বিচিত্র সব ব্যাংকনোট : প্রথম পর্ব

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০৭:২১ এএম, ২০ মে ২০১৭

সারা বিশ্বেই এখন ব্যাংকনোটের গুরুত্ব অপরিসীম। মুদ্রার প্রচলন শেষ হয়েছে অনেক আগে। আধুনিক সমাজে ব্যাংকনোট ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। ব্যাংকনোট প্রচলনের শুরু থেকেই বিচিত্র সব নোট আবিষ্কার করে মানুষ। সে সব নোট নিয়েই বিশেষ আয়োজনের প্রথম পর্ব দেখুন আজ-

প্রথম নোটের অস্তিত্ব
প্রায় তেরশ’ বছর আগে চীনে প্রথম কাগজের নোটের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর মার্কো পোলোর হাত ধরে চীন থেকে প্রথমে ইউরোপ, তারপর গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাংকনোটের এই বিশাল ইতিহাসের মাঝেও অদ্ভুত কিছু গল্প লুকিয়ে থাকতে পারে। সে সব বিচিত্র গল্পগুলোই জানা যায় একসময়।

পুরনো নোট
chin
প্রথম ব্যাংকনোট সপ্তম শতাব্দীতে তৈরি হলেও সাধারণভাবে এর প্রচলন শুরু হয় দশম শতাব্দীতে। সং রাজবংশের হাত ধরে। সিচুয়ান সাম্রাজ্যের রাজধানী চেংডুতে ব্যবহার শুরু হয় ‘জিয়াওজি’ নামের ব্যাংকনোট। মুদ্রা বিশেষজ্ঞরা এই নোটকেই প্রথম ব্যাংকনোট হিসেবে ঘোষণা করেন। নকল হতে পারে ভেবে নোটের উপর প্রচুর সিল মারা হতো।

সবচেয়ে বড় নোট
note
ফিলিপাইনের ১ লক্ষ পেসোর লিগ্যাল সাইজের কাগজ দিয়ে বানানো সাড়ে আট বাই চৌদ্দ ইঞ্চির বিশাল নোটই ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নোট। কিন্তু নোটটি সাধারণ ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়নি। ফিলিপাইনের স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংগ্রাহকদের জন্য বিশেষভাবে বানানো হয়েছিল। আর ১ লক্ষ পেসোর নোট পেতে খরচ করতে হয়েছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার পেসো যা প্রায় ৩ লক্ষ টাকার সমান!

বড় অঙ্কের নোট
Bignote
২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ে মুদ্রাস্ফীতির রেকর্ড গড়েছিল। শেষমেশ জিম্বাবুইয়ান রিজার্ভ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেয় ১০০ ট্রিলিয়ন জিম্বাবুইয়ান ডলারের ব্যাংক নোট বের করার! তার মানে ১ এর পর ১৪টা শূন্য! অবাক হওয়ার কিছু নেই, জিম্বাবুয়েতে ৩০০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে বাজারে গেলে আপনি বড়জোর এক টুকরো পাউরুটি কিনতে পারবেন! কিন্তু এরও ২০ বছর আগে ১৯৮৯ থেকে শুরু হয়ে ১৯৯৪ সালে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা হওয়ার আগ পর্যন্ত যুগোস্লাভিয়ায় ৫০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ এর মতো বড় নোটের প্রচলন ছিল! ৫ এর পর ২০টা শূন্য! এটিই পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঙ্কের ব্যাংকনোট!

নটজেল্ড প্রিন্ট
note
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়েই জার্মানিতে নিকেল, তামাসহ অন্যান্য ধাতু যুদ্ধে ব্যবহৃত গুলি বানানোর কাজে বাজার থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। ফলে হঠাৎ করেই পয়সার আদান-প্রদান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি নটজেল্ড প্রিন্ট দেওয়া শুরু করে। একেবারে সাদা কাগজ, কাঠ, সিরামিক এমনকি চামড়ার উপরেও ২৫, ৫০, ১০০ ফেনিখ (জার্মান পয়সা) লিখে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশেষে ১৯২৩ সালে রাইখসব্যাংক নতুন মুদ্রা ‘রেনটেনমার্ক’র প্রচলন শুরু করলে নটজেল্ড আমলের অবসান ঘটে।

চলবে-

এসইউ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।