ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ
বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম সম্পদ পুতুল নাচ। পুতুল নাচ এক ধরনের লোকশিল্প, যা বহু যুগ আগে থেকে মানুষের বিনোদন ও শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি আমাদের দেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ।
একসময় পুতুল নাচের সংস্কৃতি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সমৃদ্ধ করেছিল দেশে-বিদেশে। কিন্তু উন্নত বিশ্বের কাছে পুতুল নাচের জৌলুস প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই ঐতিহ্যের চিত্র আবারো ফুটে উঠেছে সর্বত্র।
প্রাণবন্ত পুতুল এবং এর কার্যকলাপ পুতুল নাচের মূল আকর্ষণ। কাঠ, কাপড়, এবং রঙের মিশেলে তৈরি এই পুতুলগুলো নানা রকম চরিত্রে মঞ্চে হাজির হয়। তাদের নাচ, গান এবং অভিনয়ের মাধ্যমে জীবনের নানা দিক ফুটিয়ে তোলে। পুতুল নাচের কাহিনিগুলো সাধারণত লোককথা, রূপকথা এবং সামাজিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে বানানো। তারপর বাঙালির পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসব ও বিভিন্ন গ্রাম্য মেলায় তা প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর সংগীত এবং নৃত্য। লোক সংগীতের তালে তালে পুতুলগুলোর সুনিপুণ নৃত্য পরিবেশন দর্শকদের আকৃষ্ট করে। এই নাচের সুর, তাল এবং নিখুঁত সামঞ্জস্যতা দেখতে প্রাণবন্ত এবং ভীষণ উপভোগ্য লাগে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে এর সংরক্ষণ ভীষণ জরুরি। কেউ কেউ করছেন নানা চেষ্টা। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মেলা, স্কুল এবং কমিউনিটি প্রোগ্রামে পুতুল নাচ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সমাজের সব স্তরের মানুষের সহযোগিতায় এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পটি টিকে থাকবে এবং অতীতের সঙ্গে বর্তমানের সেতুবন্ধন তৈরি করবে সেটি কাম্য।
কারণ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচ শুধু বিনোদন নয়, এটি একটি শিক্ষামূলক মাধ্যমও বটে। সমাজের নানা অসঙ্গতি, নৈতিকতা এবং মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে এই শিল্পটির জুড়ি মেলা ভার।
আরও পড়ুন
কেএসকে/এমএস