প্রাচীন রোমের অদ্ভুত যত আইন!
সভ্যতার জন্য প্রাচীন রোম ছিল গোটা দুনিয়ার কাছে আইডল। শিক্ষা, শাসন এবং সভ্যতার দিক থেকে মধ্যমণি। দার্শনিকদের স্বর্গ। কিন্ত এত কিছুর পরও রোমে ছিল কিছু আজব আইন, যা শুনলে আপনার গায়ে হয়ত কাঁটা দিয়ে উঠবে। তাহলে আসুন জেনে নেই প্রাচীন রোমের অদ্ভুত যত আইন!
বেগুনি রং
প্রাচীন রোমে বেগুনি রং আভিজাত্যের প্রতীক ছিল। একমাত্র সম্রাটরাই বেগুনি রঙের পোশাক পরতেন। সাধারণ নাগরিকদের কেউ ভুলেও যদি বেগুনি পোশাক পরতো তবে তার জন্য ছিল কঠোর শাস্তি।
নারীর কান্না
একসময় রোমানদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে নারীদের কাঁদা নিষেধ ছিল। দেখা যেত, যে মৃত ব্যক্তির জন্য কান্নার অভিনয় করতে বাইরে থেকে লোক ভাড়া করা হতো। এই ধরনের নাটকীয়তা যাতে না হয় সেজন্য আইন করা হয়েছিল।
প্রেম বা পরকীয়া
যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পরকীয়া অবস্থায় ধরতে পারতো, তবে সে তার স্ত্রীর প্রেমিককে খুন করার অধিকার রাখতো। এজন্য কোনো শাস্তির বিধান ছিল না। একই কথা প্রযোজ্য ছিল তার মেয়ের বেলাতেও। বাবা চাইলে তার মেয়ের প্রেমিককে খুন করতে পারতেন! অন্যদিকে যদি স্বামী পরকীয়া করতো, তবে স্ত্রীদের কান্না ছাড়া কিছু করার থাকতো না।
অপরাধ দেখে শাস্তি
যদি কেউ ছোটখাট অপরাধ করত তবে তাকে হালকা শাসিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো, কিন্তু অপরাধ যদি বড় হতো তাহলে অপরাধীকে জেলখানার ছাদ থেকে ছুড়ে ফেলার বিধানও ছিল।
পিতৃহত্যার সাজা
কেউ যদি তার বাবাকে হত্যা করার জন্য দায়ী হয় তবে তার শাস্তি ছিল ভয়ঙ্কর। অপরাধীর চোখ বেঁধে শহরের বাইরে নির্জন এলাকায় নিয়ে নগ্ন করে লাঠিপেটা করা হতো। শেষে তাকে একটি চটের বস্তার মধ্যে ভরে সঙ্গে একটি সাপ, একটি কুকুর, একটি বানর ও একটি মোরগ দিয়ে বস্তার মুখ বেঁধে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হতো।
যৌনকর্মীদের চুলের রং
রোমান নারীদের চুল সাধারণত কালো হয়। যেহেতু যৌনকর্মীদের সামাজিক মর্যাদা ছিল না তাই তাদের চুলের রঙ সোনালি করতেই হতো। যাতে তাদের আলাদা ভাবে চেনা যায়।
আত্মহত্যা জন্য আবেদন
প্রাচীন রোমে চাইলেও কেউ সহজে আত্মহত্যা করতে পারত না। বিশেষ করে সৈন্য, আসামি আর ক্রীতদাস। যদি কেউ আত্মহত্যা করতে চাইত তাহলে তাকে আত্মহত্যার কারণ জানিয়ে সম্রাটের কাছে আবেদন করতে হতো।
বজ্রাঘাতে মৃতের সৎকার নয়
সেসময় রোমে যদি কেউ বজ্রাঘাতে মারা যেত তবে তা দেবতা জুপিটারের অভিশাপ হিসেবে ধরা হতো। সেজন্য কেউ বজ্রাঘাতে মৃত ব্যক্তির লাশের সৎকার করতো না।
সন্তান বিক্রি
প্রাচীন রোমে বাবারা চাইলে তাদের ছেলেদের কিছু সময়ের জন্য দাস হিসেবে বিক্রি করতে পারত। এতে আইনি বাধা ছিল না। যদি কেউ তার ছেলেকে পরপর তিনবার বিক্রি করতো তাকে বাবা হিসেবে অযোগ্য বিবেচনা করা হতো এবং ছেলেকে বাবার কাছ থেকে মুক্তি দেওয়া হতো।
ব্যক্তি মালিকানা
যদি কোনো কিছু দীর্ঘ সময় ধরে কোনো ব্যক্তির মালিকানায় থাকতো তবে আইনত সেটির মালিক হতো সেই ব্যক্তি। যদি কোনো স্ত্রী বিয়ের পর টানা একবছর স্বামীর কাছে থাকতো তবে তার মালিক হতেন স্বামী। নিজের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে স্ত্রীরা বছরের তিন দিন লুকিয়ে থাকত।
পিতৃতান্ত্রিক
আগে রোম ছিল পিতৃতান্ত্রিক। বাবারা পরিবারের সকল ক্ষমতা ধরে রাখত। মেয়ের বিয়ের পরেও মেয়েরা বাবাকে ভয় পেত। একমাত্র বাবার মৃত্যুর পরে ছেলেরা স্বাধীনতা পেত।
এসইউ/এমএস