করোনা চলে গেলেও যে নিয়মগুলো আজীবন মানা উচিত

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৭ পিএম, ০১ মে ২০২০

অডিও শুনুন

করোনাভাইরাস মানুষের মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। বদলে দিয়েছে প্রকৃতিও। জীবন বাঁচাতে মানুষ অনেক অসাধ্যকেও সাধন করেছে। মেনে চলছে অনেক নিয়ম-কানুন। তবে এ নিয়মগুলো করোনা চলে গেলেও আজীবন মেনে চলা উচিত। কারণ এতে আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

করোনা হয়তো একদিন দুর্বল হবে। তবুও ব্যক্তিগতভাবে সবাইকেই কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, লকডাউন দিয়ে করোনাভাইরাসকে পুরোপুরি দমন করা সম্ভব নয়। হয়তো সংক্রমণের গতি কিছুটা রোধ করা যায়। ফলে সেই সুযোগে রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তুতির জন্য বাড়তি কিছু সময় পাওয়া যায়।

তাই করোনা বা লকডাউন থাকুক বা না থাকুক, নিরাপদ থাকতে চাইলে আমাদের সাবধান হতে হবে। মনে রাখবেন, সংক্রমণ আপাতত কমলেও পরে আবার বাড়তেও পারে। তাই জেনে নিন, করোনা চলে গেলেও কী কী নিয়ম সারাজীবনই মেনে চলতে হবে।

বাড়িতে থাকুন: করোনাভাইরাস দুর্বল হয়ে গেলে সরকারিভাবে হয়তো লকডাউন শেষ হয়ে যাবে। তারপরও যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকার চেষ্টা করবেন। এমনকি ভবিষ্যতেও প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে থাকার চেষ্টা করবেন না। যাদের ঘরে বসে অফিসের কাজ করার সুযোগ থাকবে, তারা সেটা যতদিন সম্ভব চালিয়ে যেতে পারেন। আর বের হলেও দ্রুত কাজ শেষ করে চলে আসুন ঘরে।

jagonews24

হাত ধুতে হবে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সব সময়ই হাত ধোয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। নিজের শরীর সুস্থ রাখতে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। তাই করোনা চলে গেলেই হাত ধুতে ভুলে যাবেন না। নিয়মিত সময়মতো হাত ধোবেন। লকডাউন উঠে গেলেও এ অভ্যাস আজীবন ধরে রাখতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে ঢুকে জামা-কাপড় বদলে ফেলুন। সাবান দিয়ে খুব ভালোভাবে হাত-পা ধুয়ে ফেলুন। এতে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

স্যানিটাইজার রাখুন: ঘরে সব সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড রাব, হ্যান্ড ওয়াশ ইত্যাদি রাখতে পারেন। সেটি সম্ভব না হলে সাবান-পানি রাখুন। এটি শুধু করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য নয়। সারজীবনই এগুলো ব্যবহার করা উচিত। তাই আজ যে অভ্যাসটি শুরু করেছেন, সেটা অব্যাহত রাখুন।

cover

গ্লাভস ব্যবহার: করোনাভাইরাসের ভয়ে এখন সবাই গ্লাভস ব্যবহার করছেন। অনেক পেশায় সব সময়ই গ্লাভস ব্যবহার করতে হয়। তবুও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য বিশেষ প্রয়োজনে আপনিও গ্লাভস ব্যবহার করবেন। এতে নিজেও নিরাপদ থাকবেন। ঘরের মানুষকেও নিরাপদ রাখবেন।

jagonews24

নিয়মিত মাস্ক পরুন: আগে হয়তো ধুলাবালি আর দুর্গন্ধ এড়াতে মাস্ক ব্যবহার করতেন। করোনা আসার পর ভাইরাস রোধ করতে মাস্কের ব্যবহার বাড়িয়েছেন। আশা করি করোনা চলে গেলেও মাস্ক ব্যবহারের এ অভ্যাস অব্যাহত রাখবেন। কোনো কারণে বাইরে যেতে হলে মাস্ক, ওড়না বা স্কার্ফ দিয়ে ভালোভাবে নাক-মুখ ঢেকে রাখবেন। তাতে শুধু করোনা নয়, বাতাসের ধুলা, ময়লা, দূষণের হাত থেকেও রক্ষা পাবেন।

পিপিই রাখুন: বিশেষ বিশেষ কাজে এখন থেকে অবশ্যই পিপিই ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক, পুলিশ, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মীসহ বেশ কিছু পেশার মানুষ নিয়মিত পিপিই ব্যবহার করতে পারেন। বলা তো যায় না, কোথায় কোন ভাইরাস লুকিয়ে আছে।

cover

ভিড় এড়িয়ে চলুন: আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা চাইলেও ভিড় এড়িয়ে চলতে পারেন না। তবুও আপাতত যেকোনো জনবহুল এলাকা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও অভ্যাসটি বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। দোকান বা বাজারে বেশি লোক হলে দূরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করুন। পরিবহনে খুব ভিড় থাকলে উঠবেন না। হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বের হবেন। ফাঁকা পরিবহনের জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করুন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন: সর্দি-কাশি হলে রুমাল বা টিস্যু সঙ্গে রাখুন। হাঁচি-কাশির সময় মুখ, নাক ঢেকে রাখবেন। একাধিক রুমাল সঙ্গে রাখবেন। যাতে প্রয়োজনে বদলে নিতে পারেন। রুমাল ব্যবহারের পর প্রতিদিন ভালোভাবে সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নেবেন। টিস্যু ব্যবহার করলে যেখানে-সেখানে ফেলবেন না।

বিনোদন এড়িয়ে চলুন: আগামী বেশ কয়েক মাস পার্টি, অনুষ্ঠান, সিনেমা হল, থিয়েটার, দাওয়াত- এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। পারলে ভবিষ্যতেও কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ ভিড় বেশি হয় এমন সব জায়গা এখন থেকে এড়িয়ে চলতে হবে। আপাতত বাড়িতে বড় পার্টি, বেশি লোকজন দাওয়াত করা কিছু দিনের জন্য হলেও বন্ধ রাখতে হবে।

jagonews24

ভ্রমণ বন্ধ রাখুন: করোনাভাইরাস চলে গেলে বা লকডাউন শেষ হলে কোথাও ভ্রমণ করতে ছুটবেন না। কোনো কোনো অঞ্চলে ভাইরাসের প্রকোপ থাকতে পারে। তাই আপাতত আরও কয়েক মাস নিরাপদ থাকতে নিজের বাড়ি বা নির্দিষ্ট এলাকায়ই থাকুন। ভবিষ্যতেও চিন্তা-ভাবনা এবং পরিবেশ বুঝে ভ্রমণ করতে বের হবেন।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।