ইংরেজিতে এমএ পাস করেও চা বিক্রি করেন টুকটুকি

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২১

বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিলো কন্যা স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে শিক্ষকতা করবেন। যদিও তাদের প্রথম ইচ্ছা তথা কন্যাকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন, তবে পেশায় তাদের কন্যা বেছে নিয়েছেন চা ব্যবসা।

নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন! এমএ পাস করে কি কেউ চায়ের ব্যবসা করে? এমন ধারণাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেকারদের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন এক নারী।

বলছি কলকাতার বাসিন্দা টুকটুকি দাসের কথা। তার বাবা-মা সব সময় উপদেশ দিয়েছেন, যদি কঠোর পরিশ্রম ও পড়াশোনা করলে জীবনে সব প্রয়োজন মেটানো সম্ভব।

টুকটুকি বাবা-মায়ের কথা শুনে কঠোর অধ্যয়ন করেন। ইংরেজিতে এমএ সম্পন্ন করা স্বত্ত্বেও চাকরি নামক সোনার হরিণ মেলেনি তার।

jagonews24

টুকটুকি চাকরির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেও সফল হননি। তাই তিনি উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়া স্টেশনে একটি চায়ের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেন। দোকানের নাম রাখেন ‘এমএ ইংলিশ চা ওয়ালী’।

টুকটুকির পরিবার অতোটা স্বচ্ছল নয় যে, বসে বসে চাকরি খুঁজে দিন পার করবে সে। তার বাবা একজন ভ্যান চালক ও মায়ের একটি ছোট মুদির দোকান আছে। প্রথমে টুকটুকির বাবা তার চা বিক্রি করার পরিকল্পনায় অসন্তুষ্ট ছিলেন।

তবে টুকটুকি ইন্টারনেটে তার মতোই এক সাহসী নারীর সম্পর্কে নিউজ পড়েছিলেন। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েই চা ব্যবসায়ে নেমে পড়েন টুকটুকি।

টুকটুকি চায়ের দোকান খোলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোনো কাজই ছোট নয়। এ বিষয় মাথায় রেখেই আমি চায়ের দোকান খুলি। শুরুতে জায়গাটি খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। তবে ভাগ্যগুণে পেয়েছি।’

‘এখন আমি চা বিক্রি করছি। পাশাপাশি স্ন্যাকসও পাওয়া যায় এখানে। যেহেতু আমার এমএ ডিগ্রি আছে, তাই দোকানের নাম দিয়েছি ‘এমএ ইংলিশ চা ওয়ালী’।

jagonews24

বর্তমানে টুকটুকির চায়ের দোকানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন এই এমএ ইংলিশ চা ওয়ালী। চায়ের দোকান ছাড়াও টুকটুকি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলও চালান। তার ইউটিউবের অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

টুকটুকি এ বিষয়ে বলেন, ‘ভাইরাল হওয়ার পর থেকে অনেক মানুষ আমার সঙ্গে দেখা করতে ও উত্সাহিত করতে এসেছেন। তারা বিশ্বাস করেন, আমার গল্পটি ভারতের অন্যান্য বেকারদের জন্য অনুপ্রেরণীয় হতে পারে।’

টুকটুকির বাবা প্রশান্ত দাস মেয়েরে চা ওয়ালী হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রথমে আমি তার সিদ্ধান্তে খুশি ছিলাম না। আমরা তাকে শিক্ষিত করেছিলাম যাতে সে একজন শিক্ষিকা হয়।’

‘পরে তার চা বিক্রির সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। কারণ তার স্বনির্ভর হওয়া জরুরি ছিলো। সবারই উচিত কোনো কাজকে ছোট মনে না করে এগিয়ে যাওয়া।’

সূত্র: ডিএনএ ইন্ডিয়া

জেএমএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।