২২ বছর ধরে গোসল করেন না তিনি

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৫ পিএম, ০২ আগস্ট ২০২২

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে গোসলের বিকল্প কমই আছে। তবে সেই গোসলেই অনেকের অনীহা আছে। শীতকালে এই ঘটনা স্বাভাবিক হলেও গ্রীষ্মের তপ্ত গরমেও অনেকে গোসল করতে যান না। তবে এ যুগেই নয়, মধ্যযুগে ইউরোপীয়রা গোসলই করতেন না। এমনকি জামা কাপড়ও কখনো ধুতেন না তারা। শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে ব্যবহার করতেন নানা ধরনের সুগন্ধি।

ইউরোপীয়দের মনে ধারণা ছিল, গোসল করলে রোমকূপের মধ্যে দিয়ে দেহে রোগ-জীবাণু প্রবেশ করে এবং সেই কারণে তারা গোসল করতেন না। স্পেনের রানি ইসাবেল জীবনে মাত্র দুইবার গোসল করেন। যেদিন তার জন্ম হয় এবং দ্বিতীয় ও শেষবার তার বিয়ের দিন।

১৭০০ সালে লন্ডনের এক ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জেন। ছোটবেলায় সবার খুব আদর আর আহ্লাদে বড় হয়েছেন তিনি। ঠান্ডা লেগে যেতে পারে এই ভয়ে জেনের মা কখনো তাকে গোসল করাতেন না। এভাবেই জেন বড় হতে থাকেন। ১১৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তার জীবদ্দশায় তিনি কখনো গোসল করেননি।

আমু হাজি নামের ওই ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তি ৬৭ বছর গোসল করেননি। গোসল করা তার খুবই অপছন্দ। তিনি পচা মাংস ভালোবাসেন, বিশেষ করে শজারুর। আর ধূমপানের পাইপে তিনি তামাকের পরিবর্তে রাখেন প্রাণীর মলমূত্র।

এবার জানা গেল, বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার বৈকুন্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা ২২ বছর ধরে গোসল করেননি। এত বছরে শরীরে এক ফোঁটাও পানি স্পর্শ করাননি তিনি। এমনকি স্ত্রী এবং পুত্রের মৃত্যুতেও কঠোর প্রতিজ্ঞা থেকে এক চুলও সরেননি তিনি।

ধর্মদেব রাম পশ্চিমবঙ্গের জগদ্দলে একটি কারখানায় কাজ করতেন। ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন। তারপর দিব্যি স্বাভাবিকই ছিল সব। কিন্তু ১৯৮৭ সালে হঠাৎই তিনি উপলব্ধি করেন, জমি সংক্রান্ত বিবাদ, নারীদের উপর হিংসার ঘটনা এবং নিরীহ পশুদের হত্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এর উত্তর খুঁজতে তিনি একজন গুরুর শরণাপন্ন হন। সেই গুরু ধর্মদেবকে তার শিষ্য বানিয়ে নেন। তিনি তাকে গোসল করতে নিষেধ করেছিলেন।

২০০০ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে দেশের বাড়িতে ফিরে আসেন ধর্মদেব। ধ্যানে মগ্ন থাকেন। কিন্তু আর্থিক অভাবের জন্য আবার কাজে ফিরতে বাধ্য হন। তবে কারখানার মালিক যখন জানতে পারেন, তিনি খাবার এবং গোসল ত্যাগ করেছেন, তখন তাকে চাকরি থেকে বের করে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে যাওয়া হয়।

২০০৩ সালে মারা যান তার স্ত্রী। তখনও তিনি জল স্পর্শ করেননি। এরপর মারা যায় তার ছেলে। তাতেও সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি ধর্মদেবের। শেষ সন্তান মারা যায় গত ৭ জুলাই। তারপরেও নিজের প্রতিজ্ঞায় অনড় ধর্মদেব। তবে এত বছর স্নান না করলেও তার জন্য কোনো শারীরিক সমস্যা হয়নি তার।

সূত্র: টাইমস নাও

কেএসকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।