সং যুগের কন্যা

শান্তা মারিয়া
শান্তা মারিয়া শান্তা মারিয়া , কবি ও সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০২৩

ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন এক নারী । নাম তার চেন সিইয়ুয়ে। তিনি একজন ভ্লগার।

চীনের একটি ঝকঝকে আধুনিক শহর হাংচৌ । এই শহরের একটি ঐতিহাসিক পর্যটন স্থান ওয়েস্ট লেক। এই ওয়েস্ট লেকের তীরে হাঁটা পথ ধরে এগিয়ে যেতে দেখা যায় এক তরুণীকে। পরণে তার সং রাজবংশের (৯৬০-১২৭৯ সাল) যুগের পোশাক ঐতিহ্যবাহী হানফু। পিঠে একটি ফুলের ঝুড়ি। হাতে সৌখিন চীনা পাখা। কখনও হাতে থাকে কারুকাজ করা বাঁশের ছাতা। পথিকদের হাতে সে কখনও তুলে দেয় পদ্মফুলের কলি। কখনও শিশুদের শোনায় প্রাচীনযুগের চীনা কবিতা।

তার কাছাকাছি চোখে পড়ে এক তরুণকে। তার পরনে থাং রাজবংশের( ৬১৮-৯০৭ খ্রিস্টাব্দ) সময়কার পোশাক। তার কাঁধে রয়েছে পদ্মফুলে বোঝাই ঝুড়ি। সে যেন প্রাচীন চীনের এক ফুল বিক্রেতা।

সং যুগের কন্যার গেটআপে যাকে দেখা যায় তিনি হলেন ২২ বছর বয়সী চেন সিইয়ুয়ে। পুরো পরিকল্পনাটা তারই। তিনি একজন ভ্লগার। সিনা ওয়েইবোতে তার অ্যাকাউন্ট থেকে বিনীতিভাবে তিনি ব্যাখ্যা করেন তার এমন সাজপোশাকের উদ্দেশ্য।

পথচলতি অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে কারা এরা? তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেও আগ্রহের কমতি নেই কারও। সং যুগের কন্যার গেটআপে যাকে দেখা যায় তিনি হলেন ২২ বছর বয়সী চেন সিইয়ুয়ে। পুরো পরিকল্পনাটা তারই। তিনি একজন ভ্লগার। সিনা ওয়েইবোতে তার অ্যাকাউন্ট থেকে বিনীতিভাবে তিনি ব্যাখ্যা করেন তার এমন সাজপোশাকের উদ্দেশ্য।

সং যুগের কন্যা

চেন ইতিহাসের ভক্ত। তিনি প্রাচীন চীনের ঐতিহ্য ও চিরায়ত চীনা সাহিত্যকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করতে চান। তিনি একজন হানফু ভক্ত। চেনের জন্ম চিয়ানসু প্রদেশের চুরোং শহরে। ছোটবেলায় অ্যানিমেটেড মুভি সিরিজ ছিনশি মিংইয়ুয়ে বা দ্য লিজেন্ড অব ছিন দেখে চীনা ইতিহাসের প্রেমে পড়েন তিনি। তার ইচ্ছা হয় এমন কোনো শিল্পকর্ম তৈরি করবেন যা ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত।

২০১৮ সালে চেন হাংচৌতে আসেন এবং চায়না একাডেমি অব আর্টস বিষয়ে লেখাপড়া করেন। সাংস্কৃতিক নিদর্শন সংরক্ষণ ও পুনর্গঠন বিষয়ে পড়েন তিনি।

সং যুগের কন্যা

আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্টাডির সময়ে তিনি পোর্সেলিনের শিল্প মেরামত করতে শেখেন এবং বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে জানেন।
হাংচৌতে তিনি লক্ষ্য করেন অনেক নারী হানফু পরেন। এটা তার খুব ভালো লাগে। হানফু শুধু একটি সুন্দর পোশাক নয় বরং এর সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে।

গ্র্যাজুয়েশনের সময়ে তার বিশেষ প্রজেক্ট ছিল সং রাজবংশের সময় নারীদের পরিধেয় হানফুর বিবর্তন বিষয়ে ভিডিও । এটা করতে গিয়ে তার ছয়মাস সময় লাগে এবং এক লাখ ইউয়ানের মতো ব্যয় হয়।

চেন বলেন, আমার কাছে মনে হয় সং রাজবংশের সময়ে যে হানফু পরা হতো সেটি বর্তমান কালের জন্যও বেশ উপযোগী। 

সং যুগের কন্যা

গ্র্যাজুয়েশনের পর তিনি ফুলটাইম ভ্লগার হন। পার্টটাইম চাকরি হলো হানফু মডেল ও শিল্প নির্দেশক হিসেবে।

বর্তমান প্রজন্মকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সচেতন করতে হানফু পরে হাংচৌর ঐতিহাসিক স্থানে ঘুরে বেড়ানোর চিন্তা করেন চেন। এই কাজে তিনি সঙ্গে নেন তার বন্ধু সাই চিয়ালে এবং আরও কয়েকজন বন্ধুবান্ধবকে।

এইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।