎশিল্প ছিল দেশজোড়া। চলে যেত দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আশপাশের দেশেও। বানানো হতো হাড়ি, পাতিল, কলসি, ব্যাংক, পিঠা তৈরির সাজ ও পুতুলসহ বিভিন্ন সামগ্রী। কিন্তু কালের পরিক্রমায় তা আজ হারাতে বসেছে এলাকাবাসী।
জেলার কাউখালী উপজেলার সোনাকুর গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পাল সম্প্রদায়ের দুই থেকে তিনশ পরিবার এ কাজে জড়িত ছিল। কিন্তু সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙনের কারণে প্রায় বিলুপ্তির পথে পাল সম্প্রদায়। ফলে তারা হারাতে বসেছে বাঙালির শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্য।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সোনাকুর, সয়না, রঘুনাথপুর, হোগলা, বেতকা, রোঙ্গাকাঠী ও গন্ধর্ব গ্রামসহ প্রায় ২৫টিরও বেশি গ্রাম আজ নদী ভাঙনের মুখে। ফলে মৃৎশিল্প গ্রাম খ্যাত পালবাড়ি এখন অনেকটাই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিঞা জানান, ভাঙনের মুখে এসব গ্রামের মানুষ আজ বড়ই অসহায়। শিগগিরই তাদের পাশে দাঁড়াতে না পারলে গ্রামগুলো হারাবে তাদের দীর্ঘদিনের ইতিহাস-ঐতিহ্য।
জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ আশ্বাস দেন, ‘শিগগিরই নদীরক্ষা বাঁধ দিয়ে মৃৎশিল্প গ্রামগুলো রক্ষা করা হবে।’ তবে স্থানীয়দের প্রত্যাশা, ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প রক্ষায় কর্তৃপক্ষ কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন।
আল আমিন ওমর/এসইউ/এমএস