রাজন হত্যা : ময়নার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি


প্রকাশিত: ০৩:৫৪ এএম, ২১ জুলাই ২০১৫

সিলেটে নির্মম নির্যাতনে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত আসামি ময়না মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সোমবার সিলেট মহানগর হাকিম-৩ আদালতের বিচারক আনোয়ারুল হক বিকেল সোয়া ৪টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপি ময়না মিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

জবানবন্দিতে ময়না খুনের দায় কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত ও পাভেল নামের আরেক যুবকের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছেন। তবে নির্যাতনের আগে সে রাজনকে খুঁটির সাথে বেঁধে চড় থাপ্পড় মারা ও ফোনে কামরুলদের ডেকে আনার কথা স্বীকার করেছেন।

এর আগে গত ১৫ জুলাই রাজন হত্যা মামলায় আটক দুই প্রত্যক্ষদর্শী আজমত উল্লাহ ও ফিরোজ আলী মহানগর-১ হাকিম আদালতের বিচারক শাহেদুল করিমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন।

পাহারাদার ময়না মিয়ার জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার সোমবার রাতে জাগো নিউজকে জানান, ময়না কান্দিগাঁও ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলামদের মালিকানাধীন ওয়ার্কশপের পাহারাদারের কাজ করতো। ঘটনার দিন পার্শ্ববর্তী একটি দোকানের চৌকিদার জানায় তাদের ওয়ার্কশপে রাজন চুরি করতে ঢুকেছে। তখন সে রাজনকে ধরে এনে খুঁটির সাথে বেঁধে চড় থাপ্পড় মেরে মোবাইল ফোনে ওয়ার্কশপের মালিক কামরুল ও তার ভাইদের খবর দেয়।

কামরুল, তার ভাই মুহিদুল ও পাভেল নামের এক যুবক এসে রাজনকে লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। তাদের মারধরেই রাজন মারা যায়। তার মারধরে রাজনের মৃত্যু হয়নি এমনটি দাবি করে ময়না আদালতকে বলে সে কামরুলদের মারধর করার সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে।

গত ১৪ জুলাই রাতে রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ময়না মিয়াকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয়। ১৫ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডের সময় শেষ হওয়ার আগেই ময়না আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মুহিত ইসলাম, তার ভাই আলী হায়দার, মুহিদের শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুছ, দুলাল মিয়া ও নির্যাতনের ভিডিও চিত্রগ্রাহক নুর মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এছাড়া মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগম, দুই প্রত্যক্ষদর্শীসহ এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি চারজন।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁওয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। হত্যার পর মরদেহ গুম করার সময় এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়ে মুহিত।

ছামির মাহমুদ/এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।