এক গাছেই ধরছে ৪০ প্রকার ফল

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৫১ এএম, ১৮ আগস্ট ২০১৪

একেক গাছে একেক প্রকার ফল ধরে। এক গাছে দুই ধরনের ফল! তাও হয়তো সম্ভব। কিন্তু যদি বলা হয় এক গাছে ৪০ ধরনের ফল! এটাও কি বিশ্বাস করার মতো। হ্যাঁ, বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। সম্প্রতি এমনই একটি সংবাদ দিয়েছে বিজনেস ইনসাইডার। মানুষের তৈরি একটি গাছে ৪০ রকমের ফল ধরে! প্রত্যেক ফলের ডালে নিজ নিজ মৌসুমে ফুল আসছে এবং ফল ধরছে। আর সব ফলই খাওয়ার যোগ্য। এক গাছে ৪০ প্রকার ফল!

নিউইয়র্কের সিরাকাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টসের অধ্যাপক স্যাম ভ্যান অ্যাকেন এমন একটি গাছ উদ্ভাবন করেছেন। এ জন্য তার সময় লেগেছে নয় বছর। তার বিশাল পরিকল্পনায় এ সময়টাও ছিল খুবই কম। কারণ গোটা ফলের বাগানকে তিনি একটি গাছে পরিণত করেছেন।

গাছটি তৈরি করতে তিনি গ্রাফটিং পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন। এ পদ্ধতিতে মানুষ এক গাছের সঙ্গে অন্য গাছের মিলন ঘটিয়েছে। এ পদ্ধতিতে দুটি গাছের ডালকে এমনভাবে জুড়ে দেওয়া হয় যাতে দুটি ভিন্ন গাছের শিরা-উপশিরা পরস্পরের মধ্যে প্রবাহিত হয়, ঠিক দুটি রক্তনালিকে মিলিয়ে দেওয়ার মতোই। এই নালি দুটিকে বলা হয় লোয়েম এবং জাইলেম। এই পদ্ধতিতে দুটি গাছ তাদের পানি, চিনি এবং খনিজ পদার্থ বিনিময় করে।

গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে দুর্বল গাছ শক্তিশালী গাছের বিভিন্ন উপাদান গ্রহণ করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। যদিও গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে একাধিক গাছ জুড়ে দেওয়া যায়, তবে ৪০টি গাছকে এক করা প্রায় অসম্ভব। এর জন্য বছরের পর বছর সময় দেওয়ার পরও ব্যর্থতা আসতে পারে।

অধ্যাপক স্যাম ভ্যান অ্যাকেন যা করেছেন তা হলো, একটি গাছ নিয়ে তিনি ৩-৪ বছর ধরে তার পরিচর্যা করেছেন। এর ডালপালা পরিপুষ্ট হলে ৪-৫টি কেটে নিয়ে সেখানে অন্য ফলের ৪-৫টি ডাল গ্রাফট করেছেন। এভাবে ২০-২৫টি ভিন্ন ভিন্ন গাছের অংশ জুড়ে দেওয়ার পর পরিচর্যা করতে হয়েছে। প্রায় ২ বছরের পরিচর্যায় নতুন অংশগুলো অন্যের সঙ্গে খনিজ আদান-প্রদানে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। তারা প্রত্যেকেই যেন একটি গাছের অংশ হয়ে যায়। এরপর আরও নতুন ফলের অংশ জুড়ে দিতে থাকলেন ভ্যান অ্যাকেন। এভাবে চলতেই থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না ৪০টি গাছ পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে যায়।

প্রফেসর স্যাম বলেন, জুড়ে দেওয়া নতুন নতুন ফলের ডাল তাদের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে এবং তাদের নিজস্ব ফুল ও ফল উৎপন্ন হচ্ছে। এই পদ্ধতির পেছনে যে বিজ্ঞান কাজ করে তা আসলে একটি গাছের উপজাত তৈরি করে। তবে আমার কাছে এটি গাছের অলঙ্কার। অধ্যাপক স্যামের এই পরিশ্রমের ফসল যা বেরিয়েছে তা হলো, এগ্রিকালচারের দুনিয়ায় গ্রাফটিংকে তিনি ভিন্ন পর্যায়ে পেঁৗছে দিয়েছেন। এই গাছে ভিন্ন ভিন্ন ফল আসার সময় ও তাদের রঙ ঠিক রাখার জন্য সঠিক সময়ে তাদের গ্রাফটিং করেছেন বলে অধ্যাপক স্যাম জানান।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।