৩২ কোটি আলোকবর্ষ দূরের ছায়াপথের ছবি তুললো যে টেলিস্কোপ

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৫৪ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২২

পৃথিবী থেকে কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের বিচিত্র সব ছবি আকৃষ্ট করে সবাইকে। আপনার জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে আগ্রহ থাকুক আর নাই বা থাকুক। মহাকাশের ছবি বিস্মিত করবে এক মুহূর্তে। মহাকাশের এসব চিত্তাকর্ষক দৃশ্য ফ্রেমবন্দি করার দুর্দান্ত এক টেলিস্কোপ হচ্ছে নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ।

হাবল স্পেস টেলিস্কোপের নাম জানেন না এমন বিজ্ঞানপ্রেমী খুঁজে পাওয়া মুশকিলই বটে। যারা জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে খানিকটা খোঁজ খবর রাখেন তারা নিশ্চয় হাবল টেলিস্কোপের কথা জানেন। এবার পৃথিবী ৩২ কোটি আলোকবর্ষ দূরে ঘটে যাওয়া অবিশ্বাস্য এক ঘটনার অবিশ্বাস্য ছবি তুলেছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। যেখানে পৃথিবী থেকে আলোর গতিতে গেলেও সেখানে পৌঁছাতে ৩২ কোটি বছর সময় লেগে যাবে।

মহাকর্ষীয়বলে ক্ষয়িষ্ণু দুটি ছায়াপথের (গ্যালাক্সি) এমন স্পষ্ট ত্রিমাত্রিক ছবি তুলেছে হাবল, যাতে ছায়াপথ দুটির নড়াচড়াও ধরা পড়েছে। ছায়াপথের একটি হলো স্মলার পোলার-রিং গ্যালাক্সি আইসি ১৫৫৯, দ্বিতীয়টি লার্জার স্পাইরাল গ্যালাক্সি এনজিসি ১৬৯। হ্যালটন আর্পের অ্যাটলাস অব পিকুইলার গ্যালাক্সিতে এ দুটি ছায়াপথকে একসঙ্গে এআরপি ২৮২ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

অ্যানড্রোমেডো নক্ষত্রপুঞ্জের একটি ঘটনার ছবি তুলেছে হাবল। মধ্যাকর্ষণশক্তির মাধ্যমে একটি ছায়াপথের সঙ্গে অন্য ছায়াপথের মিথস্ক্রিয়া হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে ত্রিমাত্রিক স্পেসের মধ্যে থেকে দুটি ছায়াপথের মিথস্ক্রিয়ার এমন পরিষ্কার ছবি তোলা কঠিন, যেখানে তাদের নড়াচড়াও দৃশ্যমান হয়।

কাকতালীয়ভাবে এআরপি ২৮২-এর ক্ষেত্রে এটা সম্ভব হয়েছে। সেসময় একেবারে ঠিকঠাক একটা অ্যাঙ্গেলে ছিল হাবল। আর সে কারণেই হাবলের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে নক্ষত্রগুলোর নড়াচড়া, একটি ছায়াপথ থেকে অন্য ছায়াপথের দিকে ধুলা ও গ্যাসের ছুটে চলা।

ছায়াপথ দুটি যদি অন্য কোনো অ্যাঙ্গেলে কাত হয়ে থাকত, তবে হয়তো এই টেলিস্কোপ কোনোদিনই এত পরিষ্কার ছবি তুলতে পারতো না, যেখানে এভাবে নক্ষত্রগুলোর এক ছায়াপথ থেকে অন্য ছায়াপথে ঢুকে পড়াটা ধরা পড়ে।

এছাড়া ছবিটা দৃশ্যমান আলোতেও তুলেছে হাবল। নাসা বলছে, আইসি ১৫৫৯ ও এনজিসি ১৬৯ দুটি ছায়াপথেরই সূর্যের চেয়ে অন্তত শতাধিক গুণ বড় একাধিক ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এছাড়াও অ্যাকটিভ গ্যালাকটির নিউক্লিই (এজিএন) রয়েছে। যা সম্পূর্ণ ইলেকট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালীতে প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত করে।

নাসার কর্মকর্তার একটি বিবৃতিতে লিখেছেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এখন মেনে নিচ্ছেন যে, একটি ছায়াপথের বিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সেই ছায়াপথটি অন্য কোনো ছায়াপথের সঙ্গে কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করছে।

একটি ছায়াপথ অন্য ছায়াপথে মিশে যেতে পারে, একটির সঙ্গে অন্যটির সংঘর্ষ হতে পারে। আবার একটি ছায়াপথ ঘেঁষে সেটিকে পার করেও চলে যেতে পারে অন্য একটি ছায়াপথ। এসব ঘটনার ওপর নির্ভর করে কেমন হবে ছায়াপথের গড়ন ও গঠন।

সূত্র: ওয়ার্ল্ড টুডে নিউজ

কেএসকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।