মোস্তাফিজ-সৌম্যকে হাতেখড়ি দিতে পেরে আমি গর্বিত : তপু


প্রকাশিত: ০৬:৪৩ এএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

মোস্তাফিজুর রহমান, সৌম্য সরকার ও রবিউল ইসলাম শিবলুরা যদি নায়ক হয় তবে সেই গল্পের স্রষ্টা মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু। কেননা তাদের মত বিশ্বমানের ক্রিকেটারদের প্রথম কোচ তিনি। তার হাতে প্রথম ক্রিকেটীয় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মুস্তাফিজ-সৌম্যর মত তারকা। তার আরো একটি পরিচয় হচ্ছে- তিনি সাতক্ষীরা জেলা ক্রিকেট দলের কোচ। এছাড়া এবারের বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সাতক্ষীরার মুন্সিপাড়া গ্রামে জন্ম নেয়া এই নায়ক সম্প্রতি কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। তার সঙ্গে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ জানাচ্ছেন মাহবুবর রহমান সুমন
 
জাগো নিউজ : প্রথমে আপনার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের গল্প শুনতে চাই-
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : ছোটবেলা থেকেই আমি ক্রিকেট খেলতাম। তবে প্রথম টেনিস বলে ক্রিকেট খেলা শুরু করি আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়ি। ১৯৯২ সালে প্রথম আমি বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলা শুরু করি। জেলা দলের হয়ে খেলেছি ৪ বছর। তারপর ১৯৯৬ সাল থেকে ৯ বছর ঢাকা ফাস্ট ডিভিশন লীগ ও ১ বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ খেলেছি। এছাড়া খুলনা বিভাগের হয়ে জাতীয় লীগ খেলেছি ২ বছর।

জাগো নিউজ : কোচিংয়ের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন?
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : ২০০৫ সালে আমি লেভেল ওয়ান শেষ করি বলতে গেলে তখন থেকেই আমার কোচিং ক্যারিয়ার শুরু। তারপর ২০০৭-২০০৮ সাল থেকে জেলা পর্যায়ের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হই। তাছাড়া ২০১১ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত জেলা কোচের দায়িত্ব পালন করছি।

2016October

জাগো নিউজ : মোস্তাফিজ, সৌম্য এবং শিবলুর প্রথম কোচ হওয়ার গল্প যদি শোনাতেন-
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : শুধু মোস্তাফিজ, সৌম্য বা শিবলু নয়- সাতক্ষীরা থেকে যেকোন পর্যায়ে যারা খেলছেন তাদের প্রায় সবাইকে কোচিং করানোর সুযোগ হয়েছে আমার। ২০০৫ সালের কথা, আমি তখন বিসিবির অধীনে জেলা পর্যায়ের নির্বাচক ছিলাম। তখন সৌম্য সাতক্ষীরা জেলার হয়ে খুলনাতে অনূর্ধ্ব-১৩’র হয়ে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিল। তখন আমি সাতক্ষীরা জেলা থেকে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে সৌম্যকে নির্বাচন করেছিলাম। তারপর বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার আগে সৌম্য আমার কাছে ৬-৭ মাস প্রশিক্ষণ নেয়। আর মোস্তাফিজ শুরু থেকেই অনূর্ধ্ব-১৪ তে যোগ দেয়ার আগে থেকেই আমার কাছে কোচিং করত। এছাড়া রবিউল ইসলাম শিবলুসহ আরো অনেককেই কোচিং করানোর সুযোগ হয়েছে আমার।  

জাগো নিউজ : প্রথম গুরুর সাথে কি শিষ্যদের নিয়মিত যোগাযোগ হয়?
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : হুম, তা হয়। নিউজিল্যান্ড সিরিজে যাওয়ার আগে মোস্তাফিজ ও সৌম্যর সাথে অনেক সময় কথা হয়েছে। তাছাড়া তারা সাতক্ষীরা আসলে বা ঢাকায় থাকলে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। তাদের যেভাবে সাহায্য করার দরকার হয়, আমরা সেভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করি। তবে এখন আমরা মেন্টাললি বেশি সাহায্য করি। কেননা এখন অন্য ব্যাপারগুলোতে সাহায্য করার জন্য অনেক বড় মাপের কোচ আছেন তাদের জন্য।

জাগো নিউজ : সাতক্ষীরা থেকে মোস্তাফিজ বা সৌম্যর মত আরো তারকা ক্রিকেটার জন্মের সম্ভাবনা কেমন?
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : এখন সবাই এমনটা আশা করে। তবে সেটা হতে কিছুটা সময়েরও দরকার। তবে আমদের বয়সভিত্তিক দলে কিছু সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার আছে। আমি মনে করি, তাদের ২-৩ বছর সময় দিলে ২ থেকে ৩ জন জাতীয় দলে খেলার মত ক্রিকেটার আমরা পাঠাতে পারবো বলে আশাবাদী।

2016October

জাগো নিউজ : আপনি মোস্তাফিজ ও সৌম্য সরকারের প্রথম কোচ- ভাবতে কেমন লাগে?
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : মোস্তাফিজ ও সৌম্যর মত ক্রিকেটারদের হাড়েখড়ি দিতে পেরে আমি গর্বিত। কিছু কিছু অনুভূতি প্রকাশের যেমন কোন শব্দ খুঁজে পাওয়া যায় না; আমার কাছে এ অনুভূতি প্রকাশেরও কোন শব্দ  নেই। এবারের বিপিএলে মোস্তাফিজ যখন বিদেশি এক কোচের কাছে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন, ‘ইটস মাই ফার্স্ট কোচ’। এই সময়ের অনুভূতি প্রকাশের কোন শব্দ আমার জানা নেই।

জাগো নিউজ : আপনি ‘বিশ্ব ক্রিকেটের বিস্ময়বালক’র প্রথম গুরু হিসেবে কিছু চাওয়ার আছে কী?
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : আমরা সাতক্ষীরায় থেকে বিশ্বমানের ক্রিকেটার তৈরি করলেও ক্রিকেটের জন্য উপযোগী তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা পাই না। তাই আমি চাই- সাতক্ষীরাতে যদি ইনডোর ক্রিকেটের ব্যবস্থা বা জিমের সুবিধাসহ অন্য ক্রিকেট উপযোগী সুযোগ-সুবিধা দেয়া যায়, তাহলে সাতক্ষীরা থেকে আগামীতে আরো নতুন ক্রিকেটার জন্ম হবে।

জাগো নিউজ : জাগো নিউজকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোফাচ্ছেনুল ইসলাম তপু : আপনাকে ও জাগো নিউজকে ধন্যবাদ।

এসইউ/জেআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।