বিশ্বের যেসব স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৫৬ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২৩

স্মার্টফোন ছাড়া এক মুহূর্তও কাটে না অনেকের। সারাক্ষণ কোনো না কোনো বাহানায় চলছে স্মার্টফোন স্ক্রলিং। কখনো সোশ্যাল মিডিয়া কখনো আবার নাটক সিনেমা দেখা, ভিডিও গেমস, বই পড়া, বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাটিং, সেই সঙ্গে একটু পর পর বিভিন্নভাবে ছবি তোলা চলছে স্মার্টফোনে।

কিন্তু যদি এমন হয় যে, এমন স্থানে ঘুরতে গেলেন যেখানে ফোন ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ। লুকিয়েও ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে ধরা পড়লে হবে জেল জরিমানা। জেনে নেওয়া যাক সেসব স্থান সম্পর্কে-

গ্রিন ব্যাংক, আমেরিকা
আমেরিকার ছোট্ট একটি শহর হচ্ছে গ্রিন ব্যাংক। যেখানে চারদিকে সবুজের চাদরে মোড়া। দেখলে মনে হতে পারে প্রকৃতি যেন তার অপার সৌন্দর্য মেলে ধরে আছে আপনার জন্য। তবে জানেন কি? এই শহরে ফোন ব্যবহার করা বেআইনি। এমনি এখানে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহারেরও অনুমতি নেই। সুন্দর জঙ্গলে ঘেরা এই শহরটি গবেষকদের জন্য একটি দারুণ জায়গা। এখানে মূলত মহাবিশ্বের প্রান্তে বিস্ফোরিত ছায়াপথ নিয়ে গবেষকরা গবেষণা করেন। এসব ছায়াপথের দ্বারা নির্গত আওয়াজ এতটাই ক্ষীণ, এটি একটি ওয়াটের এক মিলিয়ন ভাগের এক বিলিয়ন ভাগের এক বিলিয়ন ভাগের কাছাকাছি। এসময় যদি এখানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয় তখন প্রায় তিন ওয়াট শব্দ নির্গত হয়। ফলে বিজ্ঞানীরা ঠিকভাবে ছায়াপথের শব্দ শুনতে পান না। যে কারণে এই শহরে ওয়াই-ফাইও, ফোন, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিষিদ্ধ।

বিশ্বের যেসব স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

ইয়ালা জাতীয় উদ্যান, শ্রীলঙ্কা
কখনো যদি শ্রীলঙ্কার এই বিখ্যাত জাতীয় উদ্যানে যান তাহলে ভুলেও ফোন বের করে প্রাণীদের ছবি তুলতে যাবেন না। এখানে বন্যপ্রাণীদের রক্ষার জন্য ২০১৫ সাল থেকে মোবাইল ফোন বহন বা ব্যবহার নিষিদ্ধ রয়েছে কর্তৃপক্ষ। গাইডরা বন্যপ্রাণীদের দেখার এবং ছবি তোলার জন্য সারাক্ষণ ফোন ব্যবহার করছিলেন। যে কারণে প্রাণীগুলো বিরক্ত হচ্ছিল। তারপর থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: হিংস্র প্রাণীকে বিয়ে করেছেন যারা

এলিট আইল্যান্ড রিসর্ট, ক্যারিবিয়ান বিচ
২০১২ সালে ক্যারিবিয়ান বিচের এলিট আইল্যান্ড রিসর্টে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ নীতি চালু করা হয়। এখানকার সব সৈকতে নিষেধাজ্ঞা লেখা সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে। এবং চেক-ইন করার সময় এই নীতিগুলো সম্পর্কে পর্যটকদের অবহিত করা হয়। মূলত পর্যটকরা এখানে যেন তাদের পুরো সময়টা রিল্যাক্স করতে পারে। সমুদ্রের কাছাকাছি থেকে উপভোগ করতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। ঘুরতে এসে ফোনে ব্যস্ত থেকে সমুদ্রের আসল সৌন্দর্যই উপভোগ করতে পারেন না বেশিরভাগ মানুষ।

সিস্টাইন চ্যাপেল, ইতালি
সিস্টাইন চ্যাপেল হলো ইতালির এক বিখ্যাত উপসনালয়। পবিত্র উপাসনালয় হওয়ায় সিস্টাইন চ্যাপেলের ভেতরে কেউ ফোন নিয়ে যেতে পারেন না। এই গ্র্যান্ড চ্যাপেলে গেলে তার ছাদের অবিশ্বাস্য শিল্পকর্ম দেখতে দেখে মুগ্ধ হবেন।

বিশ্বের যেসব স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

তামিলনাড়ুর মন্দির
দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর মন্দিরগুলোতে ফোন ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে, তামিলনাড়ু সরকার মন্দিরগুলোর শুদ্ধতা এবং পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য রাজ্যের সব মন্দিরে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল। মাদুরাইয়ের মীনাক্ষি আম্মান মন্দির, গুরুভায়ুর শ্রী কৃষ্ণ মন্দির এবং শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের ভেতর ফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

অক্ষরধাম মন্দির, দিল্লি
নিরাপত্তার কারণে পর্যটকরা তাদের ফোন অক্ষরধাম মন্দির চত্বরে নিয়ে যেতে পারবেন না। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই মন্দির দর্শনের সেরা জায়গা বলে মনে করা হয়। তবে এখানে শুধু দর্শনার্থীরা চোখের দেখা দেখতে পারবেন মন্দিরের সৌন্দর্য। ক্যামেরা বন্দি করার কোনো সুযোগ নেই এখানে।

বিশ্বের যেসব স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

রাম জন্মভূমি কমপ্লেক্স, অযোধ্যা
উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যার রাম জন্মভূমি কমপ্লেক্সের সম্পূর্ণ এলাকায় মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু মোবাইল ফোনই নয়, ক্যামেরা, ঘড়ি, বেল্ট এবং যে কোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেটও এখানে ব্যবহার করা যায় না।

আমস্টারডাম
২০১৫ সাল থেকে আমস্টারডামের রিজক্স মিউজিয়ামের অভ্যন্তরে ফোনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিখ্যাত জাদুঘরটিতে কোনো দর্শনার্থী স্মার্টফোন তো দূরের কথা ক্যামেরা নিয়েও প্রবেশ করতে পারবেন না। এর পরিবর্তে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ তাদের কাগজে আর্টওয়ার্ক স্কেচ করতে উৎসাহিত করে। তারা বিনামূল্যে দর্শনার্থীদের পেন্সিল এবং কাগজ প্রদান করে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

কেএসকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।