এবার একজনের মস্তিষ্ক বসবে অন্যজনের দেহে!


প্রকাশিত: ১২:৫১ পিএম, ১৪ জুন ২০১৫

একের পর এক আশ্চর্য আবিষ্কারে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের এই জয়যাত্রায় আজ মনে হতেই পারে, মানুষ যা কিছু কল্পনা করতে পারে তার সবই সম্ভব করার ক্ষমতা রাখে বিজ্ঞান।

তারই প্রমাণ মস্তিষ্কের প্রতিস্থাপন। চোখ, কিডনি, হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের পর বাকি ছিল এটাই। সেটাই এবার সম্ভব করছে বিজ্ঞানীরা।

আর এক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে রাশিয়া। ৩০ বছরের ভ্যালারি স্পিরিডিনভের মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপিত হতে চলেছে অন্য মানুষের দেহে। এই দুঃসাহসিক অপারেশনটি হবে ২০১৭ সালে। অনেকেই এই প্রতিস্থাপনের সফলতা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।

`আদৌ কি সফল হবে মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন`? প্রশ্ন আর বিস্ময় যতই দানা বাঁধুক, বিজ্ঞানের অগ্রগতির দিকে এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপকে কুর্নিশ করছে গোটা বিশ্ব।
       
রাশিয়ার ভ্যালারি স্পিরিডিনভ এখন হফম্যান রোগে আক্রান্ত। মস্তিষ্ক বাদে পুরো দেহটাই অকেজো হয়ে গেছে তাঁর। হুইল চেয়ারে কাটছে জীবন। মৃত্যুর আগে নিজের মস্তিষ্ক দিয়ে যেতে চান অন্যের দেহে। তাঁর এই ইচ্ছেকেই সম্মান জানাতে চলছে পরীক্ষা নিরীক্ষা। সফল কিংবা অসফল, ফলাফল যাই হোক না কেন, মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে প্রথম নজির গড়তে চলেছেন ৩০ বছরের ভ্যালারি স্পিরিডিনভ।

ইতালিয়ান স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. সার্জিও ক্যানভারো দাবি করছেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি এই দুঃসাহসিক কাজ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, `মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে সফলতা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে ৯০%। কিন্তু এটাও সত্যি, এক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকিও রয়েছে। আমি তা অস্বীকার করতে পারিনা`,

তবে এই দাবিতে সর্বতোভাবে সহমত হতে পারছেন না অনেকেই। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের চিকিৎসকরা মনে করছেন, এখনও পর্যন্ত ভ্যালারি স্পিরিডিনভের মস্তিষ্ক কাজ করছে। কিন্তু তা প্রতিস্থাপনের পর সেটি আর কাজ করবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

তবে নিজের মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনে আশাবাদী ভ্যালারি স্পিরিডিনভ। তিনি বলেন, `যদি আমি আমার গোটা দেহ প্রতিস্থাপনের সুযোগ পেতাম, আমি পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেতাম`।

এই প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রথমত যেই ব্যক্তির দেহে মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন করা হবে, তাঁর দেহের সমস্ত কোষগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে। অপারেশনের সময় সেই কোষগুলোর মৃত্যু হলে এই প্রতিস্থাপন কখনই সফল হবে না। এরপর খেয়াল রাখতে হবে রক্ত সঞ্চালনের দিকেও। এক্ষেত্রে প্রয়োজন মস্তিষ্ক পর্যন্ত রক্তের সঞ্চালন। অপারেশন চলার সময় দেহের এবং মস্তিষ্কের তাপমাত্রা রাখতে হবে ১০ ডিগ্রি থেকে ২০ ডিগ্রির মধ্যে। এই জটিল অস্ত্রোপচারে মেরুদণ্ডের প্রতিও হতে হবে যত্নবান।

`এই প্রতিস্থাপনটি সম্পূর্ণ গবেষণামূলক` মন্তব্য লন্ডনের জর্জ হাসপাতালের ডাক্তার মেথিউ ক্রোকারের।  

সাফল্য অথবা ব্যর্থতা-যাই হোক না কেন, এই পদক্ষেপ চিকিৎসাবিজ্ঞানে যে একটা নতুন অধ্যায় সূচিত করতে যাচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই।

এসআরজে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।