পানির উপর দিয়ে হাঁটতে পারবেন যেখানে!
সড়ক মানেই যান চলাচলের মাধ্যম। মানুষের পদচারণা থাকবে। যোগাযোগকে সহজ করে দেবে। কিন্তু এখানে তার ব্যতিক্রম। কারণ বর্ষা এলেই দুই কিলোমিটার সড়ক ডুবে যায়। হাঁটতে হয় পানির উপর দিয়ে। হেঁটে এসে বিস্তারিত জানাচ্ছেন তারিফুল ইসলাম-
নেত্রকোণার মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী উপজেলার জনপদগুলো মৌসুমে মৌসুমে রূপ পাল্টায়। শুকনো মৌসুমে সবুজের সমারোহ। বর্ষায় অথৈ জলরাশি। ছোট ছোট দ্বীপের মতো একেকটি গ্রাম। সামান্য বাতাসেই ঢেউয়ের নাচন। রাতের জোসনায় চিকচিক করে জলরাশি।
> আরও পড়ুন- সাংসদকে নদীভাঙন কবলিত ৭ লাখ মানুষের খোলা চিঠি
জ্যৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত অনেকটাই সমুদ্রের মতো দেখায়। ছোট নৌকা আর ট্রলার নিয়ে দিনভর দাপিয়ে বেড়ায় পর্যটকরা। বিশাল জলরাশির বুকে বিচ্ছিন্ন ছোট ছোট গ্রাম। হাওরজুড়ে গলা ডুবিয়ে থাকা হিজল গাছের সারি, পানির নিচ থেকে জেগে ওঠা করচের বন কিংবা শুশুকের লাফ-ঝাঁপ মুহূর্তেই মন ভালো করে দেয়।
নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অবস্থিত উচিতপুর হাওর। হাওরের বালই নামক ব্রিজের দুই প্রান্তে প্রায় ২ কিলোমিটার ডুবন্ত সড়ক। যা সৌন্দর্যের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে পর্যটকদের কাছে। হাঁটুপর্যন্ত ডুবন্ত এ সড়কে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে হয় সৌন্দর্য।
> আরও পড়ুন- পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হাওরাঞ্চল
একপাশে বালুকণা অন্যপাশে যতদূর চোখ চায় শুধু পানি আর পানি। পানির নিচে পিচঢালা পথ। পানিতে দাঁড়িয়ে রাস্তার পাশের খুটিগুলো ধরে হেঁটে যাওয়ার প্রশান্তি পাবেন উচিতপুর হাওরে। সময়টুকু আরও রোমাঞ্চকর করে তুলবে হাওরের ঢেউগুলো। এছাড়া পানিতে দাঁড়িতে দেখা হাওরের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। উপভোগ করতে পারবেন জলরাশির ওপর সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত।
রাজধানীর মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে নেত্রকোণার মদনে যেতে পারবেন। ভাড়া লাগবে ৩০০ টাকা। অথবা নেত্রকোণা সদরে যেতে পারবেন ২৫০ টাকায়। সদর থেকে ৫০ টাকা ভাড়ায় মদন উপজেলায়। সেখান থেকে ৩০ টাকা ভাড়ায় উচিতপুর ঘাটে। হাওর ঘুরতে ট্রলার ভাড়া নিতে হবে দরদাম করে। মদনে তেমন থাকার ব্যবস্থা না থাকলেও নেত্রকোণা শহরে একাধিক আবাসিক হোটেল আছে।
লেখক: ফিচার ও ভ্রমণ লেখক।
এসইউ/এমকেএইচ