আনন্দ নীড় পাঠাগার শিক্ষার্থীদের বাতিঘর

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৯ পিএম, ০৩ মার্চ ২০২১

মো. জাহিদুল ইসলাম সৌরভ

‘বাকৃবিতে একটি উন্মুক্ত লাইব্রেরি আছে, উন্নত বিশ্বের স্ট্রিট লাইব্রেরির মত। সেখানে বই সাজানো থাকবে বুকসেলফের মধ্যে। যখন যার ইচ্ছা, এসে বই নিয়ে পড়ে আবার জমা দিয়ে যাবে। কোনো নজরদারি থাকবে না। আমাদের ক্যাম্পাসেও এরকম একটা কিছু করতে হবে।’ কথাগুলো বললেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত পাঠাগার ‘আনন্দ নীড়’র অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা কাফি।

অনেকদিন থেকে কাফির দেখা স্বপ্ন অবশেষে কতিপয় স্বাপ্নিকের সাহচর্যে সত্যি হয় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। মেডিকেল সেন্টারের পেছনে যেখানে ছোট টং দোকানগুলো; সেখানেই অবস্থান এ উন্মুক্ত পাঠাগারের।

শুরুর দিকে কাফির এ স্বপ্নকে অনেকেই পাত্তা দেননি। সবাই কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন, বইগুলো এভাবে অভিভাবকহীন অবস্থায় উন্মুক্ত অবস্থানে রেখে দিলে অবশ্যই চুরি হয়ে যাবে ভেবে। কিন্তু পথচলার একবছর পার করে এসে এ পাঠাগারের বইসংখ্যা এখন প্রায় একশ’র কাছাকাছি।

করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে কিছুটা থমকে আছে এর পথচলা। না হলে সবার আগ্রহে হয়তো আরও সমৃদ্ধ হতে পারত।

আনন্দ নীড়’র অন্যতম উদ্যোক্তা আশরাফুল ইসলামের মতে, ‘একাডেমিক বইগুলোর ওপর একচ্ছত্র নির্ভরশীলতা আমাদের চিন্তাশক্তিতে স্থবির করে দেয়। যে কারণে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে সেভাবে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে না। সৃজনশীলতা এবং মননশীলতা বিকাশের জন্য আমাদের প্রয়োজন সাহিত্য-সংস্কৃতির উন্নত সত্তার সান্নিধ্য। সেই চিন্তা থেকেই আনন্দ নীড়ের সূত্রপাত।’

নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে আগে থেকেই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির আনাগোনা ছিল ক্যাম্পাসে। সেই উদ্যোগের সাথে নতুন সংযোজন আনন্দ নীড় উন্মুক্ত পাঠাগার।

টং দোকানের মালিক জামাল হোসেনের আন্তরিকতা এবং সুচারু দেখভালের কারণে উদ্যোক্তারা নির্বিঘ্নে এ পাঠাগারের সূচনা করতে পেরেছেন।

এক কাপ চা আর আলতো রোদের ছোঁয়ায় বসে বইপড়ার এক ভিন্ন অনুভূতি এনে দিচ্ছে আনন্দ নীড়। সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী করে তোলা এবং শিক্ষার্থীদের বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে আনন্দ নীড় নীরবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

আশা করা যায়, ১০১ একরের এ প্রাঙ্গণের অধিবাসীদের আত্মিক উন্নয়নের জন্য সব সময় বাতিঘর হয়ে থাকবে আনন্দ নীড় পাঠাগার।

লেখক: শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।