যে কায়দায় টিকে ছিলেন চলচ্চিত্রকার ফারুকী

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারের তীব্র সমালোচকদের একজন চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তার দাবি, আওয়ামী লীগ, বিএনপি সবার ভালো কাজের প্রশংসা ও মন্দ কাজের নিন্দা করেন তিনি। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থকদের এক বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ফাসিস্ট সরকারের আমলে বেশ কায়দা করে টিকে থাকতে হয়েছে তাকে।

আজ (৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন ফারকী। লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদের কালে যেহেতু এই দেশেই থাকতে হইছে, ফলে আমাদের বেঁচে থাকা ছিল বড় কৌতুকময়। সৌভাগ্য হোক দুর্ভাগ্য হোক, রাডারের নিচে থাকার কারণে নানা কায়দা-কানুন করে বেঁচে থাকতে হইতো। সরকারের সমালোচনা করে একটা পোস্ট দিলে, তিনটা দিতে হইতো প্রশংসা করে। আবার সমালোচনারও কিছু প্যাটার্ন আছে। প্রধানমন্ত্রীকে বাইরে রেখে অন্যদের সমালোচনা করতে হইতো। তারপর ধরেন, আপনার সিনেমা আটকে যাবে, যেটা আটকানো অন্যায়। সেই সিনেমা ছাড়ানোর জন্য তদবীর করবেন এবং ছাড়ানোর পর ধন্যবাদ দিবেন। নানাবিধ কৌতুকময় ছিল এই জীবন।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দৈনিক পত্রিকায় নানা বিষয়ে কলাম লিখতেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে মৃদ্যু প্রতিবাদও করতে দেখা গেছে তাকে। এমনকি ফেসবুকেও বিভিন্ন সময় মৃদ্যু প্রতিবাদ করেছেন তিনি। আজকের পোস্টে ফারুকী লিখেছেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক কর্মী না। আমি আওয়ামী লীগ-বিএনপি সবারই ভালো কিছুর প্রশংসা এবং খারাপ কাজের নিন্দা করতে পারি।’ একজন চলচ্চিত্রকার হয়েও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে কৌতুককর উপায়ে টিকে থাকতে হয়েছে, সেসব তার পরবর্তী সিনেমাগুলোয় দেখা যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ওই ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘সামনে আমার কাজে এইসবের ছাপ দেখবেন অল্প-বিস্তর।’

পাশাপাশি আওয়ামী সমর্থক ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ওই পোস্টে রসিকতাও করেছেন এই চলচ্চিত্রকার। অট্টহাসির ইমোজি সহকারে তিনি লিখেছেন, ‘আমাকে উপদেষ্টা করা এখন সময়ের দাবি। আওয়ামী প্রোপাগান্ডু লীগ যেভাবে আমার ব্যাপারে তাদের ক্ষোভ জানাচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, ফ্যাসিবাদের পতনে আমার বিশাল ভূমিকা আছে। সুতরাং “ফ্যাসিবাদের পুচ্ছে আগুন” কোটায় আমাকে উপদেষ্টা করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহবান জানাচ্ছি।’

আওয়ামী সমর্থকদের উদ্দেশে ফারুকী লিখেছেন, ‘ওরাও জানে, ওদের লুটপাট, টেন্ডারবাণিজ্য, চুরি-চামারি, ব্যবসা কোনো কিছুর সাথেই আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। কিন্তু আমাদের ওপর রাগ আছে। কেন আমরা ফ্যাসিস্ট পতনের আন্দোলনে নামলাম, এই ক্ষোভ বড় গভীর। এই ক্ষোভ ঢালার জন্য এখন ওদের কষ্ট করে আমার টাইমলাইনের ওপর পিএইচডি করতে হচ্ছে।’ এই সমর্থকগোষ্ঠীকে পরামর্শ দিয়ে ফারুকী লিখেছেন, ‘ওদের নিজেদের জন্য ভালো হবে এসবে সময় ব্যয় না করে আত্মশুদ্ধির পথে হাঁটা। আর বাংলাদেশের করণীয় হচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধ আর সীমাহীন লুটপাটের বিচার করা।’

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত সর্বশেষ সিনেমা ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ মুক্তি পায় গত বছর। তাতে প্রথমবারের মতো অভিনয়ও করেন তিনি। ২০১৬ সালের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলার ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তার বানানো সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’ দেশে সেন্সর ছাড়পত্র পায়নি। দীর্ঘ বিরতির পর সনি লিভ নামের একটি বিদেশি ওটিটিতে মুক্তি পায় ছবিটি, যা এ দেশের মানুষের দেখার সুযোগ ছিল না। এই নির্মাতার বানানো সিরিজ ‘৪২০’ দেশের রাজনৈতিক অবস্থাকে নগ্ন করে তুলে ধরেছিল। সে কারণে মাঝপথে সিরিজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আরএমডি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।