৩০ বছর ধরে প্রতিদিন নববধূ সাজেন তিনি!

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ পিএম, ০৪ নভেম্বর ২০১৯

শিরোনাম দেখে অবাক হয়েছেন? হওয়ারই কথা। জীবনে এক বা দু’বার নববধূ সাজাই যায়। সেখানে যদি প্রতিদিন নববধূ সাজতে হয়, তাহলে কেমন শিহরণ জাগে না? তা-ও আবার টানা ৩০ বছর ধরে। হ্যাঁ, সে গল্পই জানবেন এখন। তবে গল্পটি মোটেও রোমাঞ্চকর নয়। বরং হৃদয় বিদারক।

বিয়ের মতোই লাল বেনারশি শাড়ি তার পরনে। ঘোমটা টেনে রেখেছেন বড় করে। নাকে বড় নাকছাবি, কানে ঝুমকো, হাতে চুড়ি। হঠাৎ দেখে মনে হবে যেন নতুন বউ। তবে ভালো করে খেয়াল করলেই দেখবেন, তিনি নববধূ তো ননই, এমনকী নারীও নন। তিনি আসলে একজন পুরুষ মানুষ।

মানুষটির নাম চিন্তাহরণ চৌহান। তার বাড়ি ভারতের উত্তর প্রদেশের জৌনপুরে। গত ৩০ বছর ধরে প্রতিদিন তিনি নববধূর বেশে বসে থাকেন। এর কারণ হচ্ছে কুসংস্কার। তবে এই কুসংস্কার একদিনেই প্রতিষ্ঠিত হয়নি তার জীবনে। তার পেছনে রয়েছে হৃদয় বিদারক কাহিনি।

জানা যায়, ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিদিন নারীদের পোশাকে সাজেন চিন্তাহরণ। চিন্তাহরণ জানান, এর সঙ্গে জুড়ে আছে তার পরিবারের ভবিষ্যৎ। ৭-৮ দশকে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে পরিবারের ১৪ জনকে হারান তিনি। তারপর স্বপ্নে আদেশ পেয়ে নববধূর মতো পোশাক পরেন। তার ধারণা, এ পোশাক পরার পর থেকে তার বাড়িতে আর অকালমৃত্যু হয়নি।

চিন্তাহরণ আরও জানান, ১৪ বছর বয়সে তার প্রথম বিয়ে হয়। কিছুদিনের মধ্যেই প্রথম স্ত্রী মারা যায়। ২১ বছর বয়সে তিনি কাজ করতে পশ্চিমবঙ্গে যান। উত্তর দিনাজপুরের একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। কাজ করতে করতে মালিকের ঘনিষ্ঠ হন। কিছুদিন পর মালিকের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়। চিন্তাহরণের বাড়ি তা মানতে চায়নি। শেষে স্ত্রীকে ছেড়ে উত্তর প্রদেশে ফিরে যান।

কিছুদিন পরই তার দ্বিতীয় স্ত্রী আত্মহত্যা করেন। পরিবারের চাপে কয়েক মাস পর আবারও বিয়ে করেন। এবার নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ যাত্রায় তিনি বেঁচে গেলেও একে একে পরিবারের ১৪ জন প্রাণ হারান। যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে তাকে।

একে একে সবাই যখন চলে যাচ্ছে; তখন তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বপ্নাদেশ পান। সে-ই তাকে বলেছে নববধূর বেশে থাকতে। তাহলে নাকি পরিবারের আর কারো ক্ষতি হবে না। এরপর থেকেই চিন্তাহরণ প্রতিদিন নববধূ সেজে বসে থাকেন।

এসইউ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।