রোগমুক্ত থাকার ১৫ উপায়

ডা. হিমেল ঘোষ
ডা. হিমেল ঘোষ ডা. হিমেল ঘোষ , চিকিৎসক
প্রকাশিত: ০২:০৩ পিএম, ১৬ মার্চ ২০২০

অডিও শুনুন

সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত জীবনধারণ করতে কে না চায়? সুস্বাস্থ্য হলো আশীর্বাদ। যার শরীরে অসুখ বাসা বেঁধেছে; তিনিই সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন। নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু বলা বা মনে ধারণ করা যতটা সহজ, নিয়মিত পালন করা মোটেই ততটা সহজ নয়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের জন্য একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা, সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য এবং পরিপূর্ণ সচেতনতার সমন্বয় খুব জরুরি।

সুস্বাস্থ্যের জন্য কিছু নিয়ম-কানুন মানা জরুরি। যেমন-
১. রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন। অকারণে মোটেও রাত জাগবেন না। ঘুমানোর একঘণ্টা আগেই মোবাইল, ল্যাপটপ, টেলিভিশন থেকে দূরে থাকুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। দেখবেন, নতুন উদ্যমে দিনের কাজ শুরু করতে পারছেন।

health-in-(3)

২. প্রাত্যহিক কাজের পাশাপাশি নিজ নিজ ধর্মানুযায়ী সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন। আপনি প্রচুর মানসিক প্রশান্তি পাবেন। পাশাপাশি কিছুটা মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপনেও সহায়ক হবে।

৩. খাওয়ার আগে, মল-মূত্র ত্যাগের পর সঠিক নিয়মে সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করুন। আঙুলের খাঁজে, নখের ভেতরে যেন কোনোভাবেই ময়লা না জমে থাকে; সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

৪. সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে খাবারের পর দিনে কমপক্ষে ২ বার নিয়মিত সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করুন।

health-in-(3)

৫. সময় পেলেই হাঁটার অভ্যাস করুন। হেঁটে যাওয়া যায় এমন দূরত্বে রিকশা বা গাড়ির পরিবর্তে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস করুন। যখন অবসর সময় পাবেন; তখন পার্কে বা ফুটপাতে হাঁটুন। ধীরে ধীরে হাঁটার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন।

৬. স্বাস্থ্যসম্মত আহার করুন। প্রাকৃতিক খাদ্যগ্রহণে বিশেষভাবে নজর দিন। দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে টাটকা ও মৌসুমী শাক-সবজি, ফল-মূল সংযুক্ত করুন। পরিমিত পরিমাণে ভাত বা রুটি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করুন। একবারে একসাথে বেশি পরিমাণ খাদ্যগ্রহণ না করে অল্প অল্প করে বারবার পরিমিত খাদ্যগ্রহণের চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে পরিবারের সব সদস্য একসাথে খাবার গ্রহণ করুন, পারিবারিক বন্ধনটাও দৃঢ় হবে।

৭. ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন একগ্লাস পানি পান করুন। পাশাপাশি সারাদিনে মোটামুটি ২-৩ লিটার পানি পানের চেষ্টা করুন। আপনার বৃক্ক সঠিকভাবে কর্মক্ষম থাকার পাশাপাশি ত্বকের লাবণ্য বাড়বে।

health-in-(3)

৮. অত্যধিক মসলাযুক্ত খাবার ও অধিক চর্বিযুক্ত লাল মাংস এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে টার্কি বা মুরগির মত কম চর্বিবিশিষ্ট মাংস খাদ্যাভাসে নির্বাচন করতে পারেন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড, বাইরের খোলা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রভৃতি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।

৯. ধূমপান ও মদপানসহ অন্যান্য খারাপ অভ্যাস এড়িয়ে চলুন। এগুলো এড়িয়ে চললে আপনার ফুসফুস ও লিভার দুটোই ভালো থাকবে। সেইসাথে সুস্থ জীবনযাপনের পাশাপাশি টাকাও বাঁচবে।

১০. শারীরিক কার্যক্রম বাড়ান। হতে পারে তা সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানো। কিন্তু এ কাজগুলোই আপনাকে মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেবে।

১১. যেকোনো বিষয় নিয়ে পড়ুন। হতে পারে সেটা গল্পের বই বা ম্যাগাজিন। এগুলো মস্তিষ্কের জন্য উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।

health-in-(3)

১২. খুব বেশি কাজের চাপ অনুভব করলে নিয়মিত বিরতিতে ছুটি নিন। জীবন শুধু মুখ বুজে মাথা নিচু করে কাজ করার জন্য নয়। ছুটি শেষে পূর্ণোদ্যমে কাজে মনোনিবেশ করুন।

১৩. নেতিবাচক চিন্তা না করে সবসময় ইতিবাচক থাকুন। ঝামেলাযুক্ত কোনো সম্পর্ক থাকলে ইতি টানুন। পারিবারিক ও পেশাগত কাজের বাইরে এমন কোনো নতুন শখ তৈরি করুন, যা করতে আপনার ভালো লাগে।

১৪. হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন। রুমাল বা টিস্যুপেপার ব্যবহার করুন। কোনো অবস্থাতেই হাত দিয়ে নাক মুছবেন না। বাইরে জনসমাগমযুক্ত স্থানে মাস্ক ব্যবহার করুন। সেইসাথে অকারণে কান খোঁচাবেন না।

১৫. কখনো অসুস্থ হলে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ-পথ্য সেবন করবেন না।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।