হাজার বছরের বটবৃক্ষ


প্রকাশিত: ০৮:১৮ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬

সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার গেলেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের উপজেলা দেবহাটা। দেবহাটা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রেই আছে হাজার বছরের এক বটবৃক্ষ। স্থানীয়ভাবে এই স্থানটি বটতলা কিংবা বনবিনি তলা নামে পরিচিত। প্রায় সাড়ে তিন বিঘা জমির ওপর বিস্তৃত এই বটতলা। বিস্তৃত এই বটগাছের প্রকৃত গোড়া খুঁজে পাবেন না। কেননা গাছের শাখা-প্রশাখা শিকড় থেকে বিরাট রূপ ধারণ করেছে।

এই বটবৃক্ষের জন্মের রহস্য জানতে ওই জামির মালিক রবিন দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে জানান, গাছটির জন্ম সাল বা জন্মের রহস্য আজো সবার অজানা। বটসহ গাছের আশেপাশের জমির মালিক ছিলেন আমার বাবা। তার কাছেও জানা ছিলো না এ রহস্য।

bonbibi

তবে প্রচলিত ইতিহাস থেকে জানা যায়, এই এলাকায় ব্রিটিশ আমলে জমিদারদের বসবাস ছিল। উপজেলা সদর থেকে টাউনশ্রীপুর পর্যন্ত মাত্র সাড়ে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে ছিল ১৮ জন জমিদারের বসবাস। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই টাউনশ্রীপুরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় পৌরসভা ছিল। যার নাম ছিল টাউনশ্রীপুর মিউনিসিপ্যালিটি। ধারণা করা হয়, ব্রিটিশ আমলে বা তার বহু আগে এই বটগাছের জন্ম। তবে কিভাবে জন্ম তা আজও অজানা।
bonbibi
অতীতে সাধু-সন্ন্যাসীরা এখানে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। দেব-দেবীর পূজা-অর্চনা করতেন। আবার অনেকে মনের কামনা পূরণে নির্জনে এখানে এসে বনবিবিকে মনের কথা শোনাতেন। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন আর কোন সাধু-সন্ন্যাসী এসে এখানে বসে না, থাকে না কেউ ধ্যানে মগ্ন। শুধু প্রতিদিন বিনোদনের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী-পুরুষ ভিড় করেন এই স্থানে। এখানে গাছের শিকড় ও প্রশাখা আছে, যেখানে বসে অনেকে সময় কাটান, ছবি তোলেন।

bonbibi

এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এই স্থানে জমে ওঠে বৈশাখী মেলা। স্থানীয় জনসাধারণের উদ্যোগে বিরাট বটগাছের নিচে প্রতিবছর পৌষ মাসের শেষের দিন এখানে হাজত মেলার আয়োজন করা হয়। তাছাড়া এখানে শঙ্খচিল সিনেমার একটি দৃশ্য ধারণ করা হয়।

অন্যদিকে বৃহৎ এই বটগাছ আবার পরস্পর বেড়ে চলেছে। এর চারপাশে জনবসতি গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এতে নিজের সৌন্দর্য হারাচ্ছে বনবিবি। তাই স্থানীয়দের দাবি, এই ঐতিহ্যবাহী স্থানটিকে আরো সুন্দর ও নান্দনিক করে গড়ে তুলতে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।