এমন দৃশ্য এখনো কি চোখে পড়ে?

তারিফুল ইসলাম
তারিফুল ইসলাম তারিফুল ইসলাম , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০৩:৩৮ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৯

পানির ওপর ফুটে থাকা শাপলা ফুলের নজরকাড়া সৌন্দর্য সত্যিই সবাইকে মুগ্ধ করে। একসময় খাল-বিলে অজস্র শাপলা ফুল দেখা যেত। লাল কিংবা সাদা শাপলা ফুল দেখে মুগ্ধ হননি, এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। অথচ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের জাতীয় ফুল।

শাপলা পুষ্পবৃক্ষ পরিবারের এক ধরনের জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভুক্ত সব উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। তবে সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এ ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। এ ফুল শ্রীলংকারও জাতীয় ফুল। এ ফুল দিনের বেলা ফোটে এবং সরাসরি কাণ্ড ও মূলের সাথে যুক্ত থাকে।

shapla-cover.jpg

> আরও পড়ুন- জারবেরা চাষে কোটিপতি আনোয়ার

একসময় বর্ষা মৌসুমে দেশের ডোবা-নালা, খাল-বিল, রাস্তার দু’পাশের জলাশয়ে ব্যাপকভাবে শাপলার মনোরম দৃশ্য দেখা যেত। বর্ষা থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত এসব জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মাত প্রচুর শাপলা-শালুক। শিশুরা তো বটেই, সব বয়সের মানুষ রং-বেরঙের শাপলা দেখে মুগ্ধ হতেন। কিন্তু এখন আর সেই দৃশ্য চোখে পড়ে না।

শাপলা ফুলের কদর ছিল অন্যরকম। গ্রামের প্রায় সব পরিবারই শাপলা তুলে তরকারি হিসেবে রান্না করে খেত। কালেভদ্রে এখন শহরের বাজারে শাপলা বিক্রি করতে দেখা যায়। তখন বর্ষা এলেই নৌকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করতো মানুষ। শাপলার তরকারি সুস্বাদুও বটে।

shapla-cover.jpg

> আরও পড়ুন- ঘুরে ঘুরে ফুলের চারা বিক্রি করে বাড়তি আয়

অথচ কালের বিবর্তনে গ্রামবাংলার দৃষ্টিনন্দন সেই শাপলা আজ বিলুপ্তির পথে। দিনের পর দিন জনসংখ্যা বাড়ার কারণে ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। সেই সাথে গ্রাম-গঞ্জের পুকুর-ডোবা, খাল-বিল, নালা-জলাশয় আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আর তাই তো আমাদের জাতীয় ফুল শাপলা হারিয়ে যাচ্ছে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খাল-বিল ও জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো ধ্বংসই শাপলা ফুল বিলুপ্তির প্রধান কারণ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে জলাশয়গুলো বাঁচিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য। আর জলাশয় টিকে থাকলেই শাপলা টিকে থাকবে।

লেখক: ফিচার ও ভ্রমণ লেখক।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।