শূন্য থেকে শুরু করে সফল হওয়ার গল্প

মুহাম্মদ ফরিদ হাসান
মুহাম্মদ ফরিদ হাসান মুহাম্মদ ফরিদ হাসান , কবি ও কথাসাহিত্যিক
প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ২৭ নভেম্বর ২০২০

প্রথমে মানুষ তাকে নিয়ে হাসতো। তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্ন নিয়ে তাকাতো। বলাবলি হতো, এমন কত দেখেছি। এরাও পালিয়ে যাবে। কিছু করতে পারবে না। এমন সব কথা তরুণদের আহত করতো। কিন্তু তাদের কর্ম-উদ্দীপনা কমাতে পারতো না। এখন সেই তরুণরা বদলে গেছে। পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে নিজস্ব লক্ষ্যে। যারা একসময় ভাবতেন, ওদের দিয়ে কিছুই হবে না-তারাই এখন তাদের গড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে চান।

বলছিলাম চাঁদপুরের নবসৃষ্টি বহুমুখি সমবায় সমিতি লিমিটেডের উদ্যোক্তা ম. নূরে আলম পাটওয়ারী এবং সংশ্লিষ্টদের পথচলার কথা। নূরে আলম প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তার মুখেই শোনা যায় সমিতির সুখ-দুঃখের গল্প।

তিনি সমিতি প্রতিষ্ঠার নেপথ্য সম্পর্কে বলেন, আমাদের এলাকার জামাই নূরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা হলে বলতেন, আপনারা একটা সমিতি করতে পারেন। এটা ছিল ২০০৪-২০০৫ সালের ঘটনা। আমাদের সঙ্গে দেখা হলে প্রায়ই তিনি এ কথা বলতেন। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও একসময় তার কথার গুরুত্ব বুঝতে পারলাম। আমরা তখন বেশকিছু মিটিং করি। এসব মিটিং হতো প্রতিবেশীদের বাড়িতে। কারণ তখন তো অফিস ছিল না।

২০০৮ সালের দিকে নবসৃষ্টি বহুমুখি সমবায় সমিতি লিমিটেডের প্রাথমিক মূলধন ছিল ৬৫ হাজার টাকা। এ মূলধন এখন ৫ কোটি টাকারও বেশি। বর্তমানে সমিতির শেয়ার হোল্ডার ২৮ জন। মোট সদস্য প্রায় ১২শ। অথচ প্রথমদিকে এ সমিতি সদস্যদের সর্বোচ্চ ঋণ দিতো ৩ হাজার টাকা। তখন জনবল ছিল মাত্র ২ জন। পরবর্তী লোন-লিমিট ছিল ৫ হাজার টাকা। এ টাকাও সমিতি থেকে একবারে দিতে পারতো না।

Muhammad Forid Hasan

নূরে আলম পাটওয়ারী বলেন, শুরুর দিকে আমাদের প্রতিবন্ধকতা ছিল অনেক। শুরুতে আমাদের অফিস ছিল না। আমরা তখন ফাইলপত্র নিয়ে স্বজন-সুহৃদদের বাড়িতে বসতাম। তখন মানুষ আমাদের দেখে হাসতো। কিন্তু আমরা আমাদের মতো কাজ করে যেতাম।

নবসৃষ্টি বহুমুখি সমবায় সমিতি সামাজিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে। সমিতির অসচ্ছল সদস্যদের চিকিৎসার খরচ বহন, অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে বইসহ শিক্ষা উপকরণ দেওয়া, ঈদ-উপহার, সামাজিক সংগঠনে মাসিক অনুদান দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, করোনাকালে সার্বিক অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। প্রভাব পড়েছে নবসৃষ্টি বহুমুখি সমবায় সমিতিতেও। প্রতিষ্ঠানটি করোনার কারণে অনেক ঋণগ্রহিতার লভ্যাংশ মওকুফ, অনেকের ক্ষেত্রে শিথিল করেছে। আবার অনেককে সমিতি থেকে প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে। করোনাকালেও অসহায় মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি।

সমিতির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ম. নূরে আলম পাটওয়ারী বলেন, শিক্ষা বিস্তারে কাজ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আমরা একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ করতে চাই। এ ছাড়াও একটি ডেইরি ফার্ম করার চিন্তা আছে। আমাদের এলাকায় কোনো পাঠাগার নেই। সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে এলাকায় একটি পাঠাগার করতে চাই।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।