এক ভয়ংকর শহরের গল্প!

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ
সালাহ উদ্দিন মাহমুদ সালাহ উদ্দিন মাহমুদ , লেখক ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০৬:০২ এএম, ২০ মার্চ ২০১৭

এক ভয়ংকর শহরের গল্প বলবো আজ। শহরটির নাম ইউবারি। জাপানের একটি শহর। যে শহরে কোনো শিশু নেই। মাত্র ৫০ বছরে জনসংখ্যা কমেছে ৯০ শতাংশ। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই বৃদ্ধ। বন্ধ হয়ে গেছে পাঠশালা! আর কয়েক বছর পরই সংখ্যাগরিষ্ঠ হবেন অবসরপ্রাপ্তরা। আসুন জেনে নেই সেই শহরের গল্প।

অবস্থান
ইউবারি শহরটি জাপানের সবচেয়ে উত্তরের দ্বীপ হোক্কাইডুতে অবস্থিত। শিল্পোন্নত বিশ্বের খুব কম শিল্প-শহরের সঙ্গেই তুলনা চলে ইউবারির।

youbari

জনসংখ্যা
১৯৬০ সালের দিকে এই শহরের জনসংখ্যা ছিল ১ লাখ ২০ হাজারের মতো। ১৯৯০ সালে খনিশ্রমিকরা চলে যান। তখন জনসংখ্যা নেমে আসে ২১ হাজারে। পরবর্তী দুই দশকে এই সংখ্যা নেমে আসে অর্ধেকে। এখন ১০ হাজারেরও কম হবে।

youbari

কয়লার রাজধানী
ইউবারি একসময় জাপানের কয়লার রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিলো। শহরের বেশির ভাগ ভবনই এখন পরিত্যক্ত। পথঘাটে ভয়হীন ঘুরে বেড়ায় হরিণ। কয়লার শেষ খনি বন্ধ হয়ে গেলে বাইরের খনিশ্রমিকরা চলে যান।

youbari

বয়স্কদের শহর
ইউবারিই হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্কদের শহর। ২০১০ সালে শহরের বাসিন্দাদের গড় বয়স ছিল ৫৭ বছর। ২০২০ সালের মধ্যে যা চলে যাবে ৬৫ বছরে। আর তখন ৪০ বছরের চেয়ে কম বয়সীদের তুলনায় ৮০ বছর বয়সীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠবেন।

নেই শিশু ও পাঠশালা
শহরের তরুণ-তরুণীরা কাজের খোঁজে পাড়ি জমিয়েছেন দূর-দূরান্তে। নেই শিশুরাও। এখানে প্রতি ২০ জনে মাত্র একজনের বয়স ১৫ বছরের নিচে। এক শিশু জন্ম নিতে নিতে অন্তত এক ডজন মানুষ মারা যান এখানে। এ শহরে একসময় অনেক স্কুল-কলেজ ছিল। এখন মাত্র একটি স্কুলে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।

youbari

দেউলিয়াত্ব
দেউলিয়াত্বের শিকার এই শহরের শেষ হাসপাতালটিকে ছোট করে এনে একটা ক্লিনিকে পরিণত করা হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০৬০ সালের জাপানে প্রতি ১০ জনে চারজন নাগরিকের বয়স হবে ৬৫ বছরের চেয়ে বেশি।

অরণ্যের শহর
নগরের সব ধরনের আয়োজন গুটিয়ে ইউবারি এখন অরণ্যের শহরে পরিণত হচ্ছে। শিল্প-শহরটির কয়লাখনি, কারখানা, বাণিজ্যিক দালানকোঠা আর বসতবাড়ির বেশির ভাগই পরিত্যক্ত। এ সবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছোটখাটো বন্যপ্রাণীও ফিরে আসছে এখানে।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।