ইফতার পার্টি না দিয়ে এতিমদের দান করতেন আবদুল কালাম

ফিচার ডেস্ক
ফিচার ডেস্ক ফিচার ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ২৯ মে ২০১৯

রমজান মাসে দেশে দেশে ইফতার পার্টি যেন রীতিতে পরিণত হয়েছে। ধনী-গরিব, আমির-ফকির সবার মধ্যেই ছোট-বড় ইফতার পার্টি দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তবে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম ছিলেন এর উল্টো। তিনি বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তিনি ইফতার পার্টি না দিয়ে এতিমদের দান করতেন।

জানা যায়, তারই সাবেক সচিব অবসরপ্রাপ্ত আইএস কর্মকর্তা পি এম নায়ারে চমকপ্রদ এ তথ্য জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছেন। নায়ারের একটি লেখা ও সাক্ষাৎকারে এ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। ‘দি কালাম এফেক্ট, মাই ইয়ার্স উইথ দি প্রেসিডেন্ট’ শিরোনামে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০০২ সালে। সেটি প্রচার হয়েছিল দূরদর্শনের তামিলভাষী আঞ্চলিক একটি চ্যানেলে।

kalam-

পি এম নায়ারে সেখানে উল্লেখ করেন, ২০০২ সালে আবদুল কালাম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। তখন জুলাই-আগস্টে রমজান মাস ছিল। সে সময় ভারতীয় রাষ্ট্রপতির জন্য নিয়মিত ইফতার পার্টি দেওয়ার রীতি ছিল। ফলে নায়ারে ইফতার পার্টির উদ্যোগ নেন। কিন্তু এ উদ্যোগ নেওয়ার পর ড. আবদুল কালাম তাকে ডাকলেন।

ড. কালাম তার সচিবকে প্রশ্ন করলেন, ‘কেন আমি একটি পার্টির আয়োজন করব? কারণ পার্টিতে যারা আসবেন, তারা সবসময় ভালো খাবার খান।’ এরপর সাবেক এ রাষ্ট্রপতি আরও জানতে চান, ‘ইফতার পার্টিতে কত খরচ হয়?’ তখন তাকে বলা হয়, প্রায় ২২ লাখ রুপি। শুনে ড. কালাম নির্দেশ দেন, এ অর্থ দিয়ে খাবার, পোশাক ও কম্বল কিনে কয়েকটি এতিমখানায় দান করতে।

kalam-

এরপর নির্দিষ্ট এতিমখানা বাছাই করতে রাষ্ট্রপতি ভবনের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়। এতিমখানা বাছাইয়ের পর ড. কালাম নায়ারেকে তার কক্ষে ডাকলেন এবং এক লাখ রুপির একটি চেক দিয়ে দিলেন। বললেন, ‘আমার ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে কিছু অর্থ দান করেছি। এ তথ্য কারো কাছে প্রকাশ করা যাবে না।’

কিন্তু ব্যথিত হয়ে নায়ারে তার সামনেই বললেন, ‘স্যার, আমি এখনই বাইরে যাব এবং সবাইকে বলব। কারণ, মানুষের জানা উচিত—এখানে এমন একজন মানুষ রয়েছেন—তার যা অর্থ খরচ করা উচিত, তিনি সেটা শুধু দানই করেননি, সেইসঙ্গে নিজের অর্থও বিলিয়ে দিয়েছেন।’

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।