এবার রাজধানীর বনশ্রীতে মানবতার দেয়াল
এখনো মানবতা একেবারে উবে যায়নি। জাগতিক চরম হতাশার মধ্যেও কারো কারো মানবতা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। তা না হলে কবেকার কার উদ্যোগ আজ দেশব্যাপী আলোচিত। রাজধানী থেকে শুরু করে গ্রামের আনাচে-কানাচে এখন গড়ে উঠছে ‘মানবতার দেয়াল’।
তাই তো সম্প্রতি রাজধানীর রামপুরা বনশ্রীর বি ব্লকের ২ নম্বর সড়ক এভিনিউয়ে দেখা গেছে মানবতার দেয়াল। রামপুরা বনশ্রী ও দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার বাসিন্দাদের ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ‘বনশ্রীবাসী’ জনস্বার্থে খবরটি শেয়ার করেছে।
দেয়ালে কাঠের তৈরি সেলফে কাচ বসিয়ে সুরক্ষিতভাবে তৈরি করা হয়েছে মানবতার দেয়ালটি। অন্যসব আয়োজনের চেয়ে এটিকে একটু ব্যতিক্রমই মনে হবে। বর্ষায় যেন রক্ষিত কাপড়গুলো ভিজে না যায়, এজন্যই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সহজেই অনুমান করা যায়।
> আরও পড়ুন- এবার গ্রামেও মানবতার দেয়াল!
কাচের ওপর দুটি স্টিকারে লেখা রয়েছে, ‘আপনার অপ্রয়োজনীয় জিনিস এখানে রেখে যান’ এবং ‘আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস এখান থেকে নিয়ে যান’। সেলফের তিনটি তাকেই সংরক্ষিত আছে নানা বয়সের বিভিন্ন ধরনের কাপড়-চোপড়। একটি ফলের দোকানের পাশে স্থাপিত এ মানবতার দেয়াল ইতোমধ্যেই জনমনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
দেয়ালের গায়ে পবিত্র কোরআনের দুটি আয়াত লেখা রয়েছে। একটি আয়াত হচ্ছে- ‘হে মুমিনগণ, আমি তোমাদের যা দিয়েছি তা হতে তোমরা ব্যয় কর, সেই দিন আসার পূর্বে- যে দিন ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ থাকবে না। এবং কাফেররাই জালিম।’ অপর আয়াতটি হচ্ছে- ‘ভয় কর সেই দিনকে যে দিন কেউ কারো উপকারে আসবে না।’
মানবতার দেয়াল সম্পর্কে মনির ফেরদৌস খান বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি ভালো উদ্যোগ। আমাদের সবার উচিত এ উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
> আরও পড়ুন- সংসার বিবাগী এক শিক্ষকের গল্প
রিয়াজ অরিত্র বলেন, ‘এরআগে বনশ্রীর এফ ব্লকেও মানবতার দেয়াল করা হয়েছে। সেটি ৩ ও ৪ নম্বর সড়কের মাঝখানে অবস্থিত। আশা করি মানবতার দেয়াল আরও ছড়িয়ে পড়বে।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ইরানের উত্তর-পূর্বের শহর মাশাদে প্রথম এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সময়টা ছিল শীতকাল। সেখানে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র পৌঁছে দিতে অজ্ঞাত কোন ব্যক্তি এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এমন উদ্যোগের নামকরণ করা হয়েছিল ‘মানবতার দেয়াল’। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গণমাধ্যমে সে খবর প্রচারিত হয়েছিল। সংবাদ প্রকাশের পর জনমনে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল এমন উদ্যোগের জন্য।
এসইউ/এমএস