জাল ভিসার প্রতারণা থেকে বাঁচতে হলে

আবু তালহা
আবু তালহা আবু তালহা , লেখক
প্রকাশিত: ০৪:০১ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০১৯

ভিসা এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রবেশের অনুমতিপত্র। বিভিন্ন কারণে এটি খুবই প্রয়োজনীয়। তবে ভিসা বিভিন্ন শ্রেণির হয়ে থাকে। যেমন জব ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট ভিসা, বিজনেস ভিসা, কনফারেন্স ভিসা ইত্যাদি। আজ আমরা জানবো কানাডার জাল ভিসার প্রতারণা থেকে বাঁচতে কী করা দরকার।

প্রথমেই জেনে নিন, ভিসা তথ্যের জন্য কানাডা সরকারের একটি ওয়েবসাইট আছে। সেখানে কানাডা ভিসা আবেদনের জন্য সব প্রয়োজনীয় তথ্য ও আবেদনের ফর্ম দেওয়া আছে। প্রতারণা ও জালিয়াতি থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই এ বিষয়ে কিছু না কিছু ধারণা বা জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

বাংলাদেশ হাজার হাজার ভিসা কনসালিং ফার্ম আছে। কিন্তু কোন ফার্মটি সঠিক কাজ করে সেটি খুঁজে বের করাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। প্রতারণা বা জালিয়াতি থেকে বাঁচার প্রথম ও প্রধান উপায় হলো- যতদূর সম্ভব দালাল থেকে দূরে থাকা। কারণ দালালরা উচ্চ কমিশনের লোভে প্রায় সময় মিথ্যা কথা বলে। সুতরাং দালাল থেকে দূরে থাকুন। আর ভ্রাম্যমাণ কোন অফিস বা ব্যক্তি বা ভারচুয়াল কোন ব্যক্তি থেকে দূরে থাকুন।

canada-in-(2).jpg

> আরও পড়ুন- কম সময়ে কম খরচে ডিগ্রি পেতে চাইলে

সরাসরি কোনো প্রতিষ্ঠান ভিজিট করুন। প্রধান কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলুন। প্রয়োজনীয় সম্ভাব্য বিষয়গুলো অনুমান করার চেষ্টা করুন। তাদের সফলতার হার ও চুক্তিবদ্ধ কোনো ইমিগ্রেশন লইয়ার বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে কিনা, তা যাচাই করুন। প্রতিটি ধাপেই সতর্কতা অবলম্বন করুন।

কানাডার ভিসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে বাংলাদেশে অবস্থিত কানাডার ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসের কার্যালয়ে (কানাডা ভি.এফ.এস, ডেল্টা লাইফ টাওয়ার, ৪র্থ তলা, প্লট-৩৭, রোড নং-৯০, গুলশান-২, ঢাকা-১২১২) নিজ হাতে আবেদন বা ফাইল জমা দিতে হবে। ডেলিভারি স্লিপ বা জমা স্লিপ নিজের কাছে সংরক্ষণ করতে হবে। আবেদনপত্রে অবশ্যই নিজের ফোন নম্বর ও ই-মেইল ব্যবহার করতে হবে। পরে নিজেকেই ভি.এফ.এস থেকে ফাইল ডেলিভারি নিতে হবে। অর্থাৎ ফাইল জমা ও উঠানো- দুটোই নিজ হাতে করতে হবে। তাহলে আপনার পাসপোর্টে জাল ভিসা লাগানোর সুযোগ থাকবে না।

অনেকেই ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ইত্যাদি দেশ থেকে ভিসা করে দেওয়ার তথ্য দিয়ে থাকেন। এটি পুরোই ভিত্তিহীন। বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই ও সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রীয় প্রসেসিং সেন্টার হলো সিঙ্গাপুর। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রতিটি ভিসা কানাডা হাই কমিশন, সিঙ্গাপুর থেকে মূলত ইস্যু হয়ে থাকে। সুতরাং অন্য কোন দেশ থেকে কানাডার ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। অন্য কোন দেশে অবস্থিত কানাডার হাই কমিশন আবেদন গ্রহণ করবেন না। আপনাকে নিজের দেশে গিয়ে আবেদন করতে বলা হবে।

canada-in-(2).jpg

> আরও পড়ুন- যে দেশের পাসপোর্ট সবচেয়ে দামি

প্রতারণার আরেকটি নাম ইলেকট্রনিক্স ভিসা। এই ভিসা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এ ভিসা বাংলাদেশি পাসপোর্ট হোল্ডারদের জন্য প্রযোজ্য নয়। সুতরাং এ ভিসা করে কেউ প্রতারিত হবেন না।

এত সতর্কতা অবলম্বনের পরেও যদি সন্দেহ থেকে যায়, তবে কানাডা হাই কমিশন সিঙ্গাপুরের ই-মেইলে যোগাযোগ করতে পারেন। কানাডা হাই কমিশন সিঙ্গাপুর খুব সম্ভবত ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে ই-মেইলের জবাব দেবে। কানাডা ভিসা চেক করার সরাসরি কোনো মাধ্যম বা ওয়েবসাইট নেই। নিম্নে কমিশনের ঠিকানা দেওয়া হলো- কানাডা হাই কমিশন, সিঙ্গাপুর, ওয়ান জর্জ স্ট্রিট, ১১-০১, সিঙ্গাপুর-০৪৯১৪৫।

ই-মেইল: [email protected],
ওয়েবসাইট: www.canadainternational.gc.ca

মনে রাখবেন, আপনার ভিসার জন্য আপনিই যথেষ্ট। কোনো কনসাল্টিং ফার্ম বা ব্যক্তি ভিসার মালিক নন। শুধু অ্যাম্বাসিই ভিসা দিতে পারে। কারো প্রলোভনে নয়, নিজে একটু ভাবুন। পরিবারের সাথে পরামর্শ করুন। প্রয়োজনীয় তথ্য অর্জন করুন। সচেতনতাই প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে পারে।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।