ভুল ঠিকানায় ১৩২ বছরের পুরোনো চিঠি

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪৪ এএম, ০৮ মার্চ ২০১৮

জাহাজের ক্যাপ্টেন আশা করেছিলেন, তার বার্তা পৌঁছে যাবে হামবার্গের জার্মান নাভাল অবজার্ভেটরিতে অথবা কাছাকাছি কোনো জার্মান দূতাবাসে। কিন্তু বোতলবন্দি সেই বার্তা কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছায়নি। ভাসতে ভাসতে প্রায় ১৩২ বছর পর ভুল ঠিকানায় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে এসে পড়েছে।

দীর্ঘ সময়ে ভারত মহাসাগরে যেমন জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটেছে, তেমনই বয়ে গেছে অনেক পানি। দুই বিশ্বযুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়েছে ক্যাপ্টেনের জার্মানি। কিন্তু ক্যাপ্টেনের বোতল বন্দি বার্তা আজও অটুট এবং প্রাসঙ্গিক!

গেল জানুয়ারিতে উত্তর পারথের সৈকতে ছেলের প্রেমিকার সঙ্গে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন টোনা ইলম্যান নামের এক মহিলা। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তাঁর চোখে পড়ে বালিতে ঢেকে থাকা কালো সবুজ রঙের একটি বোতলে। প্রায় ৯ ইঞ্চি লম্বা এবং ৩ ইঞ্চি চওড়া ওই বোতলটি দেখে পছন্দ হয়ে যায় ইলম্যানের। তখনই বাড়ির বুকসেল্ফে বোতলটি সাজিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। এরপর বাড়িতে সেই বোতল নিয়ে এসে ছিপি খুলতেই দেখেন ভিতরে রয়েছে একটা ভাঁজ করা হলুদ রঙের চিরকুট।

letter

দেখা যায় সেই চিরকুটে জার্মান ভাষায় হাতে লেখার কায়দায় ছাপানো হরফে কিছু লেখা রয়েছে। তবে, ওই কাগজে পাওয়া তথ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল তারিখ এবং জাহাজের নাম। তারিখ- ১৮৮৬, ১২ জুন। জাহাজের নাম- 'পাওলা'।

বোতলের গুরুত্ব বুঝেই পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া জাদুঘরে বিষয়টি জানান ইলম্যান। ইলম্যানের সৌজন্যে বোতলটির এখন ঠিকানা সেখানেই।

জানা গেছে, একসময় সমুদ্রের ঢেউ নিয়ে গবেষণার জন্য জার্মান নাভাল অবজার্ভেটরির একদল বিশেষজ্ঞ ভারত মহাসাগরে পাড়ি দেন। চিঠিতে লেখা রয়েছে, সমুদ্রের ঢেউ এবং ধরণ এখনও পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না। বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে বোঝা যায় সুদূরপ্রসারী গবেষণা প্রয়োজন। কিন্তু এই লেখা বোতলবন্দি করে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল কেন?

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বোতলবন্দি বার্তা এ ভাবে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা প্রথম বলেছিলেন জার্মান বিজ্ঞানী জর্জ ভন নুমায়ের। ১৮৬৪ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত সময়কালে এমন অনেক বোতলে ভাসিয়ে দিয়ে বার্তা আদানপ্রদান করা হতো। পাওলা জাহাজের ক্যাপ্টেনও আশা করেছিলেন তাঁর এই বার্তা ঠিক পৌঁছে যাবে জার্মান দূতাবাসে। কিন্তু এক শতক পর তা শেষমেশ পৌঁছেছে অস্ট্রেলিয়ার পারথেতে। নাবিকের সেই বার্তা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে না পৌঁছলেও, তা যে আরও বড় ঐতিহাসিক নথি হয়ে দাঁড়াবে তা বোধ হয় তিনি ভেবেও দেখেননি। এর আগে ১৯৩৪ সালে শেষ এমন বোতল উদ্ধার হয়েছিল।

এএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।