৮২ বছরের স্ত্রীর প্রতি ‘নিখাদ ভালোবাসা’


প্রকাশিত: ০৩:১৬ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সোমবার, বিকেল সাড়ে ৪টা। গুলশান গুদারাঘাট লেকপাড় থেকে হাতিরঝিলগামী ওয়াকওয়ের পাশে পসরা সাজাতে ব্যস্ত দোকানদাররা। একটু পরেই আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাদের উপস্থিতিতে এলাকাটি সরব হয়ে উঠবে। আর তাই খাদ্যসামগ্রী, খেলনা ও পোশাকাদিসহ বিভিন্ন আইটেম সাজিয়ে ক্রেতার জন্য নিত্যদিনের অধীর অপেক্ষা। এ সময়টায় রাস্তাঘাট তুলনামূলক ফাঁকা। এ সুযোগে এলাকার ছোট শিশুরা ক্রিকেট খেলতে নেমে পড়েছে রাস্তায়।

এ সময় খুব ধীরগতিতে দুজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে হেঁটে আসতে দেখা যায়। শ্মশ্রুমণ্ডিত বৃদ্ধের পরিধানে সাদা আলখেল্লা, সাদা টুপি, লুঙ্গি ও পায়ে প্লাস্টিকের জুতা। বৃদ্ধার পরিধানে কালো সাদা প্রিন্টের ম্যাক্সি, মাথায় ওড়না। দুজনেই বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তবে বৃদ্ধের চেয়ে বৃদ্ধাকে একটু বেশি নাজুক দেখা যায়। বৃদ্ধ খুব হিসেব করে পা ফেলছেন। বৃদ্ধার কাঁধে হাত রেখে খেয়াল রেখে পাশাপাশি হাঁটছেন। উপস্থিত সবার দৃষ্টি তাদের দিকে।

বৃদ্ধের নাম সফু মিয়া। বয়স কদিন আগেই ৯০ ছাড়িয়েছে। স্ত্রী আয়েশা খাতুনের বয়স ৮২ বছর। স্ত্রীকে নিয়ে দক্ষিণ বাড্ডার ভাড়া বাসায় থাকেন। সপ্তাহে দুই-তিনদিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে বের হন। এ বয়সেও স্ত্রীর প্রতি তার কী ‘নিখাদ ভালোবাসা’। তবে শরীর কুলোয় না আবার বাসায় বসে থাকলেও খারাপ লাগে।

man

একা থাকেন কেন? ছেলেমেয়ে আছে কি না জিজ্ঞাসা করতেই দু’চোখ ছলছল করে ওঠে। জবাব না দিয়েই সামনে এগিয়ে যান। অনেক পীড়াপীড়ির পর জানান, ছেলের কথা বলে আর দুঃখ দিওনা। ওদের মরণেই আজ কষ্টের জীবন কাটাতে হচ্ছে।

বৃদ্ধ জানান, তাদের তিন তিনটি ছেলে থাকলেও কয়েক বছরের ব্যবধানে মারা যায়। মেয়ে দুজন, বিয়ের পর তারা শ্বশুড়বাড়িতে থাকে। তাই ভাগ্যচক্রে দুজনকে একাকী জীবন কাটাতে হচ্ছে।

সংসারের খরচ কীভাবে চলছে এ প্রশ্নের উত্তরে- আল্লাহ চালাচ্ছে বলে এগিয়ে যান। তাদের সম্পর্কে আরও কিছু জানার ইচ্ছা  থাকলেও দুজনই আর কথা বলতে রাজি হননি।



এমইউ/ওআর/জেডএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।