এক প্রাণির ১৩০৬টি পা!
সোনার খোঁজে অস্ট্রেলিয়ার খনিতে খনন কাজ চালাচ্ছিল একদল বিজ্ঞানী। এসময় তাদের নজরে আসে অন্য কিছু। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ তাদের। অদ্ভুত এক প্রাণির দেখা মেলে খনিতে। যার রয়েছে ১৩০৬টি পা!
অবিশ্বাস্য মনে হলেও বাস্তবে এমন প্রাণির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সোনার খোঁজে অনেক গভীর পর্যন্ত খনন কার্য চালানো হয়েছিল খনিতে। তখনই এমন আজব প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায়। এর আগে এত সংখ্যক পা-যুক্ত কোনো প্রাণী আবিষ্কার হয়নি।বিজ্ঞানীরাও এই আবিষ্কারকে বলছেন, ‘বিবর্তনের বিস্ময়’।
প্রাণিটির আকার-আকৃতি অনেকটা সুতার মতো ফ্যাকাশে রঙের এবং বহুপদ বিশিষ্ট। বিজ্ঞানীরা বলছেন এই প্রাণী কেঁচো প্রজাতির। তবে সাধারণ কেঁচোর পা থাকে ১০০ থেকে ২০০টি। এর থেকে একটু বেশি সংখ্যক পা থাকে সেন্টিপেডসদের। এদের ক্ষেত্রে ৩৮২টি পর্যন্ত পায়ের হদিশ পাওয়া গিয়েছে।
সেন্টিপেডসদের ক্ষেত্রে শরীরে একটি সেগমেন্ট ভাগে একজোড়া পা থাকে। আর মিলিপেডসদের ক্ষেত্রে এক একটি সেগমেন্টে থাকে দু’জোড়া পা। তবে এতো বেশি সংখ্যক পা-যুক্ত মিলিপেডস এর আগে খুঁজে পাননি বিজ্ঞানীরা। অদ্ভুত এই প্রাণিকে বলা হচ্ছে Eumillipes persephone। মাটির প্রায় ৬০০ মিটার গভীরতায় বেঁচে থাকতে পারে এরা।
যে মিলিপেডসের পায়ের সংখ্যা ১৩০৬টি সেই প্রাণীটি ৩-১/২ ইঞ্চি অর্থাৎ ৯৫ মিলিমিটার লম্বা এবং এক ইঞ্চির চারশ ভাগের একভাগ চওড়া, এক্ষেত্রে ০.৯৫ মিলিমিটার। এছাড়াও এই প্রাণীর গঠনে রয়েছে শঙ্কু আকৃতির মাথা, চঞ্চুর মতো মুখ এবং একটি লার্জ অ্যান্টেনা।
মিলিপেড কথার অর্থাৎ হাজার পা। অথচ এর আগে যত মিলিপেডসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে তাদের কারও ক্ষেত্রেই হাজার পা ছিল না। এর প্রথম ১৩০৬টি পা-যুক্ত কোনো প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই প্রাণীর চোখ নেই।
এই গবেষণার পুরোধা ছিলেন পল মারেক। অস্ট্রেলিয়ার ওই সোনার খনি থেকে মোট চারটি মিলিপেডস উদ্ধার হয়েছে। সবগুলোই উদ্ধার হয়েছে মৃত অবস্থায়। তার মধ্যে একটির ১৩০৬টি পা রয়েছে। বাকিগুলোর পায়ের সংখ্যা কম। চারটির মধ্যে দুটি পুরুষ এবং দুটি স্ত্রী প্রজাতির।
১৩০৬টি পা বিশিষ্ট প্রাণিটি ছিল স্ত্রী প্রজাতির। বাকি আরও একটি স্ত্রী প্রজাতির ক্ষেত্রে ৯৯৮টি পা লক্ষ্য করা গিয়েছে। বাকি দুই পুরুষ প্রাণির ৮১৮টি এবং ৭৭৮টি পা লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, পুরুষদের তুলনায় স্ত্রী প্রজাতির পায়ের সংখ্যা বেশি হয়।
সূত্র: সাইন্স এলার্ট/রয়টার্স
কেএসকে/এমএস