যে গ্রামে সব শিশুরই যমজ আছে
যমজ শিশুদের নিয়ে আমাদের মধ্যে সব সময় এক ধরনের কৌতূহল কাজ করে। বিশ্বে বর্তমানে যমজ শিশুর জন্মের হার অনেক বেশি। সম্প্রতি প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান বলছে, যমজ সন্তান জন্মের হার আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে গেছে। ১৯৮০ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত এই বৃদ্ধির হার ৭৬ শতাংশ।
১৯৮০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সদ্যভূমিষ্ঠ প্রতি ৫৩ শিশুর মধ্যে একজন যমজ হত। ২০০৯ সালের হিসেবে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি ৩০ জনে একজন। তবে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে এমন একটি গ্রাম রয়েছে যেখানে অদ্ভুতভাবে সব শিশুই যমজ জন্মগ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: সুন্দরীদের চড়-থাপ্পড় খেতে হয় যে রেস্তোরাঁয়
এমনই এক রহস্য কেরলের মালাপ্পুরম জেলার কোদিনহি অদ্ভুত একটি গ্রাম। রাস্তাঘাটে, খেলার মাঠে, স্কুলে বা অফিসে সর্বত্র দেখতে পাবেন যমজদের। জেলা সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে প্রায় বিচ্ছিন্ন এক গ্রাম কোদিনহি। গ্রামের তিন পাশেই পানি। মাত্র একদিকে ভূমি, যেখান দিয়ে নিকটবর্তী তিরুরাঙ্গাদি শহরের সঙ্গে গ্রামের মানুষের যোগাযোগ।
এই গ্রামে সবমিলিয়ে দুই হাজারের কিছু বেশি পরিবারের বসবাস, জনসংখ্যার মোট হিসেবে ১১ হাজারের মতো, যাদের ৮৫ ভাগই মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত। গ্রামের অবাক করা তথ্য হল, মাত্র দুই হাজার পরিবারের মধ্যে যমজের সংখ্যা ৪৫০ জোড়া! কোদিনহি গ্রামে যমজ সন্তান জন্মের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০-৭০ বছর আগে থেকে।
তবে আগে এই গ্রামে যমজ সন্তান জন্মের হার স্বাভাবিকই ছিল। বর্তমানে এই গ্রামে যমজ সন্তান জন্মের হার আগের চেয়েও বেড়েছে। ভারতে জাতীয়ভাবে যমজ সন্তান জন্মের গড় হার প্রতি হাজারে মাত্র ৪ জন, সারা পৃথিবীতে যা প্রতি হাজারে ৬ জন। কিন্তু কোদিনহি গ্রামে প্রতি হাজারে প্রায় ৪৫ জন যমজ সন্তানের জন্ম হয়ে থাকে, যা বৈশ্বিক গড়ের আট গুণের কাছাকাছি।
আরও পড়ুন: যে দেশে দেওয়া হয় কুকুরের নাগরিকত্ব
২০০৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, এই গ্রামে জন্ম নিয়েছিল ২৬৪ যমজ শিশু, সংখ্যাটা বেড়ে এখন ৪৫০-এ দাঁড়িয়েছে। সারা বিশ্বে যমজ সন্তান প্রসবের যে হার, কেরালার এই গ্রামে সে হার প্রায় ছয় গুণ বেশি। যমজের জন্মের এই আশ্চর্য ঘটনা বিশ্বে কেবল কোদিনহিতে নয়, আরও দু’টি গ্রামেও ঘটে। নাইজেরিয়ার ইগবো ওরা এবং ব্রাজিলের ক্যানডিডো গডোই নামের গ্রামে। এই দু’টি গ্রামের যমজ সন্তান জন্মের ব্যাখা অবশ্য পাওয়া গিয়েছে।
তবে একবিংশ যুগে এসেও বিজ্ঞানীরা সঠিকভাবে কোদিনহির ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না। কোদিনহি গ্রামের যমজ সন্তানের কথা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে জেনেটিক বিশেষজ্ঞরা এর রহস্য উদঘাটনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু এখনো সেই রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়নি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
কেএসকে/জেআইএম