পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিশ্ব জয় করা সম্ভব : হাসিব হলি
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের ঝুলিতে বাংলাদেশের ক্রিকেট ছাড়া খেলাধুলায় অন্য কোন অর্জন নেই। তবে এবার একক প্রচেষ্টায় সেই ফাঁকা ঝুলিতে স্বর্ণ নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের হাসিব মোহাম্মদ হলি। সম্প্রতি তিনি সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত নাব্বা ডাউলুএফএফ এশিয়ান মাসল ওয়ার-১৭ তে বাংলাদেশ থেকে প্রথম প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এশিয়ার ১২টি দেশের বডিবিল্ডারদের হারিয়ে জুনিয়র ওপেন ওয়েট ক্যাটাগরিতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে স্বর্ণ জিতেছেন।
এশিয়া জয়ের পর গত ১৯ জানুয়ারি দেশে ফিরেছেন বডিবিল্ডিংয়ে প্রথম স্বর্ণজয়ী এ তারকা। এ বিষয়ে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন জাগো নিউজের। তার সঙ্গে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ জানাচ্ছেন মাহবুবর রহমান সুমন।
জাগো নিউজ : বডিবিল্ডিংয়ে আপনার হাতেখড়ির গল্প শুনতে চাই–
হাসিব হলি : ছোটবেলা থেকেই বডিবিল্ডিংয়ে আগ্রহ ছিল আমার। কেননা আমার বাবাও একজন বডিবিল্ডার। ১৪ বছর বয়স থেকেই আমি বডিবিল্ডিং শুরু করি। তারপর ২০০৯ সাল থেকে আমি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া শুরু করি। এভাবেই আমার হাতেখড়ি বলতে পারেন।
জাগো নিউজ : বডিবিল্ডিংয়ে এশিয়া জয় করে ফেরার অনুভূতি কেমন?
হাসিব হলি : এশিয়া মাসল ওয়ারে বাংলাদেশ থেকে এবার প্রথম অংশগ্রহণ করেই স্বর্ণ জিতেছি- এ জন্য দারুণ উচ্ছ্বসিত। এটাই দেশের প্রথম স্বর্ণ জয়। দেশের জন্য এটি বড় অর্জন। এ জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
জাগো নিউজ : এখন কি বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখেন?
হাসিব হলি : জুনে ব্রাজিলে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ মি. ইউনিভার্স হতে যাচ্ছে। সেখানে অংশগ্রহণ করে বিশ্ব জয়ের যাত্রা শুরু করার ইচ্ছা আছে। তবে কিছু কারণে যাত্রার শুরুটা সহজ হবে কিনা জানি না। তবে পৃষ্ঠপোষকতায় পেলে দুই বছরের মধ্যে বিশ্ব জয় করা সম্ভব।
জাগো নিউজ : যাত্রার শুরুটা সহজ হবে না কেন?
হাসিব হলি : আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে আমি স্বর্ণ জয় করে ফিরলেও ফেডারেশন বা কারো থেকে কোন সহযোগিতাই পাইনি। সিঙ্গাপুরে খেলার সব খরচ আমি নিজেই বহন করেছি। সে কারণে প্রচুর টাকা ঋণও আছে আমার। এক্ষেত্রে পৃষ্ঠপোষকতা ও সরকারি সহযোগিতা ছাড়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ কঠিন হবে আমার জন্য। তবে সহযোগিতা পেলে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে যাবো।
জাগো নিউজ : থাইল্যান্ডের নামকরা বডিবিল্ডার ড. সিট্রির কাছে প্রশিক্ষণ নেয়ার গল্প শুনতে চাই–
হাসিব হলি : ২০১৫ সালে জাতীয় শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় মিস্টার বাংলাদেশ হওয়ার পর আমি থাইল্যান্ড যাই। সেখানে গিয়ে তিনবার ওয়ার্ল্ড বডিবিল্ডিং চ্যাম্পিয়ন ড. সিট্রি কাছে তিন মাস প্রশিক্ষণ নেই। তার কাছ থেকে আমি ‘মাই বডি ইজ ফর মাই কান্ট্রি’ স্লোগান নিয়েই কাজ শুরু করি। এছাড়া আমিই বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃত জিম প্রশিক্ষক।
জাগো নিউজ : সরকারের কাছে কিছু চাওয়ার আছে?
হাসিব হলি : আমি এখনো পর্যন্ত যা কিছু করেছি, সবকিছুই নিজের প্রচেষ্টায়। এখন আমি দেশকে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ উপহার দিতে চাই। তাই সরকারের কাছে আমার চাওয়া– আমি যেন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতায় ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করতে পারি তার ব্যবস্থা করা হোক।
জাগো নিউজ : আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
হাসিব হলি : যতদিন সম্ভব খেলা চালিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশে একটি বডিবিল্ডিং ইনস্টিটিউট তৈরি করেছি। সেখান থেকে বিশ্বমানের বডিবিল্ডার তৈরি করতে চাই?
জাগো নিউজ : জাগো নিউজের পক্ষ থেকে আপনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন।
হাসিব হলি : জাগো নিউজ এবং আপনাকে ধন্যবাদ।
এসইউ/পিআর