বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার শৈল্পিক কারিগর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৯:৩৭ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

চিরচেনা বাবুই পাখি এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না। নির্বিচারে তাল ও সুপারি গাছ কাটায় বসবাস উপযোগী পরিবেশ নেই। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার শৈল্পিক কারিগর ‘বাবুই পাখি’! অথচ মাত্র ১৫-১৬ বছর আগেও জীবননগরের সবখানে চোখে পড়তো চিরচেনা সেই পাখি। দেখা যেত সারিবদ্ধ তালগাছ অথবা সুপারি গাছের পাতায় কী সুন্দরভাবে ঝুলে আছে। এখন আর ঝুলতে দেখা যায় না, কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয় না গ্রামবাংলার জনপদ।

স্থানীয় সমাজসেবক হাজী হাফিজুর রহমান জানান, নির্বিচারে বন ধ্বংস করে বৃক্ষ নিধন, অবাধে কীটনাশক ব্যবহার, শিকারীদের দৌরাত্ম বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেই আজ এসব পাখি বিলুপ্তির পথে।

jagonews24

নিপুণ শিল্পকর্মে গড়ে তোলা কুঁড়েঘর সদৃশ অপরূপ দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত বাসা তৈরির কারিগর বাবুই পাখি। বিভিন্ন গাছের পাতা দিয়ে বাবুই পাখি বাসা তৈরি করে থাকে। এসব বাসা যেমন আকর্ষণীয়; তেমনি মজবুতও বটে। যে কারণে প্রচণ্ড ঝড়েও ছিঁড়ে পড়ে না বা পানি ঢুকতে পারে না। বাবুই পাখি অত্যন্ত পরিশ্রম করে তাল, নারিকেল, খেজুর গাছসহ আখ ক্ষেতে দলবেঁধে বাসা বাঁধে।

jagonews24

জানা যায়, এ পাখির মাংস সুস্বাদু বলে শিকারীদের কারণেও এর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। সাধারণত তিন প্রজাতির বাবুই পাখি দেখা যায়। দেশি, দাগি এবং বাংলা। তার মধ্যে দাগি এবং বাংলা বাবুই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে দেশি বাবুই এখনো কিছু কিছু চোখে পড়ে।

jagonews24

জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের কাঠাখালি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার পাশে কিছু খেজুর গাছ এবং দু’একটি তালগাছের ডালে বাবুই পাখির বাসা। শোনা যায় বাবুই পাখির সুমধুর ডাক। তবে বর্তমানে তালগাছ যেমন হারিয়ে যাচ্ছে; তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি।

jagonews24

পরিবেশবিদরা মনে করেন, বাবুই পাখির শৈল্পিক নিদর্শন টিকিয়ে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এ ছাড়া এক শ্রেণির শিকারী নির্বিঘ্নে বাবুই পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করছেন। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একেবারে উদাসীন বনবিভাগ। ফলে বাবুই পাখিসহ অন্য অতিথি পাখি এলাকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

সালাউদ্দীন কাজল/এসইউ/এএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।