করোনা ঝুঁকিতে পথশিশুরা
আরিফ রহমান শিবলী
করোনাভাইরাস আক্রান্ত বিশ্বের ১৮১টি দেশ। ইতোমধ্যে ইতালি, ইরান, চীন, স্পেন, ভারত ও বাংলাদেশসহ মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে। যেখানে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ) বলছে, আক্রান্ত অঞ্চলকে জরুরি ভিত্তিতে লকডাউন করতে। সেখানে কতটা স্বাস্থ্য সচেতন আমাদের দেশের ছিন্নমূল পথশিশু ও ভিক্ষারত শিশুরা।
অনুসন্ধান বলছে, এয়ারপোর্ট, রেল স্টেশন, বাস স্টেশনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষারত অসংখ্য বাবা, মা এবং তাদের কোলে থাকে বিভিন্ন বয়সী শিশু। কোনো বিদেশি নাগরিক বা প্রবাসীর স্পর্শে যদি কোনো বাবা-মা এ ভাইরাস আক্রান্ত হন। তা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়বে নিজ কোলের সন্তানসহ অন্যদের মাঝে।
এ ব্যাপারে কথা হয়েছে অনেক ভিক্ষারত মা, বাবার সাথে। যারা এখনো জানেনই না করোনাভাইরাস কী? কথা হয়েছে ৮ বছর বয়সী রাসেলের সাথে। সে ঢাকা মিরপুর বস্তিতে থাকতো। এখন এয়ারপোর্ট এলাকায় ভিক্ষা করে। করোনা নিয়ে প্রশ্ন করতেই দৌড় দিয়ে চলে যায় সে।
কথা হয় কারওয়ানবাজার রেললাইনে অবস্থান করা তানজিলার সাথে। অন্ধ বাবাকে নিয়ে ভিক্ষা করতে বের হয় সে। করোনা ভাইরাস নিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বলে, ‘আমি জানি না।’ কথা হয় রবিনের সাথে। ৭ বছর বয়সী রবিন বন্ধুদের সঙ্গে ভিক্ষা করে ফার্মগেট এলাকায়। করোনাভাইরাস নিয়ে প্রশ্ন করতেই তারা ছুটতে ছুটতে জানায়, এগুলো তাদের ধরবে না।
শিশু কোলে নিয়ে ভিক্ষারত বাবা-মা আরও উদাসীন এ ব্যাপারে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী ছিন্নমূল ভিক্ষারত পথশিশু আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এমনকি তাদের মাধ্যমে নিজ বাবা-মা, বন্ধু ও ছোট ভাই-বোন আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ফেলে দেওয়ার মতো নয়।
লেখক: মানবাধিকার কর্মী ও সদস্য, অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
এসইউ/এমএস