আইনস্টাইনের চেয়েও বেশি আইকিউ যে শিশুর!
অডিও শুনুন
আয়েশা আলম ইভা
বয়সের দিক দিয়ে দশকের ঘরে পৌঁছাতে পারেনি যে শিশু; তার আইকিউ লেভেল পৌঁছে গেছে শতকের ঘরে! আট বছর বয়সী মেক্সিকো সিটির আধারা পেরেজ। যার আইকিউ পরীক্ষার স্কোর ১৬৩। বিশ্ব বিখ্যাত প্রতিভার অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এবং স্টিফেন হকিংয়ের তুলনায় এই ছোট্ট মেয়েটির আই-কিউ ৩ নম্বর বেশি।
ইউক্যাটান টাইমস অনুসারে, ৩ বছর বয়সে পেরেজের অ্যাসপারগার সিন্ড্রোম ধরা পড়ে। বিকাশজনিত ব্যাধি সৃষ্টিকারী অটিজম এই রোগের কারণে তার সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় অসুবিধা হতে থাকে। ফলস্বরূপ আধারা পেরেজ স্কুলে উপহাসের স্বীকার হতে থাকে।
এক সাক্ষাৎকারে পেরেজ তার স্কুলের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলে, তাকে সহপাঠীরা সবসময় বিদ্রুপ ও উপহাসের পাত্রী বানাতো। তাকে কোনঠাসা করে ‘বিজোড়’ ও ‘অস্বাভাবিক’ নামে ডাকতো।
‘আমি দেখলাম, আমার ছোট্ট মেয়েটি একটি বাড়ির ভেতর খেলছে, তারা (সহপাঠীরা) বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ‘অস্বাভাবিক’ বলে চিৎকার করতে থাকলো এবং ঢিল ছুঁড়তে লাগলো। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি চাই না আধারার আর এমন কষ্ট হোক!’ আধারার মা ন্যালি সানচেজ এমনটিই জানান।
সানচেজের মতে, পেরেজ তখন গভীর হতাশায় পড়ে যায়। সে স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শিক্ষকরা বলেছিলেন, আগ্রহের অভাবে পেরেজ ক্লাসে ঘুমিয়ে পড়তো। তবে মেয়ের অস্বাভাবিকতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন তিনি। বুঝতে পারেন, বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি আধারার জন্য উপযুক্ত নয়। তখন তিনি পেরেজকে থেরাপিতে নিয়ে যান।
সেখানেই শিশুটির উচ্চ আইকিউ শনাক্ত করা হয়। শিশুটি তার অসাধারণ মেধার উপযোগী শিক্ষার পরিবেশ পায়। এরপর আধারা সেখানে তার দক্ষতা অনুযায়ী খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
পেরেজ তার ৫ বছর বয়সে প্রাইমারি শিক্ষা গ্রহণ করে। এরপর ৬ বছর বয়সে মাধ্যমিক শিক্ষা এবং ৮ বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে। বর্তমানে সে অনলাইনে দুটি ডিগ্রি অর্জনের জন্য অধ্যয়নরত। যার একটি গণিত বিষয়ে ইন্ড্রাস্টিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এবং অন্যটি সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর।
অসামান্য মেধাবী এই শিশুটি তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছে, যেটি ‘ডু নট গিভআপ’ নামে অনুবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়াও সে ফোর্বস ১০০ মেক্সিকান শক্তিশালী নারীর তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে।
ভগ মেক্সিকো ম্যাগাজিন জানায়, আধারা একটি নতুন স্মার্ট ব্রেসলেট আবিষ্কার করছে। যা ছেলে-মেয়েদের আবেগ পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এবং খিচুনিসহ অন্যান্য আক্রমণাত্মক রোগ শনাক্ত ও প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে।
বর্তমানে সানচেজ তার মেধাবী কন্যার স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহী আধারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ কারণে ইংরেজিতে আরও দক্ষ হচ্ছে। মেধাবী আধারা একজন মহাকাশচারী হতে চায়।
সূত্র: পিপল
জেএমএস/জিকেএস