বন্ধুর জন্য যত আয়োজন


প্রকাশিত: ০৭:১২ এএম, ০৭ আগস্ট ২০১৬

বন্ধুত্ব শব্দটি যেন বিশ্বস্ততা আর নির্ভরতার প্রতীক। এ বন্ধন চিরন্তন, শাশ্বত, সার্বজনীন। যা বলার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা এক ধরনের স্বস্তি খুঁজে পাই। বয়স-সময়-স্থান সব ছাপিয়ে এই শব্দটি আমাদের একাকার করে দেয়। শব্দটি যেন খুব কাছের।

বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা চিরকালীন, শেষ হয় না কখনো। পরিবারের মানুষগুলোর সঙ্গে যে কথাগুলো সহজে বলা হয়ে ওঠে না, বলা যায় না, এমন বিষয়গুলো শেয়ার করার একমাত্র উপায় বন্ধু। সাধারণ খোঁজ-খবর নেয়া থেকে শুরু করে বন্ধুর অন্তঃস্থলের লুকানো খবর যে মানুষটি ধরতে পারে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু। বন্ধু প্রতিমুহূর্তের, প্রতিদিনের, জীবনব্যাপী। একটু ভিন্নভাবে বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পালিত হয় বন্ধু দিবস।

বন্ধু দিবস কেন
প্রতি বছরের আগস্ট মাসের প্রথম রবিবার পালিত হয় আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস। তবে ঠিক কবে থেকে বন্ধু দিবস পালন করা হচ্ছে তার সঠিক ইতিহাস নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে ধারণা করা যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর ত্রিশ থেকে চল্লিশের দশকের মধ্যবর্তী সময়েই বন্ধু দিবস পালন শুরু হয়। ১৯৫৮ সালে দক্ষিণ আমেরিকার কিছু দেশ বিশেষত প্যারাগুয়েতে প্রথম বন্ধু দিবস পালন শুরু হয়।

আবার ধারণা করা হয়, ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এই দিন উদযাপন শুরু হয়। পরে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে একেক দেশে একেক তারিখে বন্ধু দিবস পালিত হয়। ১৯৫৮ সালের ৩০ জুলাই প্রথম ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপন হওয়ার পর ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলি অফ দ্য ইউনাইটেড নেশন’ ২০১১ সালের ৩০ জুলাই দিনটি আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।

অন্যদিকে ১৯১৯ সালে ‘হলমার্ক কার্ড’র প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এমনটাই জানা যায়। তখন আগস্টের প্রথম রবিবার সবাই বন্ধুদের কার্ড এবং উপহার পাঠিয়ে এই দিবস উদযাপন করতো।

বন্ধুকে উপহার
বন্ধুত্ব প্রতিদিন সমান গুরুত্বের হলেও বন্ধুকে একটু আলাদা করে মূল্যায়ন করতেই বন্ধু দিবস। বন্ধুর জন্য সবচেয়ে বেশি কিছু করতে পারা হলো শুধু বন্ধু হয়ে থাকা। তাকে দেয়ার মত কোনো সম্পদ নেই। সে জানুক আমি তাকে ভালবেসেই সুখী। ভালোবাসা, নির্ভরতা, বিশ্বাস একজন বন্ধুর সবচেয়ে বড় উপহার। তবুও ভালোবাসার নিদর্শন কে না রাখতে চায়? সবাই চায় বন্ধুত্বের স্মৃতি ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে।

ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে বিশেষ দিনে প্রিয় বন্ধুকে পছন্দের বিশেষ কিছু উপহার দিতে পারেন। দিতে পারেন বন্ধুত্বের বিশেষ কার্ড। যে ফুল ভালোবাসে তাকে দিতে পারেন হরেকরকম ফুলের তোড়া। কিছু কিছু সময় বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড খুবই জনপ্রিয়। আর নারী বন্ধুদের ভিতর অনেকের পছন্দে থাকে পুতুল কিংবা শোপিস। বর্তমানে বন্ধুকে চকলেট দেয়ার রীতিটাই যেন বেশি।

এগুলো ছাড়াও কিন্তু আপনি ভিন্ন কিছু উপহার দিতে পারেন আপনার প্রিয় বন্ধুকে। হয়তো আপনার বন্ধুটি বইয়ের জগতে বিচরণ করতে পছন্দ করেন কিংবা বন্ধুর আগ্রহ রয়েছে বিভিন্ন ডিজাইনের টি-শার্টের। মনে রাখবেন, বন্ধু কী পছন্দ করেন সে অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন উপহার। বন্ধুর জন্য সবচেয়ে ভালো উপহার হলো বই। আর বন্ধু যদি হন বইপোঁকা, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। তবে এ ক্ষেত্রে জেনে নিন কী ধরনের বই তার পছন্দ। বইটি কিনে সুন্দর একটি মোড়কে জড়িয়ে বন্ধুকে উপহার দিন।

অনেক বন্ধু আছেন যাদের বাড়িতে বিভিন্ন আকৃতি, রং ও ছাপার নিত্য নতুন মগ শোভা পায়। তাদের জন্য বেছে নিন এই উপহারটি। এছাড়া ফটোফ্রেম, চাবির রিং, ভিন্ন ডিজাইনের পেনড্রাইভ, মানিব্যাগ, দু-একটি গাছের চারা, বন্ধুর লেখালেখির অভ্যাস থাকলে নোটবুক, আর টইটই করে ঘুরে বেড়ানো বন্ধুকে ব্যাকপ্যাক অথবা রোদচশমা, দিনক্ষণ ভোলাবাবুকে একটি টেবিল ক্যালেন্ডার ধরিয়ে দিন। সে জানবে আপনি তার উপকারই করছেন ও মেকআপের মতো নিত্য নতুন উপহার দিয়ে জয় করে নিতে পারেন আপনার প্রিয় বন্ধুর মন। মনে রাখবেন উপহারটি দেয়ার বেলায় বন্ধুর শখকে প্রাধান্য দেবেন, নিজের ইচ্ছে নয়।

ঘুরে আসুন দু’জনে
দিনটিকে প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে স্মরণীয় করে রাখতে একটু ভিন্ন ভাবে উদযাপন করতে পারেন। বন্ধুকে নিয়ে ঘুরে আসুন নিজেদের কোনো পছন্দের জায়গা থেকে। আর যে বন্ধুর জন্য এতো পরিকল্পনা, তাকে উপহার দিন নিজের কিছুটা সময়। এই উপহারটিই বন্ধুর কাছে হয়তো হয়ে যাবে সবচেয়ে মূল্যবান উপহার।

এসইউ/এইচআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।