বিশ্বে আদিবাসীর সংখ্যা ৫০ কোটি

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ০৯ আগস্ট ২০২৪

আজ ৯ আগস্ট, আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে দিবসটি। এই দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অধিকারবঞ্চিত আদিবাসীরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নামবেন।

দিবসটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য হলো আদিবাসীদের জীবনধারা, মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার, আদিবাসী জাতিসমূহের ভাষা ও সংস্কৃতি তথা আত্ম-নিয়ন্ত্রণাধিকার সম্পর্কে সংখ্যাগরিষ্ঠ অ-আদিবাসী জনগণ ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করে তোলা।

বিশ্বের ৯০টি দেশে ৩৭ থেকে ৫০ কোটি আদিবাসী বাস করে। আমাদের দেশেও এই সংখ্যা নেহাত কম নয়। বাংলাদেশে এই সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন, যা দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর ০.৯৯ বা প্রায় এক শতাংশের মতো। আমাদের দেশের সংবিধান অনুযায়ী ‘আদিবাসী’ শব্দের বদলে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা নৃগোষ্ঠী শব্দ ব্যবহার করা হয়।

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী হলো চাকমা। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে রয়েছে গারো, মারমা, ম্রো, খেয়াং, চাক, বম, লুসাই, পাংখোয়া, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, মনিপুরী ইত্যাদি। এছাড়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, নওগাঁ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ইত্যাদি জেলাগুলিতে সাঁওতাল, শিং (গঞ্জু), ওঁরাও, মুন্ডারি, বেদিয়া মাহাতো, রাজোয়ার, কর্মকার, তেলী,তুরী, ভুইমালী, কোল, কড়া, রাজবংশী, মাল পাহাড়িয়া, মাহালী ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠি বসবাস করছে।

আরও পড়ুন

এই সম্প্রদায়গুলোর নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং শাসন ব্যবস্থার নিজস্ব আইন রয়েছে। কোনো কোনো সম্প্রদায় মাতৃতান্ত্রিক আবার কোনোটা পিতৃতান্ত্রিক। একেক সম্প্রদায়ের ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস সম্পূর্ণ আলাদা। এমনকি খাদ্যাভ্যাসেও আছে অনেক পার্থক্য। এর মূল কারণ হচ্ছে এদের আদিনিবাস সবার এক না।

এত বড় একটি সংখ্যা থাকার পরও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা আদিবাসীরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এটি শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বের সব দেশের চিত্রই এমন। তবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের অধিকার আদায়ের জন্য ১৯৯৫ সালে প্রথম এই দিবসটি পালিত হয়।

১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্ব আদিবাসী দিবসটি পালনে ৪৯/২১৪ বিধিমালায় স্বীকৃতি পায়। আর্ন্তজাতিক দিবসটি বিশ্বের ৯০টি দেশে ৩৭০ বিলিয়ন আদিবাসীরা প্রতিবছর ৯ আগস্ট উদ্যাপন করে থাকেন।

এর আগে জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৯৩ সালকে আদিবাসীবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী আদিবাসী জনগণ তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার, অঞ্চল বা টেরিটরির অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবিতে দিবসটি পালিত হয়। কানাডার অস্ট্রেলিয়ায় ৫২টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠি(আমাটা, বামাগা, কয়েন প্রভৃতি) বা আদিবাসী বসবাস করছে। আমেরিকায় ক্রো জাতি, আর্জেন্টিনায় কাসি জাতি।

তবে জাতিসংঘ মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা সম্পর্কিত উপ-কমিশনের আদিবাসী জনসংখ্যার উপর জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে আদিবাসীদের নিয়ে প্রথম বৈঠক করে ১৯৮২ সালে। জাতিসংঘ ২০০৫ থেকে ২০১৫ সালকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য ‘কর্ম ও মর্যাদার দশক’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

এছাড়া ২ হাজার টিরও বেশি আদিবাসী ভাষা বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে ২০১৬ সালে একটি প্রতিবেদনের পর জাতিসংঘ সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ২০১৯ কে আন্তর্জাতিক আদিবাসী ভাষার বছর হিসেবে ঘোষণা করে।

আরও পড়ুন

কেএসকে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।