আভিজাত্যের প্রতীক ‘কাচারি ঘর’ এখন বিলুপ্তির পথে

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৪ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

নিয়ামুর রশিদ শিহাব

কাচারি ঘর! এক সময়ের গ্রাম-বাংলার আভিজাত্যের প্রতীক। মেহমানখানা ও মক্তব হিসেবে ব্যবহৃত ঘরটি ছিল অন্যরকম সৌন্দর্য। আধুনিকতা ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বা আভিজাত্যের সঙ্গে সম্পর্কিত কাচারি ঘর এখন বিলুপ্তির পথে। গ্রাম-গঞ্জের হাতেগোনা দু’একটা বাড়িতে কাচারি ঘরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। তবে তা পড়ে আছে জরাজীর্ণ অবস্থায়।

বাঙালি ও ধর্মীয় নানা সংস্কৃতির সঙ্গে এই কাচারি ঘর অনেকাংশে জড়িত। পূর্বপুরুষরা কাচারি ঘরে সালিশ-বৈঠক, গল্প-আড্ডায় বসতেন। এ ঘরেই রাতযাপন করতেন বেড়াতে আসা অতিথি অথবা পথচারী বা মুসাফির। অনেক সময় জায়গীর বা লজিং মাস্টারও এ ঘরে থাকতেন। যে কারণে সেসময় রাতের বেলা বাড়িতে চুরি-ডাকাতিও কম হতো। কাচারিতে বাড়ির স্কুল-কলেজগামী ছেলেরা পড়াশোনা করতো। দিনের বেলা কাজের শ্রমিকরা ক্লান্তি দূর করতে বিশ্রাম নিতো এই কাচারি ঘরে।

আরও পড়ুন

ঈশা খাঁর আমলে কর্মচারীরা বাড়ির দরজায় অবস্থিত কাচারি ঘরে বসে খাজনা আদায় করতেন। যখন দেশে জমিদারি প্রথা চালু ছিল; তখনো গ্রামের প্রভাবশালী মোড়লদের বাড়ির কাচারিতে বসে খাজনা আদায় করা হতো। সালিশ-বিচারসহ গ্রামের সব সামাজিক কাজগুলো পরিচালিত হতো কাচারি ঘর থেকেই।

জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পরও এদেশে প্রায় বাড়িতেই কাচারি ঘরের প্রচলন ছিল। এখন আর কাচারি ঘরে নেই শিক্ষার্থীদের চিরচেনা পড়ার আওয়াজ, বাড়ির মুরুব্বিদের দরাজ গলায় পবিত্র কোরআন পাঠের সুর, অতিথিদের নিয়ে গল্প-আড্ডার আসর অথবা রাতের বেলা পুঁথিপাঠ, জারি-সারি গান গাওয়া ও লুডু খেলার আসর। বাড়ির পূর্ব-পুরুষদের নানা স্মৃতি-বিজড়িত এ কাচারি ঘর সত্যিই প্রাচীনকালের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। তবে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সেই কাচারি ঘর।

লেখক: ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ার ও লেখক।

আরও পড়ুন

কেএসকে/এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।