সিনেমা নিয়ে নায়ক সাইফের ১৬ পরামর্শ
ঢালিউডের নতুন প্রজন্মের নায়ক সাইফ খান। ২০০৯ সালে ‘বন্ধু মায়া লাগাইছে’ সিনেমায় নিপুণের নায়ক হয়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয় তার। এরপর ‘পালাবার পথ নেই’, ‘একজনমের কষ্টের প্রেম’সহ কয়েকটি সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। ‘আমিই টোটো’সহ একাধিক ভারতীয় বাংলা সিনেমায়ও দেখা গেছে সাইফকে। খিজির হায়াত খানের ‘ওরা ৭ জন’ চলচ্চিত্রে মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রে কাজ করে পেয়েছেন প্রশংসা।
এই নায়ক সিনেমার উন্নয়নে ১৬টি পরামর্শ নিয়ে হাজির হয়েছেন। ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি তার নিজস্ব ভাবনাগুলো পরামর্শ আকারে তুলে ধরেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশ এখন নতুন একটা যাত্রা শুরু করেছে নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে। এমন সময়ে এসে আমাদের সিনেমা শিল্প নিয়েও নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। এখানে কাজের পরিবেশ, সবার মধ্যে সুসম্পর্ক, সিনেমা নিয়ে গবেষণা ও বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নত করা খুব জরুরি। সেই ভাবনাগুলো অনেকের মধ্যেই এখন দেখা যাচ্ছে। আমিও এই শিল্পের একজন ক্ষুদ্র শিল্পী। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে যে বিষয়গুলো সেগুলোই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যারা কর্তাব্যক্তিরা আছেন তারা প্রত্যেকের ভাবনাগুলো সমন্বয় করে উদ্যোগ নিয়ে সিনেমার নতুন দিগন্তের সূচনা করবেন এটাই প্রত্যাশা করছি।’
সাইফের পরামর্শগুলো-
১. সেন্সর সার্টিফিকেট সিস্টেম নতুন আইন অনুযায়ী বিশ্বমানের হতে হবে
২. যে কোনো ছবিকে কারা দেখতে পারবেন কারা পারবেন না সে অনুযায়ী ক্যাটাগরিভিত্তিক সার্টিফিকেট প্রদান করতে হবে
৩. সেন্সর হওয়া প্রতিটি সিনেমাকে সর্বনিম্ন ১০ লক্ষ টাকার টিভি রাইটস দেবে রাষ্ট্রীয় টিভি বিটিভি। কোনো প্রযোজক অন্য কোথাও বিক্রি করতে পারলে এটা তার স্বাধীনতা
৪. হলগুলোতে সরকারি সেন্ট্রাল সার্ভার সিস্টেমে চলবে সিনেমা। যাতে ই-টিকিটিং সিস্টেম যুক্ত থাকবে ও একজন প্রযোজক স্বচ্ছভাবে জানতে পারবেন কোন হলে কয়টার সময় কতজন দর্শক তার সিনেমাটি দেখেছে
৫. যদি মিনিমাম গ্যারান্টি (এমজি) দিয়ে কোনো হল সিনেমা না নেয় তবে ৫০-৫০ আয় ভাগাভাগি করতে হবে প্রযোজকের সাথে
৬. প্রত্যেক প্রযোজককে ব্যাংক লোনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। সিনেমাটি সেন্সর সার্টিফিকেট পেলে ওই সিনেমার মোট খরচের ৫০ শতাংশ লোন নিতে পারবেন তিনি। যার সুদ হবে সর্বোচ্চ ৪%
৭. প্রতিটা জেলায় অন্তত একটা করে শিল্পকলা, নাট্য ক্রেন্দ্র ও মিনিমাম ৫০০ সিটের সিনেমা হল করে দিতে হবে। এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়ন্ত্রিত হবে
৮. পূর্বে যে সব হল মালিক সরকারি জায়গায় পেয়েছিল হল করার জন্য তারা যদি হল না চালাতে চান তবে তা ক্রোক করে নতুন যারা নিতে ইচ্ছুক তাদের দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে
৯. এফডিসি, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সরকারি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সিনেমা শুটিংয়ের জন্য ভাড়া অর্ধেক করতে হবে
১০. এফডিসি, ক্যামেরা, লাইট ভাড়া, এডিটিং ও অন্যান্য খরচ অর্ধেক করতে হবে
১১. এফডিসি কেপিআই ভুক্ত এলাকা হওয়ায় এর ভেতর যে কোনো রকম রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে এবং সকল সমিতির নির্বাচন এফডিসিতে নিষিদ্ধ করতে হবে
১২. এক মাসের মধ্যে প্রযোজক সমিতির সকল মামলা প্রত্যাহার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে সচল করতে হবে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে
১৩. সিনেমাতে অগ্রিম অনুদান প্রথা বাদ দিয়ে আলোচিত ও দর্শক নন্দিত সিনেমার প্রযোজককে ওই অর্থ অনুদান হিসেবে না বরং পুরস্কার হিসেবে দিতে হবে। বছরের হিট বা প্রশংসিত ৫ সিনেমার প্রযোজক ওই পুরস্কার পাবেন। শর্ত সাপেক্ষে নতুন ও প্রতিভাবান ৫ জন পরিচালক অগ্রিম অনুদান পেতে পারেন
১৪. এফডিসিতে নিরাপত্তা বাড়াতে হবে এবং বহিরাগত প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। বিটিভির মত পাস সিস্টেম থাকতে পারে
১৫. আমদানি করা সিনেমার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ও টেক্স দ্বিগুন করতে হবে। কোনো সিনেমা হল দেশি সিনেমা বাদ দিয়ে আমদানি করা সিনেমা চালাতে পারবে না এটি নিশ্চিত করতে হবে
১৬. সিনেমা হল মালিকগণ যাতে হল সংস্কার বা নির্মাণের জন্য একদম সহজ শর্তে ৪% হারে লোন পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। উক্ত লোনের কিস্তি এক বছর পর থেকে নিতে হবে
এলএ/এএসএম