রহস্যঘেরা গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ (ভিডিও)


প্রকাশিত: ০৬:৩৮ এএম, ২২ অক্টোবর ২০১৬

অস্ট্রেলিয়ার উপকূলীয় শহর কুইন্সল্যান্ডের কোরাল সাগরে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রবাল প্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অবস্থিত। লাখ লাখ বছর ধরে অসংখ্য জীবন্ত প্রাণি একত্র হয়ে বিশাল এ প্রবাল প্রাচীর গঠিত হয়েছে। যা পৃথিবীর সবচেয়ে বিচিত্র বাস্তুতন্ত্রের একটি এবং অস্ট্রেলিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলোর অন্যতম। তবে কীভাবে এটি গড়ে উঠেছে সে রহস্য আজও অজানা।   

১. এটিকে পৃথিবীর সমৃদ্ধ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়। শুধু অস্ট্রেলিয়াই নয়, পৃথিবীর ঐতিহ্যপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

Prani

২. অস্ট্রেলিয়ায় কুইন্সল্যান্ডের সমুদ্রতটে প্রায় ৯০০টি দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই প্রবাল প্রাচীরটি প্রায় ৩,৪৪,৪০০ বর্গকিলোমিটার স্থান জুড়ে অবস্থিত।

Prani

৩. পৃথিবীর আশ্চর্য প্রবাল প্রাচীরের একটি বড় অংশ ‘গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ মেরিন পার্ক’টি একসময়ে মাছ ধরার উপযুক্ত স্থান ছিল।

৪. সম্প্রতি পরিবেশবিদ রোয়ান জ্যাকবসেন ঐতিহ্যপূর্ণ এই বাস্তুতন্ত্রটিকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করেছেন। ২০১৬ সালেই এটির মৃত্যু হয়েছে বলে তার দাবি। যদিও এটি আগের মতোই রয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেক পরিবেশবিদ।

 Prani

৫. পৃথিবীর সবচেয়ে বিচিত্র গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের বয়স প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ বছর। বয়স বিবেচনায় ঐতিহ্যপূর্ণ স্থানগুলোর মধ্যে এটির বিপরীত অন্যটি খুঁজে পাওয়া যায় না।   

৬. পরিবেশবিদদের ধারণা, প্রাচীন এই বাস্তুতন্ত্রে প্রায় ১ হাজার ৬২৫ প্রজাতির মাছ বসবাস করতো। পাশাপাশি ৩ হাজার প্রজাতির শামুক এবং ৩০টি বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিনসহ প্রবাল এখানে বিদ্যমান রয়েছে।

Prani

৭. পর্যটকদের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র। এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি যেমন সমৃদ্ধ তেমনি প্রতি বছর প্রায় ৩ বিলিয়ান ডলার এ থেকে আয় করছে দেশটির সরকার।

৮. এটি বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালপ্রাচীর। বিশ্লেষকদের ধারণা, ‘কোরাল ব্লিচিং’র ফলে এই প্রবাল প্রাচীরের ব্যাপক ক্ষয় হয়েছে। এতে ব্যারিয়ার রিফের সৌন্দর্য কিছুটা কমেছে।  

Prani

৯. প্রতিবছর সারা পৃথিবী থেকে ২০ লাখেরও বেশি পর্যটকের আগমন ঘটে এখানে। ১৯৮১ সালে এই প্রবাল প্রাচীরটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো। বিভিন্ন কারণে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ঝুঁকির মুখে বলে পরিবেশবাদীরা বিভিন্ন সময়ই দাবি করে আসছে। সম্প্রতি এই প্রবাল প্রাচীরটির ঝুঁকির আরো একটি তথ্য উঠে এসেছে। যাতে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই ‘কোরাল ব্লিচিং’র ফলে সামুদ্রিক প্রাণিদের ক্ষতি হয়েছে।

Prani

১০. অস্ট্রেলীয় গবেষকরা জানিয়েছেন, এক ধরনের গোপন ভাইরাসের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের অস্তিত্ব। দ্বীপের প্রয়োজনীয় প্রবালগুলো ‘সিমবায়োডিনিয়াম’ নামে পরিচিত ‘ফটোসিনথেটিক’ ধরনের শ্যাওলার সঙ্গে মিলেমিশে বাস করে। ফটোসিনথেটিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে গাছেরা সূর্য থেকে প্রাপ্ত আলোকশক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে পরিণত করে।

Prani

গবেষকরা উল্লেখ করেন, এককোষী সিমবায়োডিনিয়াম প্রবালের টিস্যুর ভেতর বাস করে এবং প্রবালের প্রয়োজনীয় পুষ্টির ৯০ শতাংশই জোগান দেয়। সিমবায়োডিনিয়াম এবং প্রবালের এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই বেঁচে থাকে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবালগুলো। তবে বর্তমানে যে গোপন ভাইরাসের আক্রমণের কথা বলা হচ্ছে তাতে এদের মধ্যকার এই সম্পর্ক ভেঙে পড়ে।

Prani

এদিকে অস্ট্রেলিয়াতে মহাসাগর বিজ্ঞান সম্মেলনে নিজের একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন গবেষক ওয়েনবার্গ। ধারণা করা হচ্ছে, প্রবাল প্রাচীরে গোপন ভাইরাসের আক্রমণের প্রভাব বিবেচনায় তার এই গবেষণা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এতে বিশ্বের বৃহত্তম এই প্রবাল প্রাচীরটি আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ভিডিও লিঙ্ক: 



এএম/এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।