কবির কবরে চারটি লাল গোলাপে ভালবাসার অকৃত্রিম ছোঁয়া
কবরে শ্বেতপাথরের ওপর সযত্নে রাখা সবুজ পাতাসহ চারটি লাল গোলাপ। একটি গোলাপ নাম ফলকের কাছে নুইয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকালে আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আট বছরের নওশীন নাওয়ার পূর্ণতা নামে ছোট্ট একটি শিশু তার বাবার সাথে দাদার কবর জিয়ারত করতে আসে। দাদার কবর জিয়ারত শেষে বাবা তাকে ৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদ বরকত, জব্বার ও শফিউরের কবর জিয়ারত করতে নিয়ে আসেন।
ভাষা শহীদদের কবরগুলোতে ফুলের ডালা দেখে চিনতে সমস্যা না হলেও বরকতের কবরের অদূরে একটি কবরের শিয়রে চারটি গোলাপ রাখা দেখে পূর্ণতা তার বাবার কাছে কবরটি কার তা জানতে চায়।
তিনি কাছে গিয়ে কবরটিতে নামফলক লেখা পড়ে জানান, কবরটি প্রখ্যাত কবি সুফিয়া কামালের। প্রায় দেড় যুগ আগে ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর তিনি মারা যান। তারই কোন ভক্ত ও অনুরাগি কবির শিয়রে চারটি গোলাপ ফুল রেখে ভালবাসা ও শ্রদ্ধা জানান।
কবির কবরের শিয়রে আট লাইনের একটি কবিতা লেখা যার প্রথম দুটি পংক্তি ‘যাব চলে হাসি মুখে মনে নাহি রবে কোন খেদ’। কবরের পাশে আরেকটি শ্বেত পাথরে লেখা রয়েছে ‘এই কবরে কবি সুফিয়া কামালের সাথে শায়িত আছেন সাঈদা খাতুন। ১৯৯৯ সালে তার সন্তান শাহরিয়ার কবীরের ইচ্ছায় কবি সুফিয়া কামালকে এ কবরে কবর দেয়া হয়। কবির পরিবার শাহরিয়ার কবীর ও তার পরিবারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।
বাংলা একাডেমি, একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদকসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত কবি সুফিয়া কামাল ১৯১১ সালে বরিশালে জম্মগ্রহণ করেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলনে ৫০ ও ৬০ এর দশকে কবি সুফিয়া কামাল প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে উল্লেখ্যরযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৭ সালে সাপ্তাহিক বেগম পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তিনি ছিলেন ওই পত্রিকার প্রথম সম্পাদক। তার লেখা সাঁঝের মায়া কবিতাটি জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথের কাছে প্রশংসিত হয়। প্রায় ১৮ বছর আগে তিনি আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত হন।
এমইউ/এআরএস/পিআর