অনলাইনে মেকআপ শিখিয়েই রিমের ভাগ্যবদল
বর্তমানে সব নারীই নিজের সৌন্দর্য নিয়ে সচেতন। বিশেষ করে ত্বকের যত্ন নেওয়া ও সুন্দর করে মেকআপ করার বিষয়ে দুর্বলতা সব নারীরই আছে। আর তাইতো মেকআপ বিষয়ে আগ্রহী অনেক নারীই নিজের মেধা ও প্রতিভা সবার সামনে তুলে ধরছেন। বিনিময়ে প্রশংসা কুড়াচ্ছেন।
তেমনই একজন হলেন মেকআপ আর্টিস্ট খাদিজা ইসলাম রিম। ছোটবেলা থেকেই সাজগোজের প্রতি ভালোলাগা ছিল তার। সুন্দর করে মেকআপ করাও শিখেছেন ধীরে ধীরে। নিজের এই প্রতিভার গুণে ছোট-বড় সবাইকে সাজিয়ে তুলছেন অপরুপ ও দৃষ্টিনন্দনভাবে।
স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার আগেই রিমের বিয়ে হয়ে যায়। ছাত্রজীবন থেকেই নিজেকে ব্যতিক্রমী করে গড়ে তোলার ইচ্ছে ছিল তার। বিশেষ করে মেকআপ বিষয়ে তার আগ্রহ ছিল বেশি। এ কারণে বান্ধবীদেরকেও মেকআপ করিয়ে দিতেন তিনি। সবাই তার প্রশংসা করত।
একসময় রিম ভাবলেন ভালো লাগার এই নেশাকে চাইলেই তো তিনি পেশা হিসেবে নিতে পারেন! অন্যরা যেখানে কি করবেন বা না করবেস বুঝে উঠতে পারের না; সেখানে রিম ২০১৬ সালেই কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন।
যেই কথা সেই কাজ। তখন থেকেই রিম বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেকআপ কোর্সে অংশগ্রহণ করা শুরু করেন। সেখানে বিভিন্ন ধরনের মেকআপ, চুল কাটা, চুল কালার, নখের উপর সেশনগুলো ছিলো।
কয়েকটি কোর্স সম্পন্ন করার পর রিম ফেসবুকে পেজ খুলেন ‘মিরর ডিভা বাই রিম’। সেখানে বিভিন্ন ধরনের মেকআপ ভিডিও ও লাইভ করা শুরু করেন। বর্তমানে তার ফেসবুক পেজটির ফলোয়ার সংখ্যা ২ লাখ।
মূলত মানুষের ফিডব্যাক এবং ভালোবাসায় অনুপ্রাণিত হয়েই রিম নিজের মেকআপ টিউটোরিয়ালের ভিডিও আপলোড দেওয়া শুরু করেন। রিমের এই ভিডিও কনটেন্ট তৈরির শুরুটা ছিলো একদমই সাদামাটা। সঙ্গে সাথে ছিলো একটি চেয়ার এবং সামনে ছিল আয়না ও ক্যামেরা।
খাদিজা ইসলাম রিমের পার্লারের নাম ‘রিম’স মেকআপ পার্লার’। রিম জানান, এ সাফল্যের পিছনে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিলো তার বাবা- মা এবং বড় বোন। তাদের সাহস এবং অনুপ্রেরণাতেই রিম পরবর্তীতে ক্লথিং ইন্ডাস্ট্রিতে ও পা রাখেন।
রিম শুধু নিজেই স্বপ্ন দেখেননি। নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি বর্তমানে অন্যদেরও ভাগ্যবদল করছেন রিম। ৮-১০ জন নারীকে নিজের পার্লারে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছেন রিম।
অনলাইন এবং অফলাইনে বিভিন্ন ওয়ার্কশপে ও রিম মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়ে আসছেন। সবাইকেই তিনি মেকআপ টেকনিক থেকে শুরু করে কীভাবে পরিশ্রম এবং মেধা এই দুইটি জিনিসের মাধ্যমে ক্যারিয়ার ও গড়া সম্ভব তা জানান দিচ্ছেন।
তার পার্লারে বর্তমানে আরও ১০ জন আছেন। যারা বেতনভুক্ত হিসেবে রিমের পার্লারে কাজ করেন। চুল কাটা, মেকআপ, ফেসিয়াল, ম্যাসাজ এবং সৌন্দর্য বন্ধনের সব ধরনের কাজ করে থাকে তারা।
ভালো লাগা থেকে অনেকেই স্বপ্ন দেখেন কিন্তু শেষে স্বপ্নটা বাস্তবে রুপ নেয় না। এক্ষেত্রে খাদিজা ইসলাম রিম হতে পারেন সবার কাছে আইডল। ভালো লাগার কাজকেই পেশা হিসেবে নিয়ে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন রিম।
জেএমএস/জিকেএস