সরকারী খরচে আইনি সহায়তা
সমাজের অধিকাংশ লোকেরই আইনি সহায়তার প্রয়োজন হয়। আইনি সহায়তার প্রয়োজন হলেও অর্থের অভাবে অনেকেই আইনি ঝামেলায় জড়াতে চান না। সাধারণ মানুষের আইনি সহায়তার কথা বিবেচনা করে সরকার চালু করেছে বিনা মূল্যে আইনি সহায়তা সেবা। ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’ এই আইনের আওতায় প্রণীত হয়েছে বিধিমালা। এই বিধিমালাকে সামনে রেখে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা।
কারা আইনি সহায়তা পাবেন :
অসচ্ছল ব্যক্তি, যাঁর বার্ষিক গড় আয় ৫০ হাজার টাকার উর্ধ্বে নয়
মুক্তিযোদ্ধা (কর্মহীন), যার বার্ষিক গড় আয় ৭৫ হাজার টাকার বেশি নয়
ভিজিডি ও বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন এমন ব্যক্তি
পাচারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নারী বা শিশু
দুর্বৃত্ত দ্বারা অ্যাসিডদগ্ধ নারী বা শিশু
স্বামী-পরিত্যক্তা, অসচ্ছল, দুস্থ ও বিধবা নারী
উপার্জনে অক্ষম ও সহায়-সম্বলহীন প্রতিবন্ধী নারী
আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অক্ষম ব্যক্তি
আদালত কর্তৃক ঘোষিত ‘অসচ্ছল’ ব্যক্তি
জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সুপারিশকৃত ‘অসচ্ছল’ ব্যক্তি
কোথায় পাবেন :
দেশের ৬৪টি জেলায় এই প্রতিষ্ঠানটির কমিটি রয়েছে। জেলা পর্যায়ে ছাড়াও ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে এই সংস্থার কমিটি রয়েছে। যারা প্রকৃত পক্ষে দরিদ্র বা সহায়-সম্বলহীন, তারাই কেবল এ সহায়তা পাবেন।
হট-লাইনে যোগাযোগ:
এই আইনের যারা সহায়তা নিতে চান, তারা নিম্নের নম্বরে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। এই নম্বরে যোগাযোগ করলে ৬৪ জেলার যে জেলায় আপনি মামলা করতে আগ্রহী সে জেলার মোবাইল নম্বর সহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য পাবেন।
মোবাইল নম্বর: +৮৮-০১৭৬১২-২২২২২-(৪)
১৪৫, নিউ বেইলি রোড, (৮ম তলা), ঢাকা-১০০০।
ফোন:+৮৮-০২-৮৩৩১৯০৬, ৮৩৩১১৫১
ওয়েব: www.nlaso.gov.bd
আইনি সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্র সমূহ :
এই সংস্থাটি দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় মামলাতেই সহায়তা দিয়ে থাকে। যে সব মামলায় সহায়তা দেওয়া হয় তা নিম্নরুপ:
স্বামী তার স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে বিয়ে করলে।
স্ত্রীকে শারীরিক নিযার্তন করলে।
যৌতুকের দাবি করলে ও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করলে।
কোন নারী অ্যাসিড নিক্ষেপের শিকার হলে।
ধর্ষণ, পাচার ও অপহরণের শিকার হলে।
সন্তানের অভিভাবকত্ব না মানলে।
সন্তানের ভরণপোষণ না দিলে।
দেনমোহর আদায় করতে না পারলে।
দখলকৃত সম্পত্তি পাওয়ার জন্য।
দলিল বাতিল ও স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বাতিলের জন্য।
চুক্তিসংক্রান্ত ও ঘোষণামূলক মামলা।
সম্পত্তি বন্টন বা বাঁটোয়ারা সংক্রান্ত মামলা।
উপরের প্রত্যেকটি মামলার ক্ষেত্রে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করা হয়।
আবেদনের নিয়মাবলী :
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা আদালতে এই সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। কার্যালয় থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সরাসরি আবেদন করা যাবে। জেলখানায় অবস্থিত কারা কর্মকর্তা ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়েও আবেদনপত্র পাওয়া যাবে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলা আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) অথবা জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা ও উপজেলা কার্যালয়েও আবেদন ফরম পাওয়া যায়। এই আবেদন ফরম পূরণ করে জেলা আইনগত সহায়তা কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। এ আবেদন যাচাইয়ের পর আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি আইনি সহায়তা দেওয়া হয়।