কাঠের আসবাবে নকশায় মাসে লাখ টাকা আয় গৃহিণীর
দীপিকা ভেলমুরাগান তামিলনাড়ুর এক সাধারণ গৃহিণী। ছোট থেকেই আঁকাআঁকি তার নেশা। সেই নেশাই যে একদিন পেশায় পরিণত হবে ভাবতেই পারেননি কখনো। নকশা এঁকে মাসে আয় করছেন প্রায় লাখ টাকা।
কাঠের তৈরি নানা গৃহসজ্জায় নকশা আঁকেন তিনি। এর শুরু পূজা কিংবা বিভিন্ন উৎসবে ঘরের দরজায় আলপনা দিয়ে। তার মায়ের কাছ থেকেই হাজারের বেশি আলপনার নকশা শিখেছেন। এমনটা করতেন শ্বশুরবাড়িতে এসেও।
তবে শুধু ঘরের দরজায় নয় কাঠের বিভিন্ন জিনিসের উপর নকশা করতে শুরু করেন। বসার টুল, পূজার আসন থেকে শুরু করে ওয়াল হ্যাংগিংয়ে নকশা করতেন। এসব ছবি যখন নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন তখন বেশ প্রশংসা পেতেন কাজের। এভাবে ধীরে ধীরে তিনি অন্যদের কাছ থেকে অর্ডার পেতে থাকেন।
সময়টা ২০১৯ সাল। বিন্দু, বিভিন্ন জ্যামিতিক রেখা, আকার ও রঙের সমন্বয় ব্যবহার করে তৈরি করেন জটিল সব নকশা। দীপিকা ঐতিহ্যবাহী কোলাম ডিজাইন বেশি প্রাধান্য দেন।
দীপিকা কোয়েম্বাটোর থেকে পোশাক ডিজাইনে স্নাতক শেষ করেন। এরপর তিরুপুরে টেক্সটাইল নির্মাতাদের জন্য পোশাক ডিজাইন করা শুরু করেন। ২০১০ সালে বিয়ে হয় তার। এরপর সব কাজ ছেড়ে সংসারে মন দেন তিনি। জন্ম নেয় দুই সন্তান। সন্তান লালন পালন ও সংসার সামলেই সময় কাটছিল দীপিকার।
এর ফাঁকে ফাঁকে নিজের ঘর সাজাতে বিভিন্ন বিবর্ণ আসবাবে রং করতে শুরু করেন। সেটি যে একদিন তার আয়ের উৎস হবে তা ভাবেননি দীপিকা। ইনস্টাগ্রামে একটি কাঠের দোলনার ছবি পোস্ট করেছিলেন প্রথম। যেটি ছিল সাদা কোলাম ডিজাইনে আঁকা। যা সবার পছন্দ হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত সে অনেক অর্ডার পেয়েছেন।
তিনি সাধারণ কাঠের দেয়ালের তাক থেকে শুরু করেছিলেন, এখন বিভিন্ন আকারের কোলাম পাড়ি (দেবতাদের মূর্তি ও প্রদীপ রাখার জন্য কাঠের ধাপ) তৈরি করেন, কাঠের ফলক, নামের বোর্ড, ওয়াল হ্যাংগিং ও কাঠের দরজার প্যানেলে নকশা আঁকেন। বর্তমানে দীপিকার ইনস্টাগ্রামে প্রায় ৩০ হাজার ফলোয়ার রয়েছে।
কাঠের উপর কোলাম আঁকার জন্য তিনি বেস কোটসহ অ্যাক্রিলিক পেইন্ট ব্যবহার করেন। এরপর উপরে পলিশের কোট ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, তিনি এত বছর ধরে কোলাম এঁকেছেন চালের আটা দিয়ে। এখন সেটার পরিবর্তে রং দিয়ে আঁকছেন। এটি তার জন্য খুব বেশি কষ্টের কাজ ছিল না। শুধু মাধ্যম বদলেছে। কৌশল, পরিমাপ ও অন্য সবকিছু একই থাকে।
সাজসজ্জার জিনিস তৈরি করতে মূলত আমের কাঠ, রাবার কাঠ, সেগুন কাঠ, নিম কাঠ ইত্যাদি ব্যবহার করেন দীপিকা। যার বেশিরভাগই গুণমান নিশ্চিত করার পরে স্থানীয় ডিলারদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। দীপিকা শুধু নিজের পছন্দের নকশাই করেন না, ক্রেতার অনুরোধে তার পণ্যগুলো কাস্টমাইজও করেন।
সূত্র: দ্য বেটার ইন্ডিয়া
কেএসকে/জেআইএম