সুনসান সন্ধ্যায় সম্প্রীতির ইফতার

মামুনূর রহমান হৃদয়
মামুনূর রহমান হৃদয় মামুনূর রহমান হৃদয় , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ১২:১৬ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২৪

যে মাঠে ছিল ব্যাট আর বলের রাজত্ব; সে মাঠেই রমজান মাসে ভিন্ন আমেজ। সারিবদ্ধ কিংবা গোল হয়ে পত্রিকার ছেঁড়া অংশ বিছিয়ে সবাই নিচ্ছেন ইফতারের প্রস্তুতি। বলছিলাম রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের কথা। সুনসান সন্ধ্যাবেলার ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। চোখে-মুখে একত্রে ইফতার করার অপেক্ষা।

বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী সারিবদ্ধভাবে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বসেছেন। দায়িত্ব নিয়ে কেউ শরবত বানাতে ব্যস্ত; কেউ হিসেব করছেন কতটুকু ছোলা-মুড়ি মাখাবেন। সবার সামনে সাজানো হয় নানা স্বাদের ইফতারি। গ্লাসে গ্লাসে শরবত, প্লেটে মুড়ি, ছোলা, চপ, বেগুনি, জিলাপি, ফলসহ নানা কিছু। ক্লাসের ব্যস্ততা ও পরীক্ষার চাপে দূর-দূরান্ত থেকে এসে হোস্টেল বা মেসে থাকায় সহপাঠীদের সঙ্গে ইফতার পূরণ করে দেয় পরিবারের শূন্যতা।

শুধু যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকে এমনটি নয়। রমজান এলেই ক্যাম্পাসে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল, জেলা কিংবা বিভাগভিত্তিক ছাত্র সংগঠন। এ ছাড়া দেখা যায় কাছের বন্ধুদের নিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলের আয়োজন। এ প্রিয়জনরাই তাদের চার-পাঁচ বছরের শিক্ষাজীবনের নিত্যদিনের সঙ্গী।

সুনসান সন্ধ্যায় সম্প্রীতির ইফতার

আরও পড়ুন

কারো কারো দলে থাকে ভিন্ন ধর্মের মানুষও। তবে ইফতারে অংশ নিয়ে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান মিলেমিশে তৈরি হয় সৌহার্দের বন্ধন। নেই কোনো ভেদাভেদ, শ্রেণিবৈষম্য। সন্ধ্যাটা যেন আরও সুন্দর হয়ে ওঠে মৈত্রী দেখে। এ আমেজ থেকে বাদ যায় না ঘুরতে আসা সাবেক শিক্ষার্থী কিংবা ক্যাম্পাসে বিকেলে আটকে পড়া কর্মচারীরাও। সবাই মিলে পরিবারের শূন্যতা পূরণ করেন দ্বিতীয় পরিবারের সঙ্গে।

সুনসান সন্ধ্যায় সম্প্রীতির ইফতার

বেলা শেষে চিরচেনা সেই আজানের মধুর ধ্বনি। ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে ইফতার বিনিময়। তারপর নামাজের জন্য ছুটে যাওয়া। নামাজ শেষে পুরোপুরি আঁধার ঘনিয়ে এলে আবার সেই পিনপতন নীরবতা। দিনের আলোয় এ নীরবতা ভেঙে ব্যস্ততা আবারও ফিরবে। তবে সন্ধ্যায় মুগ্ধতার স্মৃতি থেকে যাবে সবার মনে।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।