দাবা না হলে চলেই না


প্রকাশিত: ০২:২৮ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০১৬

দাবা। পাহাড়ি নাম। বলা যায়, সমতলের হুঁকা আর কলকির মিলিত রূপ। দুই কি আড়াই ফুটের বাঁশের চোঙা। চোঙার নিম্নাংশে সামান্য ছিদ্র করে তাতে আরেকটি চিকন চোঙা বসানো। তার উপর মাটির তৈরি কলকি। এটি পাহাড়িদের নিত্যসঙ্গী। কাজের ফাঁকে বা কোনো আড্ডায় দাবা হাতের কাছে থাকা চাই-ই। দাবা টানায় পাহাড়ি নারী-পুরুষ সকলেই পারদর্শী। বৃদ্ধরা তুলনামূলক আরো বেশি আসক্ত।kolki

দাবা অর্থাৎ বাঁশের চোঙার নিচের অংশে পানি ভরা থাকে। কলকির উপরে থাকে গুড়মিশ্রিত তামাক। তামাক কলকিতে ভরে তার উপর কাঠের কয়লার আগুনের ফুলকি দেয়া হয়। এরপর চোঙ্গার উপরের অংশে মুখ লাগিয়ে পান করা হয় ধোঁয়া। তামাক আর গুড়মিশ্রিত ধোঁয়া কয়েক দফা টানার পরেই নেশা ধরে। দিনে পাঁচ-ছয়বার দাবা টানেন আসক্তরা।

গত শুক্রবার রাঙ্গামাটির সাজেক ভেলিতে এমন অনেক আসক্তের দেখা মিললো। সেখানে দাবা টানায় কোনো ভেদাভেদ নেই। পুরুষরা টানছেন, তাতে নারীরাও সঙ্গ দিচ্ছেন। আবার নারীরা দাবার বিশেষ পসরা নিয়ে বসেছেন। একবার দাবা সাজিয়ে টানছেন অনেকেই। বৃষ্টি কিংবা শীতে দাবার কদর একটু বেশি-ই বটে। ঘুমানোর আগে এবং ঘুম থেকে উঠে দাবায় মুখ না লাগালে দিন ভালো যায় না ওদের। মরণঘাতী এ নেশায় ছোটরাও দেখে দেখে আসক্ত হয়। তাতেও বাধা নেই বড়দের।

কথা হয় কিসাল ত্রিপুরা নামের এক নারীর সঙ্গে। বয়স ৪০ হবে। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী তিনি। বললেন, ‘১৮ বছর বয়স থেকে দাবা টানছি। বাবা-মায়ের কাছ থেকে শেখা। এক দাবা দিয়েই আমাদের দুজনের চলে। বড় হলে সন্তানরাও টানবে।’

kolk

মারং লুসাই নামের আরেক পাহাড়ি বলেন, ‘আমরা সবাই দাবা টানি। অন্য নেশাও এখানে মেলে। তবে সব নিজেরাই তৈরি করি। বাইরের জিনিসে ভরসা পাই না।’

তামাকে শরীরের ক্ষতি হয়- এমন প্রশ্ন করা হলে মারং বলেন, ‘আদি পুরুষ থেকেই আমরা দাবা টানছি। পারিবারিকভাবেই শেখা। ক্ষতি হয় বুঝতে পারি কিন্তু না টানলে যে শরীর চলে না। কাজেও মন বসে না।’

এএসএস/আরএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।