লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা

মাহবুবর রহমান সুমন
মাহবুবর রহমান সুমন মাহবুবর রহমান সুমন , ফিচার কন্ট্রিবিউটর
প্রকাশিত: ০৬:০৯ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

নাম মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বয়স প্রায় ৬৬ বছর। পেশায় ফেরিওয়ালা হলেও বিজয়ের মাসে তাঁর পরিচয় ভিন্ন, বিজয়ের মাসে তিনি লাল-সবুজের ফেরিওয়ালা। সারা বছর তিনি নানা রকম পণ্য ফেরি করে বিক্রি করলেও ডিসেম্বর ও মার্চ মাসে তিনি ফেরি করে বিক্রি করেন পতাকা। এই কাজে তিনি নাকি অন্যরকম এক তৃপ্তি পান।

সাইফুলের মতো কয়েকজন পতাকার ফেরিওয়ালার সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন মাহবুবর রহমান সুমন

গাড়িতে, বাড়ির ছাদে, বারান্দায়, রিকশায় এমনকি দুই চাকার মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের সামনে দুলছে লাল-সবুজ। এই লাল-সবুজ দোলার মাঝে আছে এক অন্য সৌন্দর্য, আছে অহংকারের গল্প। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে সামনে রেখে রাজধানীতে চলছে সেই সৌন্দর্য প্রদর্শনী।

লাল-সবুজের সেই অহংকারের পতাকা ওড়ানোর কথা বলছি। বিজয় দিবস সামনে রেখে রাজধানীতে পতাকার যে উৎসব চলছে, সেই পতাকার ফেরিওয়ালারা জানালেন, ডিসেম্বরের শুরু থেকে পতাকা বিক্রির ধুম পড়ে। চলবে বিজয় দিবস পর্যন্ত। এই সময়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পতাকা বিক্রি করছেন এক শ্রেণির মৌসুমি বিক্রেতা।

মহাখালী এলাকার পতাকা বিক্রেতা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানালেন, তিনি সারাবছর নানা রকম পণ্য ফেরি করে বিক্রি করলেও ডিসেম্বর ও মার্চ মাসে তিনি ফেরি করে পতাকা বিক্রি করেন। রাতে পতাকা কিনে তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ফেরি করে পতাকা বিক্রি করেন।

তিনি জানান, তার কাছে পাওয়া যায় ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকার পতাকা। ৪০০ টাকার পতাকার আকার বেশ বড় আর ১০ টাকার পতাকা কাগজের হাতপতাকা।

সাইফুল জানান, দৈনিক কয়টা পতাকা বিক্রি করেন সে তথ্য তিনি না জানাতে পারলেও দৈনিক ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ টাকার পতাকা বিক্রি করেন। দাম নির্দিষ্ট না করে যার কাছ থেকে যেমন টাকা নেয়া যায় সে হিসেবে তিনি পতাকা বিক্রি করে থাকেন।

তিনি আরো জানান, বিদেশি নাগরিকরা বেশি টাকা দিয়ে পতাকা কেনেন। আর এই মৌসুমি ব্যবসায় ভালোই লাভ। এছাড়া তিনি এক অন্যরকম তৃপ্তি পান বলে এই কাজ করেন দুই মৌসুমে।

বসুন্ধরা এলাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সামনে পতকা বিক্রি করা ১৯ বছর বয়সী স্বপন জানালেন, আগে তিনি হোটেলে কাজ করতেন। ডিসেম্বরে বেশি লাভের আশায় এ ব্যবসায় নেমেছেন। স্বপন পতাকা বিক্রি করেন বসুন্ধরা, গুলশান, বনানীসহ অভিজাত এলাকায়।

কারণ হিসাবে জানালেন, এসব এলাকায় পতাকার দাম বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া এ এলাকায় বেশি বিদেশি নাগরিক থাকে, যাদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত দাম নেয়া যায়।

স্বপনের সঙ্গে কথা বলার সময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ফারহানা আরেফিন শ্রাবণী কিনলেন দু’টি পতাকা। তিনি জানালেন, একটি বিজয় দিবসের জন্য। অন্যটি বাসার ছাদে উড়ানোর জন্য।

আমরাও চাই গোটা বাংলাদেশ বিজয়ের মাসে ছেয়ে যাক আমাদের গর্বিত পতাকায়। আর নিজেদের স্বপ্ন বুনুক পতাকার ফেরিওয়ালারা।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।