২১ বছরের ফিলো যেভাবে আবিষ্কার করেন টেলিভিশন
বিশ্ব টেলিভিশন দিবস আজ। এক সময় বিনোদনের একমাত্র উপায় ছিল টিভি। প্রথমে সাদাকালো পরে রঙিন টিভি আধুনিক জীবনে দুর্দান্ত এক পরিবর্তন এনেছে। তবে আপনার মনে হতেই পারে টেলিভিশনের জন্য কেন একটি দিন হলো। কেন পালন করা হয় টেলিভিশন দিবস।
সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে বলে রাখি, আপনি কি জানেন এই আধুনিক টেলিভিশন তৈরি করেছিল ২১ বছরের এক যুবক। হ্যাঁ, ১৯২৭ সালে, ফিলো টেলর ফার্নসওয়ার্থ নামে ২১ বছর বয়সী একজন আবিষ্কারক বিশ্বের প্রথম ইলেকট্রনিক টেলিভিশন আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন বাড়িতে থাকতেন।
যখন হাই স্কুলে পড়েন তখন তিনি এমন একটি সিস্টেমের কথা ভাবতে শুরু করেন যা চলমান ছবি ধারণ করতে পারে, তাদের একটি কোডে পরিবর্তন করতে পারে এবং তারা সেই ছবিগুলোকে রেডিও তরঙ্গের সাহায্যে বিভিন্ন ডিভাইসে সরাতে পারে। তিনি যান্ত্রিক টেলিভিশন সিস্টেমের চেয়ে কয়েক বছর এগিয়ে ছিলেন কারণ তার কাঠামো ইলেকট্রনের মরীচি ব্যবহার করে চলমান চিত্রগুলো ধারণ করেছিল।
ফার্নসওয়ার্থ পরবর্তীতে তার টেলিভিশন ব্যবহার করে একটি ডলার চিহ্নের চিত্রটি বিখ্যাতভাবে প্রেরণ করেছিলেন যখন একজন সহযোগী উদ্ভাবক জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আমরা এই জিনিস থেকে কিছু ডলার কখন আয় করতে পারব তাই বলো? তাদের কেউই জানতেন না যে টেলিভিশন একটি আন্তর্জাতিক দিবসের প্রতীক হয়ে উঠবে যা বিশ্বব্যাপী তথ্যের বিস্তারকে প্রচার করবে।
তবে ফিলো ফার্নসওয়ার্থের আগে ১৯২৬ সালের এইদিনে বিজ্ঞানী জন লোগি বেয়ার্ড টেলিভিশন আবিষ্কার করেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক আয়োজিত এক ফোরামে ২১ নভেম্বরকে বিশ্ব টেলিভিশন দিবস হিসেবে পালনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
টেলিভিশন শব্দটি গ্রিক ও লাতিন শব্দের সংমিশ্রণে তৈরি একটি শব্দ। গ্রিক শব্দ অর্থ দূরত্ব, আর লাতিন শব্দ অর্থ দেখা। ১৮৭৩ সালে বিজ্ঞানী স্মিথ ইলেকট্রনিক সিগন্যালের মাধ্যমে ছবি পাঠানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এরপর ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জন লোগি বেয়ার্ড ১৯২৬ সালে প্রথম টেলিভিশন আবিষ্কার করেন এবং সাদাকালো ছবি বৈদ্যুতিক সম্প্রচারের মাধ্যমে দূরে পাঠাতে সক্ষম হন। এরপর এক রুশ ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার আইজাক শোয়েনবাগের্র কৃতিত্বে ১৯৩৬ সালে প্রথম টিভি সম্প্রচার শুরু করে বিবিসি।
টেলিভিশন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চালু হয় ১৯৪০ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর টেলিভিশনের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সূচিত হয় এবং টেলিভিশন গণমাধ্যম হিসেবে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করে। টেলিভিশন আবিষ্কারের পর থেকে এখন পর্যন্ত নানান পরিবর্তন এসেছে। সাদাকালো থেকে রঙিন, এলসিডি থেকে এলইডি, যেখান থেকে এখন স্মার্ট টিভি। তবে এখন টিভির জায়গা নিয়ে নিয়েছে স্মার্টফোন, ট্যাবসহ অন্যান্য ডিভাইস। তবে জনপ্রিয়তা একেবারে ক্ষুণ্ণ হয়নি টেলিভিশনের। এখনো ড্রয়িং রুমে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন আকারের টিভি।
সূত্র: হিস্টোরি ডটকম
কেএসকে/জেআইএম