করোনা থেকে সুস্থ হতে সময় বেশি লাগে যাদের

ডা. হিমেল ঘোষ
ডা. হিমেল ঘোষ ডা. হিমেল ঘোষ , চিকিৎসক
প্রকাশিত: ১২:৫৩ পিএম, ২১ জুলাই ২০২০

মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন; তাদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রে কাশি বা জ্বরের মতো প্রধান উপসর্গগুলো দেখা গেছে। তবে শরীরের ব্যথা, ক্লান্তি, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, ঘ্রাণ ও স্বাদ চলে যাওয়া ইত্যাদিও অনুভব করতে পারেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণে প্রাথমিকভাবে শুষ্ক কাশি হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে ফুসফুসের মৃত কোষযুক্ত শ্লেষ্মাসমৃদ্ধ কাশিও শুরু হতে পারে।

দেখা গেছে, যাদের সংক্রমণের মৃদু লক্ষণ থাকে; তারা দ্রুতই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাদের ক্ষেত্রে এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যেই জ্বর চলে যায়। তবে কাশি আরও কিছুদিন থাকতে পারে। চীনের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুস্থ হয়ে উঠতে গড়ে দুই-তিন সপ্তাহ সময় লাগে।

করোনার লক্ষণের তীব্রতার ভিন্নতার পাশাপাশি সেরে ওঠার ধরনও একেকজনের একেক রকম বলে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অনেক রোগী পুরোপুরি সেরে উঠতে অনেক বেশি সময় নেয়। অনেকের আবার সংক্রমণের পর শরীরে করোনা উপস্থিতির পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হতেও সময় বেশি লাগে।

ইংল্যান্ড, ইতালি, আমেরিকা, জাপান ইত্যাদি দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের তথ্য-উপাত্ত এবং বিভিন্ন সাময়িকীতে প্রকাশিত নিবন্ধ বিশ্লেষণ করে কিছু বিষয় শনাক্ত করা হয়েছে, যেমন-
১. আক্রান্ত ব্যক্তির বয়স বেশি হলে সেরে উঠতে কিছুটা দেরী হয়।
২. পুরুষদের সেরে উঠতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় লাগে।
৩. আমাদের দেশে করোনায় পুরুষ রোগীর মৃত্যুহারও নারী রোগীর চেয়ে বেশি।
৪. সংক্রমণের শুরুতেই তীব্র লক্ষণ প্রকাশ পেলে তার সেরে উঠতে বেশ সময় লাগে।
৫. তীব্র উপসর্গ প্রকাশের পরও হাসপাতালে ভর্তি হতে দেরি করলে সুস্থ হতে সময় বেশি লাগে।
৬. অনেকেই উপসর্গের মাত্রা ও তীব্রতা বেশি হলেও হাসপাতালে যেতে দেরি করেন।
৭. হাসপাতালে দেরীতে গেলে শারীরিক নানা জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৮. নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বা ভেন্টিলেটর সাপোর্ট লাগলে সুস্থ হতে বেশি সময় দরকার।
৯. দীর্ঘমেয়াদী রোগ, যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, অ্যাজমা ইত্যাদি থাকলে দেরী হতে পারে।
১০. দীর্ঘমেয়াদী কিছু রোগাক্রান্তদের শুরু থেকেই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত।
১১. স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের অতিরিক্ত প্রয়োগ কিংবা রোগের শুরু থেকেই অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারে দেরী হয়।
১২. স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুলাংশে কমিয়ে দেয়।
১৩. যারা দীর্ঘদিন বিভিন্ন রোগের জন্য স্টেরয়েড নিচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রেও প্রায় একই প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
১৪. ফুসফুস বেশি সংক্রমিত হলে উপসর্গের তীব্রতা প্রকাশ না পেলেও সেরে উঠতে সময় বেশি লাগে।

এসইউ/এএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।