নাচ-গান ও সিনেমার আনন্দে শেষ হলো বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যাল

বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিল্প ও সংস্কৃতি উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘বার্নিং ম্যান’ উৎসব যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদার ব্ল্যাক রক সিটির মরুভূমিতে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিল্পী, উদ্যোক্তা ও দর্শকেরা একত্র হন।সৃজনশীলতা, মুক্ত পরিবেশ এবং স্বাধীনতা- এগুলোই হচ্ছে উৎসবের মূলমন্ত্র। সেই উৎসবের প্রেরণায় এবার বাংলাদেশেও হয়ে গেল বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যাল।
তিন দিনব্যাপী চলা উৎসবটির সমাপ্তি হলো গতকাল, ৩১ জানুয়ারি। নাচ, গান, আলো ও সংস্কৃতির দৃষ্টিনন্দন আয়োজন উপলক্ষে মারমেইড বিচ রিসোর্টের আঙিনায় সাজানো হয় পৃথক ছয়টি মঞ্চ। গভীর রাত পর্যন্ত পৃথক মঞ্চে চলে ভিন্নভিন্ন পরিবেশনা।
একদিকে চলছে ডিজে, অন্যদিকে কাঁকড়াসদৃশ মঞ্চে তিন পার্বত্য জেলা- বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকে আসা ম্রো, মারমা, ত্রিপুরা, চাকমা, পাংখোয়া তরুণীরা ছাতানৃত্য, বোতলনৃত্য, জুমনৃত্য, বাঁশনৃত্য পরিবেশন করেন।
আর কক্সবাজারের রাখাইন তরুণীরাপরিবেশন করেন থালানৃত্য। এছাড়া কয়েকটি স্টলে নানা ধরনের মুখরোচক খাবারের পরিবেশনা।
উৎসবের শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। তিনি পুরো আয়োজন উপভোগ করেন এবং উৎসবের বৈচিত্র্য ও নান্দনিকতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, ‘এমন উৎসব আসলে অসাধারণ। এখানে যেমন আধুনিকতার ছোঁয়া আছে, তেমনিরয়েছে লাইটিংয়ের নান্দনিকতা, আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ বাউলগান এবং আদিবাসীদের নৃত্য। এটি সত্যিইদারুণ। তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি বিদেশীরাও আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা পেয়েছে।’
মেরিন ড্রাইভের প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতে অবস্থিত মারমেইড বিচ রিসোর্টে আয়োজিত এই উৎসবে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় ছিল বর্ণিল আয়োজন। ফায়ার শো, লাইটিং ডিসপ্লে এবং স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণ দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এছাড়া উৎসবে প্রদর্শিত হয় এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসব বুসানের সেরা পুরস্কার পাওয়া চলচ্চিত্র ‘বলী: দ্য রেসলার’।
বার্নিং ক্র্যাব ফেস্টিভ্যালের আয়োজক মারমেইড ইকো ট্যুরিজম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল হক চৌধুরীবলেন, ‘তিনদিনের এ উৎসবে জাপান, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৫ দেশের ২০০ বিদেশিপর্যটকসহ অন্তত দুই হাজার জন অংশ নেয়। সমুদ্রতীরে নিরিবিলি পরিবেশে আনন্দ-উল্লাস করতে পেরে সবাই খুশি। কক্সবাজারের পর্যটনের পাশাপাশি দেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতেই এই আয়োজন।’
এলআইএ/এমএস