গরমে চরম অস্বস্তিতে জনজীবন


প্রকাশিত: ০২:১৩ এএম, ২৫ মে ২০১৭
ছবি : মাহবুব আলম

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ- এ দুই মাস গ্রীষ্মকাল। এ সময়টা দেশের জন্য শুষ্কতা আর গরমে ভরপুর। যদিও মাঝে মাঝে বৃষ্টির দেখা মেলে। দেখা মেলে বৈশাখী ঝড়েরও। কিন্তু মাঝে মাঝে এর ব্যত্যয় ঘটতেও দেখা যায়। প্রচণ্ড গরমে চরম অস্বস্তিতে পড়ে যায় মানুষ।

hot

বেশ কয়েকদিন যাবৎ তীব্র তাপদাহ দেশজুড়ে। গ্রামাঞ্চলে এর প্রভাব তেমন না হলেও শহরে গরমের কারণে অস্বস্তিতে পড়েছে মানুষ। রাজধানী ঢাকায় উঁচু উঁচু ভবন, গাছপালার অপ্রতুলতা, গিঞ্জি পরিবেশ আবহাওয়াকে আরো প্রতিকূল করে তুলেছে। ফলে গরমে হাঁসফাঁস করছে সর্বস্তরের মানুষ।

hot

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে তীব্র তাপদাহের খবর পাওয়া গেছে। এই গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায় শহরের শ্রমজীবী মানুষ। ঢাকার রাজপথের রিকশাচালকদের কষ্ট চোখে পড়ার মতো। তাদের মাথার ওপর থাকে না কোনো ছাতা বা মাথাল। সড়কে নেই কোনো বৃক্ষের ছায়া। কেবল গামছা দিয়ে মাথাটুকু ঢেকে তারা রিকশা চালান।

hot

গরমে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। খুব বেশি মালামাল না হলে ভ্যান বা রিকশাযোগে নিয়ে যেতে হয় তাদের। প্রচণ্ড গরমে মালামালের ওপর বসে মাথায় সামান্য গামছা দিয়ে রোদ থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করেন তারা। অপরদিকে রিকশাচালকও গরমে অতিষ্ট হয়ে খালি গায়েই রিকশা চালাতে বাধ্য হন। সুযোগ পেলে কাজের ফাঁকে কোনো স্থাপনা বা পার্কের বৃক্ষের ছায়া খুঁজে জিরিয়ে নেন তারা।

hot

কখনো কখনো গরমে অতিষ্ট হয়ে গায়ের জামা খুলে ব্যক্তিগত গাড়িতে (মাইক্রো বা প্রাইভেটকার) হেলান দিয়ে শুয়ে বিশ্রাম নেন চালকরা। কেউ কেউ একটু অবসরে গরম থেকে বাঁচতে কিংবা একটু বাতাসের পরশ পেতে কোনো পার্ক বা জলাশয়ের উন্মুক্ত স্থানে বসে থাকেন।

hot

নিম্নবৃত্ত শ্রেণির মানুষদের মধ্যে গরম থেকে বাঁচতে রাজধানীর হাতিরঝিলে সাঁতার কাটে শিশুরা। গরম থেকে বাঁচতে বেশিক্ষণ পানিতে সাঁতার কেটে সময় কাটায় ওরা। মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও গরমে অতিষ্ট হয়ে ওঠে। বেওয়ারিশ কুকুর ও নীড়হারা পাখিগুলো খোঁজে শীতলতা। কখনো কখনো গরমের আতিশয্যে বিভ্রান্ত হয়ে একটু শান্তির শীতল ছোঁয়া পেতে কুকুরও নামে পানিতে।

hot

কিংবা চোখে পড়ে, পায়ে হাঁটা মানুষকেও। গাড়ির অসহ্য জ্যাম এবং বিরক্তিকর গরমে ক্লান্ত ঘর্মাক্ত মানুষ গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। হেঁটে আর কতদূর যাওয়া যায়। তাই তো ক্লান্ত পথিক একটু জিরিয়ে নেয়। কবির ভাষায় কেউ কেউ বলেন, ‘নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম/ পেছন থেকে কেউ বলেনি করুণ পথিক/ দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও’। তবুও হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্তির পর একটু আশ্রয় খোঁজে কোনো স্থাপনার আড়ালে কিংবা ছায়াতলে।

hot

অতিমাত্রায় গরম এবং অসহ্য প্রকৃতি থেকে মুক্তি চান সবাই। সবকিছুই মাত্রা অতিক্রম করলে তা শাস্তি বা অত্যাচারের মতো মনে হয়। তাই তো সর্বার প্রার্থনা, প্রকৃতি যেন শীতল। স্বর্গের শান্তি যেন নেমে আসে পৃথিবীতে। কামনায় বাসনায় এগিয়ে চলে জীবন। প্রত্যেকটি প্রাণি কেবল মুক্তি খোঁজে। অপরিসীম মুক্তি, সীমাহীন শান্তি।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।